ম্যাঞ্চেস্টার সিটি–১ ইন্টার মিলান–০
(রড্রি)
অবশেষে স্বপ্নপূরণ ম্যাঞ্চেস্টার সিটির। শনিবাসরীয় সন্ধ্যায় ইস্তাম্বুলের আতাতুর্ক স্টেডিয়ামে ইন্টার মিলানকে হারিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চ্যাম্পিয়ন হল নীল ম্যাঞ্চেস্টার। দীর্ঘ দিন ধরেই ইউরোপ সেরার এই ট্রফিটা নিজেদের ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছিল ম্যান সিটির সমর্থকরা। দু বছর আগে ফাইনালে উঠৈও হারতে হয়েছিল চেলসির কাছে। এই বছর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, এফ এ কাপ জেতার পরেও স্বস্তি ছিল না কোচ পেপ গুয়েরদিওলা এবং তাঁর ছেলেদের। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতে তাই ত্রিমুকুট তো হলই, পাাশাপাশি নীল ম্যাঞ্চেস্টার জানিয়ে দিল, এখন থেকে ম্যাঞ্চেস্টার মানে শুধু ম্যান ইউনাইটেড নয়, ম্যান সিটির কথাও বলতে হবে। গত ছয় বছরে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে পাঁচ বার চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইংল্যান্ডে এখন বৃহত্তম শক্তির নাম ম্যান সিটি। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগ না জেতায় ইউরোপ ফুটবলে ডঙ্কা বাজানোটা বাকি ছিল। সেই বৃত্তটা সম্পুর্ণ হল শনিবার রাতে।
স্বপ্নপূরণ তো কোচ পেপ গুয়েরদিওলারও। বার্সেলোনার প্রাক্তন মিডফিল্ডার কোচিং করতে এসে দু বার ইউরোপের সেরা ট্রফি জিতেছেন। তার পর চলে যান বায়ার্ন মিউনিখে। জার্মান ভাষায় কথাবলা রপ্ত করার জন্য এক বছর ছুটি নিয়ে জার্মান শিখেছেন আমেরিকায় পড়ে থেকে। তবে বায়ার্নকে শত চেষ্টা করেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ দিতে পারেননি। ছয় বছরের চেষ্টায় সেটা পারলেন ম্যাঞ্চেস্টার সিটিতে এসে। দুই দেশের দুটি ভিন্ন ক্লাবের কোচ হিসেবে ইউরোপ সেরা হওয়ার কৃতিত্ব ছিল হোসে মোরিনহো এবং কার্লোস আনসোলত্তির। এখন থেকে সেই উজ্জ্বল টালিকায় জ্বলজ্বল করবে পেপের নামও। কুলীন ছিলেন পেপ, আরও কুলীন হলেন স্প্যানিশ কোচ।
আর মাত্র ২২ বছর বয়সে ইউরোপ সেরা টিমের ফুটবলার হয়ে গেলেন নরওয়ের আর্লিং হাল্যান্ড। ফাইনালে গোল না পেলেও এই মরসুমে ৫২ ম্যাচে ৫২ গোল করে দুর্দান্ত রেকর্ড করলেন হাল্যান্ড, যাঁকে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে নিয়ে এসেছিলেন পেপ। স্বপ্ন পুরণ হল হাল্যান্ডেরও। ফাইনালে ইন্টার মিলান কখনও ফেভারিট ছিল না। তারা শুরু করেছিল ৩-৫-২ ছকে। কিন্তু হাল্যান্ডদের রুখতে কখনও কখনও ছয় জনে নেমে আসছিলেন ডিফেন্ডারদের পাশে। তাই গোলের মুখ খুঁজে পেতে বে কসরত করতে হচ্ছিল পেপের ছেলেদের। এরই মধ্যে ৩৫ মিনিটে পায়ে টান ধরায় বসে গেলেন কেভিন দে ব্রুইন। এতে সিটির শক্তি বেশ কমে গেল। তাঁর বদলি ফিল ফডেন ভাল, কিন্তু তনি তো আর কেভিন দে ব্রুইন নন।
বিরতির পর পেপ তাই তাঁর স্ট্রাটেজি বদলালেন। আক্রমণ করা শুরু করলেন দুই উইং ধরে। ডান দিকে ফডেন এবং বাঁ দিকে জ্যাক গ্রিলিশ। আর মাঝখানে ইকেই গুন্দোগান এবং বের্নাদো সিলভা। এবং এতেই গোল এল। ৬৮ মিনিটে বক্সের বাইরে বের্নাদো বল দিলেন দিলেন রদ্রিকে। একটু এগিয়ে বক্সের সামনে থেকে ডান পায়ের জোরালো শটে গোল করলেন রদ্রি। এর পর গোল শোধের সুযোগ এসেছিল ইন্টারের সামনেও। কিন্তু বার প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। শেষ পর্যন্ত গোটা ফুটবল দুনিয়াকে স্বস্তি দিয়ে ইউরোপ সেরার তকমা নিয়ে গেল ম্যাঞ্চেস্টার সিটির। স্বপ্ন পূরণ হল অনেকেরই।