কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ দিবস নিয়ে ডাকা সর্বদল বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধীদের আক্রমণ করতে ছা়ড়লেন না। মঙ্গলবার নবান্ন সভাঘরে ওই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বাম-কংগ্রেসকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাকে আপনাদের পছন্দ নাও হতে পারে। আমি ইন্ডিয়া জোটে আছি। জোটের সব বৈঠকেও আমি যাই। আপনাদের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলি না। তবুও আজ এই বৈঠকে আপনারা জোট দিলেন না। সিপিএম, সিপিআইয়ের কী হল, বুঝলাম না। যদিও ২১ জুলাই এবং ২৮ অগাস্ট দলের যুব ও ছাত্র সমাবেশে মমতা তীব্র ভাষায় বাম-কংগ্রেসকে আক্রমণ শানান। এমনকী বাংলায় তৃণমূল লোকসভা ভোটে একাই লড়বে বলেও স্পষ্ট ইঙ্গিত দেন।
এদিনের বৈঠকে গরহাজির ছিল বামফ্রন্টের সব শরিক ছাড়াও কংগ্রেস এবং বিজেপি। অর্থাৎ রাজ্যে মূল বিরোধী তিন শক্তিই বৈঠকে অনুপস্থিত ছিল। তারা ষে এই বৈঠকে যোগ দেবে না, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন তিন দলের নেতৃবৃন্দ। তবে সিপিআই (এমএল), এসইউসির মতো বাম দলগুলির হাজির ছিল। বৈঠকে ডাকা হয়েছিল বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, সাংবাদিক, খেলোয়াড়দের।
আরও পড়ুন: ইন্ডিয়া বৈঠক, নতুন কারা যোগ দিচ্ছেন? কোন কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে?
এদিনের বৈঠকে বাংলা দিবস নির্দিষ্ট কোন দিনে হবে তা নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বেশির ভাগ বক্তাই পয়লা বৈশাখকেই বাংলা দিবস করার পক্ষে মত দেন। কেউ কেউ অন্য কোনও বিশেষ দিনকেও বাংলা দিবস হিসেবে নির্দিষ্ট করার কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কোনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। আপনারা যা মতামত দেবেন, সেইমতোই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিজেপি ২০ জুন দিনটিকে বাংলা দিবস হিসেবে পালন করছে। ১৯৪৭ সালে ২০ জুন প্রাদেশিক আইন সভায় বাংলা ভাগের সিদ্ধান্ত নিয়ে ভোটাভুটি শুরু হয়। সেই কারণেই বিজেপি এই দিনটিকে বাংলা দিবস হিসেবে বেছে নিয়েছে। রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস গত ২০ জুন। রাজভবনে ঘটা করে পশ্চিমবঙ্গ দিবস বা বাংলা দিবস পালন করে। মুখ্যমন্ত্রী তাতে আপত্তি জানিয়ে রাজ্যপালকে চিঠিও দিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য, হঠাৎ কেন বাংলা দিবস পালন করা হবে। বিজেপি পাল্টা হিসেবেই রাজ্য সরকার পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে একটি দিন ঠিক করার কথা ভেবেছে। তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ইতিহাসবিদ সুগত বসুর নেতৃত্বে একটি কমিটিও গঠন করা হয়। সেই কমিটির প্রস্তাব, পয়লা বৈশাখ হোক পশ্চিমবঙ্গ দিবস। বাংলার মাটি, বাংলার জল গানটি হোক বাংলার নিজস্ব সঙ্গীত।