বানারহাট: বাইক, স্কুটি, সাইকেল, মোবাইল, ঘড়ি, জোড়া পাঁঠা, নগদ টাকা। উৎসবের মরসুমে লটারি প্রতিযোগিতায় এ রকম হরেক উপহারের কথা হয়ত সবাই শুনেছেন। কিন্তু তা বলে মদ! তাও যে সে মদ নয়, একবারে বিলিতি। হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন। কালীপুজোয় লটারি বিজয়ীদের জন্য পুরস্কার হিসেবে রয়েছে রকমারি বিলিতি মদ। ৩০ জনের জন্য সান্ত্বনা পুরস্কারও রয়েছে।
ভাবছেন টিকিট হয়ত খুব দামি। একেবারেই নয়। মাত্র ১০০ টাকাতেই মিলবে টিকিট। জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাটের একটি কালীপুজো কমিটি এই লটারি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। অত্যন্ত গোপনে গোটা বিষয়টি পরিচালিত হচ্ছিল। তবে পুরস্কারের লিফলেটের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই তা জানাজানি হয়ে যায়। পুরস্কারের তালিকা নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
কালীপুজো উপলক্ষে গোটা উত্তরবঙ্গেই লটারির চল রয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, পুরস্কারের তালিকায় রয়েছে নগদ টাকা কিংবা পাঁঠা-খাসি-জোড়া মুরগির। বানারহাটের লটারি প্রতিযোগিতার পুরস্কারের বিলিতি মদ দেখে চক্ষু ছানাবড়া অনেকের। সূত্রের খবর, রীতিমতো হটকেকের মত বিকিয়েছে লটারির টিকিট। এতটা সাড়া পাওয়া যাবে, তা উদ্যোক্তারাও ভাবেননি।
পুরস্কারের লিফলেট
অনেকেই বলছেন, বাজারে যে মদগুলির চাহিদা বেশি, আয়োজকরা পুরস্কারের তালিকায় সেগুলিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। এই লটারি প্রতিযোগিতার নেপথ্যে কারা রয়েছেন, সেই বিষয়টি কিন্তু এখনও পর্যন্ত পরিষ্কার নয়। একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বানারহাটের ওই কালীপুজো কমিটি বেনামে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে এই লটারি খেলার আয়োজন করেছে। লিফলেটটি ভাইরাল হয়ে যাবে, তা তারা আঁচ করতে পারেননি।
আরও পড়ুন: কবরস্থান নয়, বিজেপি সরকার জনগণের টাকায় মন্দির বানায়: যোগী আদিত্যনাথ
একবার পুরস্কারের তালিকায় চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক। প্রথম ৮ জন পাবেন বিভিন্ন বিলিতি ব্র্যান্ডের ‘ফুল বোতল’ মদ। নবম পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে তিনজনকে। তাঁরা পাবেন ‘হাফ বোতল’ মদ এবং সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে ৩০ জন পাবেন ‘কোয়ার্টার বোতল’ মদ। স্থানীয় পুলিশ এবং প্রশাসনের বক্তব্য, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। কারা এর পেছনে রয়েছেন, খুঁজে বার করার চেষ্টা চলছে।
স্থানীয় সমাজকর্মী ভিক্টর বসু বলেন, এইসব বিষয় একদম মেনে নেওয়া যায় না। লটারি খেলার অছিলায় যুব সমাজকে সরাসরি মদ খাওয়ায় উৎসাহিত করা হচ্ছে। এর ফলে পুজোর পরিবেশ নষ্ট হবে। আমাদের এলাকা সম্পর্কেও একটা বড় অংশের মানুষের কাছে ভুলবার্তা যাবে। প্রশাসনের অবিলম্বে পদক্ষেপ করা উচিত।