ইম্ফল: নাটকের পর নাটক। দুপুর থেকে তিনি ইস্তফা দিচ্ছেন বলে মণিপুর ও সর্বভারতীয় রাজনীতিতে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ইস্তফাপত্র নাকি লেখাও হয়েও গিয়েছিল। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে বেরিয়ে পড়তে যাবেন। এমন সময় দলেরই এক বিধায়ক ইস্তফাপত্র ছিঁড়ে কাতর আবেদন জানালেন, যেতে নাহি দিব। আর তা শুনে এবং মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে শয়ে শয়ে মহিলার মানববন্ধন করে পথ অবরোধ দেখে মন পরিবর্তন করলেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। শেষ পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন না বীরেন সিং। অথচ শুক্রবার সকাল থেকে খবর রটে গিয়েছিল যে, হিংসাকবলিত রাজ্যের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিতে চলেছেন বীরেন সিং।
এদিকে, এদিন ত্রাণ শিবির পরিদর্শনের পর রাজধানী ইম্ফলে ফিরে রাজ্যপাল অনুসুইয়া ইউকেইয়ের সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে তিনি বলেন, মণিপুর শান্তি চায়। আমি চাই এখানে শান্তি ফিরে আসুক। আমি ত্রাণ শিবির ঘুরে দেখেছি, সেখানে অনেক কিছুর অভাব রয়েছে। সরকারের উচিত সেদিকে নজর দেওয়া।
আরও পড়ুন: Narendra Modi on Dellhi Metro | দিল্লি মেট্রোতে ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গে গল্পে মাতলেন প্রধানমন্ত্রী
অন্যদিকে, মণিপুরের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং ইস্তফা দিতে চলেছেন বলে দুপুর নাগাদ খবর রটে। আজই দুপুরে রাজ্যপাল অনুসুইয়া ইউকেইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন মুখ্যমন্ত্রী বলে জানা যায়। হিংসা কবলিত মণিপুরকে শান্ত করতে ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের দাবি তুলছিল বিরোধীরা। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, আজই তিনি ইস্তফা দিতে পারেন।
বীরেন সিংয়ের ইস্তফার জল্পনা ভেসে উঠতেই মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের সামনে একে একে জড়ো হতে শুরু করেন তাঁর অনুগামী ও সমর্থকরা। কয়েকশো মহিলা নুপি লাল কমপ্লেক্সের সামনে জড়ো হন। জায়গাটি মুখ্যমন্ত্রী সচিবালয় এবং রাজভবনের থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে। তাঁদের দাবি, কোনও চাপের মুখে যেন বীরেন সিং ইস্তফা না দেন।
মণিপুর সফরের আজ, শেষদিনে সকালে রাহুল গান্ধী বিষ্ণুপুর জেলার মৈরাংয়ের দুটি ত্রাণ শিবির ঘুরে দেখেন। সেখানে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন কংগ্রেস নেতা। সকাল সাড়ে ৯টার সময় চপারে করে মৈরাংয়ে এসে পৌঁছন তিনি। ওই দুটি শিবির প্রায় হাজারখানেক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। রাহুলের সঙ্গে ছিলেন মণিপুরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওকরাম ইবোবি সিং, কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপাল প্রমুখ। উল্লেখ্য মৈরাং হল ইতিহাস প্রসিদ্ধ জায়গা। এখানেই নেতাজির আজাদ হিন্দ ফৌজ ১৯৪৪ সালে তেরঙা উত্তোলন করেছিল। সেখানে আজাদ হিন্দ ফৌজের স্মারকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন তিনি। ত্রাণ শিবিরে শরণার্থীদের সঙ্গে দেখা করেই ফের চপারে ইম্ফলে আসেন রাহুল। সেখানে ইম্ফল হোটেলে দুপুরের পর সুশীল সমাজ, ইউনাইটেড নাগা কাউন্সিল, ১০টি সমমনস্ক রাজনৈতিক দল এবং মহিলা নেত্রীদের সঙ্গে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবেন।