কলকাতা: ঘনঘন আমলা ও মন্ত্রীদের রাজভবনের তলবে তিতিবিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সোমবারই টুইটারে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে (Jagdeep Dhankhar) ব্লক করে দেন৷ এই নিয়ে দু’পক্ষের বিরোধ যখন চরমে, তখন বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের প্রশাসনিক বৈঠক (Mamata Banerjee Administrative Meeting) থেকে মুখ্যমন্ত্রী পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিস সুপারের কাছে জানতে চাইলেন, ‘রাজ্যপাল কি আপনাকে ফোন করছে?’
নানা ইস্যুতে দিন দিন নবান্ন ও রাজভবনের মধ্যে সংঘাত বেড়েই চলেছে৷ সেই সংঘাতে নয়া মাত্রা যোগ হয় টুইটারে রাজ্যপালকে ব্লক করে দেওয়ার ঘটনা৷ সম্প্রতি তৃণমূলের দুই সাংসদ রাজ্যপালের অপসারণ চেয়ে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছেন৷ যদিও জগদীপ ধনখড় এসবে বিন্দুমাত্র বিচলিত নন৷ অপরদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজকের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে আমলা ও পুলিসকে নির্ভীকভাবে কাজ করার বার্তা দেন৷ পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিস সুপারকে দেখেই মুখ্যমন্ত্রী ধমক দেন৷ বলেন, ‘রাজ্য সরকারের কাজ করছেন৷ অসুবিধা হলে সরাসরি আমায় বলবেন৷ ভয় পাবেন না৷ রাজ্যপাল কি আপনাকে ফোন করছে? কারও কথা শুনতে হবে না৷ কাজ করে যাও৷’
এই পূর্ব মেদিনীপুর হল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা৷ গত বিধানসভা ভোটে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর বিপরীতে প্রার্থী হয়েছিলেন৷ যদিও অল্প ব্যবধানে তিনি হেরে যান৷ মমতা পুলিস সুপারকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, ‘তোমার জেলা সম্পর্কে আমি অভিযোগ পাচ্ছি৷ কাউকে সাজিয়ে পরিকল্পিতভাবে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে৷ অনেকদিন তোমাদের বলেছি৷ কিন্তু তোমরা কিছু করোনি৷’
সাধারণত জেলা সফরে গিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ কিন্তু অতিমারি পর্বে তাতে ছেদ পড়ে৷ সংক্রমণ এড়াতে তখন ভার্চুয়াল প্রশাসনিক বৈঠক শুরু হয়৷ বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রশাসনিক বৈঠক সারলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এদিন বলেন, একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে রাজ্যের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার কোভিডের অজুহাত দিয়ে অনেক বরাদ্দ কমিয়েছে। আমাদের ঘাড়ে বিপুল ধারের বোঝা। কিন্তু কোনও ভাবেই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বন্ধ করা যাবে না। মানুষের কথা ভেবে পিছিয়ে পড়া এলাকাগুলিতে কাজে গতি আনতে হবে। এদিনের বৈঠকে বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান, আলিপুরদুয়ার এবং পূর্ব বর্ধমানের প্রশাসনিক কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মমতা।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: দুর্নীতি রুখতে সীমান্তের ট্রাক টার্মিনাসের দায়িত্বে পরিবহণ দফতর, ঘোষণা মমতার
বৈঠকে কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, করোনায় রাজস্ব সংগ্রহ কমেছে অনেকটা। কেন্দ্রের থেকে রাজ্যের পাওনা ৯০ হাজার কোটিরও বেশি। এখনও সেই টাকা পাইনি। স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যের উপর আর্থিক চাপ তৈরি হয়েছে। অর্থ দফতরের অনুমোদন ছাড়া কোনও নতুন কাজ শুরু করা যাবে না। যা করা হবে, তা হিসেব মেনে, পরিকল্পনা করে।