ইম্ফল: মরার উপর খাঁড়ার ঘা। হিংসা উপদ্রুত মণিপুরে যখন হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া। অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন পার্শ্ববর্তী রাজ্যে। তখন সরকারি কর্মচারীদের ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’ বিধি জারি করতে চলেছে বিজেপির সরকার। মণিপুরে প্রায় ১ লক্ষ সরকারি কর্মচারী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই জাতি সংঘর্ষের দরুন আপাতত নিরাশ্রয়। তাই তাঁরা কাজে আসতে পারছেন না। কিন্তু, রাজ্য সরকার এবার কাজে না আসলে বেতন কাটার মতো অমানবিক বিধি কার্যকর করতে চলেছে।
উল্লেখ্য, হিংসা কবলিত মণিপুরে (Manipur) যাচ্ছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। দলের সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল রাও (K C Venugopal Rao) এক টুইটে জানান, আগামী ২৯-৩০ জুন উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে সফর করবেন রাহুল। মণিপুরে তিনি ত্রাণ শিবির পরিদর্শন করবেন এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: India Monsoon | বর্ষার প্রথম ঝাপটায় বেসামাল দেশ, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল, মুম্বইয়ে সতর্কতা জারি
এরই মাঝে যেসব সরকারি কর্মচারী অননুমোদিত ছুটিতে রয়েছেন তাঁদের বেতন কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত শনিবার ১২ জঙ্গিকে কবজা করার পর প্রায় দেড় হাজার মহিলা সেনাবাহিনীকে ঘিরে ধরায় শেষপর্যন্ত উগ্রপন্থীদের মুক্তি দিয়েছিল জওয়ানরা। গুলি চালিয়ে নিরীহ মানুষ মারেনি। সেনাবাহিনী এহেন মানবিক মুখ দেখালেও খোদ সরকার রাজ্যের মানুষকে ভাতে মারার কৌশল নিচ্ছে।
মণিপুরের সরকারি এক পদস্থ কর্তা জানান, প্রশাসনিক দফতর সমস্ত সচিবের কাছে গরহাজির কর্মীদের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়েছে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের সভাপতিত্বে একটি জরুরি প্রশাসনিক বৈঠক হয়। সেখানেই এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। বৈঠকে ঠিক হয়, সকলেই বেতন তুলছেন। কিন্তু কাজে আসছেন না। ফলে যাঁরা অনুমোদিত ছুটি ছাড়া কাজে আসছেন না, এবার থেকে তাঁদের বেতন কাটা হবে।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, হিংসা কবলিত মণিপুরে প্রায় ৬৫ হাজার মানুষ এখন ত্রাণশিবিরে দিন কাটাচ্ছেন। যাঁদের মধ্যে প্রচুর সংখ্যায় সরকারি কর্মচারী রয়েছেন। সরকারের এই সিদ্ধান্তে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। কারণ, তাঁদের অনেকেই প্রাণের ভয়ে রাজধানী শহরে আপাতত ঢুকতে চাইছেন না। কুকিদের সর্বোচ্চ সংগঠন সরকারের এই সিদ্ধান্তের ঘোরতর বিরোধিতা করেছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ইম্ফল থেকে প্রাণের দায়ে যাঁরা পালিয়েছেন মণিপুর সরকার এখন তাঁদের জীবিকাকেও বিপদের মুখে ঠেলে দিতে চাইছে। বর্তমান অবস্থায় ইম্ফলে ফেরার কোনও রাস্তা নেই। আসলে এইভাবে চাপে ফেলে কুকিদের মৃত্যুফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার।