কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে বিরোধীদের বৈঠকে থাকবে শেষমেশ উন্নাসিকতা ছেড়ে থাকারই সিদ্ধান্ত নিল সিপিএম। দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি মঙ্গলবার একথা জানিয়ে দেন। যদিও প্রথমে ইয়েচুরিই জানিয়ে দিয়েছিলেন এই বৈঠকে তাঁরা হাজির হবেন না। কিছু সময় পরেই বিজেপি-বিরোধী রাজনীতিতে একঘরে হওয়ার ভয়ে এই বৈঠকে থাকার কথা জানান সীতারাম। সিপিআইয়ের প্রতিনিধি, সম্ভবত সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা উপস্থিত থাকবেন। তা না-হলে দুই বাম দলেরই সাংসদ-প্রতিনিধি মমতার বৈঠকে থাকবেন।
দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে অ-বিজেপি, ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকে এককাট্টা করে গেরুয়া শিবিরকে চ্যালেঞ্জ ছুড়তে চান মমতা। দেশজুড়ে বিজেপি যেভাবে ধর্মীয় মেরুকরণের দিকে রাজনীতিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে, তার বিরুদ্ধেই লড়াই তৃণমূল নেত্রীর। তাই বুধবার, ১৫ জুলাই দিল্লিতে বিরোধীদের নিয়ে বসতে চলেছেন তিনি। এই উদ্দেশ্যে মঙ্গলবারই রাজধানীতে পৌঁছে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: উপনির্বাচনে হাফ, ‘২৩’-এ সাফ বিজেপি, ত্রিপুরায় হুঙ্কার অভিষেকের
এই পরিস্থিতিতে তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে কংগ্রেসসহ তাবড় বিরোধী নেতারা যখন এক টেবিলে মিলিত হতে চলেছেন, তখন দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সিপিএম। বিজেপি এবং হিন্দু নামেই যে দলের তীব্র অ্যালার্জি, তারা এভাবে নিজেদের গুটিয়ে রাখবে, তা অনেকেই ভাবেনি। যদিও একসময় অ-কংগ্রেসি সরকার গঠনের লড়াইয়ে বাজপেয়ির হাত ধরে দাঁড়াতেও দেখা গিয়েছে সিপিএমের কিংবদন্তি নেতাকে। যাঁকে একবার প্রধানমন্ত্রী করার বিষয়েও আপত্তি তুলেছিল পলিটব্যুরোর দক্ষিণ লবি। সম্ভবত সেই লবির ইচ্ছেতেই কংগ্রেস ও তৃণমূল সংসর্গ থেকে দূরে থাকতে চাইছিল সিপিএম। কিন্তু, মমতার রাজধানীতে পা রাখা মাত্রই বিরোধীদের মধ্যে যে জোশ দেখা গেল, তাতেই মুহূর্তে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের সাফাই দিয়ে প্রতিবারের মতো এবারেও মত বদল করল মার্কসবাদীরা।
আসলে সংসদের দুই কক্ষে শক্তি ভারসাম্যেও সিপিএমের যা অবস্থা, তাতে তাদের বিরোধী জোটে থাকা বা না-থাকায় বিশেষ কিছু যায়-আসবে না। লোকসভা ও রাজ্যসভা মিলিয়ে সিপিএমের সাংসদ রয়েছেন জনা পাঁচেক। আর গোটা দেশে বিধায়কের সংখ্যা ১০০ পেরবে না। ফলে, সিপিএম আগেভাগেই নিজেকে মমতা নেতৃত্বাধীন জোটের বাইরে রাখারই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলে মনে করছেন অনেকে।
আরও পড়ুন: Agnipath-Indian Army: সেনা বাহিনীতে ‘অগ্নিবীর’ নিয়োগ, মেয়াদ মাত্র ৪ বছর
বিশেষত, মমতা রাষ্ট্রপতি ভোট নিয়ে যে জোটস্বপ্ন দেখছেন, তা আসলে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের জন্য। কিন্তু, তার আগেই ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন। সেখানে সিপিএমকে লড়াই করতে হবে বিজেপি, কংগ্রেস এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কেরলেও কংগ্রেস-বিরোধিতা করেই বছরখানেক হল ক্ষমতায় এসেছে সিপিএম। তাই স্থানীয় ভোটারদের চটিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জোটে মমতার সঙ্গে এক টেবিলে বসতে নারাজ ছিল সিপিএমের একটা অংশ।