নয়াদিল্লি: আপনি কি হোয়াটসঅ্যাপ ইউজার (WhatsApp User)? সেই সঙ্গে ফেসবুকেও অ্যাকাউন্ট (Facebook Account) রয়েছে।!কিন্তু জানেন কি, আপনি যদি বেটার প্রাইভেসি (Better Privacy) চান, তাহলে আপনাকে ফেসবুক ইউজার (Facebook) হলে চলবে না। বরং আপনাকে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিলিট (Delete Account) করে ফেলতে হবে। এই কথা আর কারও নয়, হোয়াটসঅ্যাপ তরফে মামলা লড়া আইনজীবী এই যুক্তি দিয়েছেন। ভারতের সুপ্রিম কোর্টে (Indian Supreme Court) এই সংক্রান্ত এক মামলার শুনানি চলার সময় সিনিয়র আইনজীবী কপিল সিব্বল (Senior Lawyer Kapil Sibal) আদালতকে বলেছেন, সংশ্লিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ ইউজারের কিছু ডেটা ফেসবুকের সঙ্গে শেয়ার (Share) করা হয়। সংশ্লিষ্ট ইউজার যদি সম্পূর্ণ প্রাইভেসি (Absolute Privacy) চান, তাহলে তিনি হোয়াটসঅ্যাপ ইউজ করবেন, কিন্তু তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রাখলে চলবে না।
আরও পড়ুন: Gautam Adani: আদানি গোষ্ঠীর ক্ষতি ১০০ বিলিয়ন পার করল
২০১৬ সালের হোয়াটসঅ্যাপ প্রাইভেসি পলিসির বিরুদ্ধে দেশের শীর্ষ আদালতে (Apex Court) একটি আপিল দাখিল (Filed An Appeal) করা হয়েছিল। তারই শুনানিতে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ওই যুক্তি দেওয়া হয়। আপিলটি দু’জন পড়ুয়া দাখিল করেছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, ২০১৪ সালে হোয়াটসঅ্যাপ কিনে নেয় ফেসবুক। ২০১৬ সালের সংশ্লিষ্ট সময় পর্যন্ত সবকিছুই ঠিকই ছিল। হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুক, উভয় প্ল্যাটফর্মের ডেটা আলাদা করে রাখত সংস্থা। কিন্তু, ২০১৬ সালে হঠাৎ করে ফেসবুক গোপনীয়তা নীতি বা প্রাইভেসি পলিসি (Privacy Policy) পরিবর্তন করে, যাতে বলে দেওয়া হয়, ইউজারদের মেটা-ডেটা সংশ্লিষ্ট দুই অ্যাপের মধ্যে আদান-প্রদান করা হতে পারে। এখানে উল্লেখ্য, মেটা-ডেটা (Meta-Data) হল ইউজারের ফোন নম্বরের মতো সংশ্লিষ্ট তথ্য (Details Like Phone Number of Users)। আদালতে আপিল দাখিল করা দুই পড়ুয়ার অভিযোগ ছিল, তাদের গোপনীয়তার অধিকার এবং বাক স্বাধীনতা লঙ্ঘন করছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা (Violation of Their Right to Privacy and their Freedom of Speech)।
হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুক, উভয় প্ল্যাটফর্মের মধ্যে ডেটা শেয়ারিং (Data Sharing) হওয়ার ফলে মেটা অবশ্যই লাভবান হয়েছে। সংশ্লিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ ইউজারকে তারা ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে টার্গেট অ্যাডভার্টাইজমেন্ট (Targeted Advertisement) দেখাতে পারছে। আদালতের সামলে কপিল সিব্বলের যুক্তি হল, “সীমিত সংখ্যক ডেটা শেয়ার করা হচ্ছে উভয় প্ল্যাটফর্মের মধ্যে। যদি কোনও ব্যক্তি কোনও রকম তথ্য শেয়ার করতে না চান, তাহলে তিনি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করবেন এবং ফেসবুকে থাকবেন না। সুযোগ-সুবিধা নিতে হলে, বিজ্ঞাপন দেখতে চান না জানিয়ে দিতে হবে।” সিব্বলের এই যুক্তির পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী অরবিন্দ দাত্তার (Senior Lawyer Arvind Datar) বলেছেন, “শ্রী সিব্বলের এই মন্তব্য সঠিকভাবে রেকর্ড করা উচিত। আপনি যদি হোয়াটসঅ্যাপে থাকেন এবং ফেসবুকে নয়, তাহলে কোনও তথ্য শেয়ার হবে না। এটা আমার বড় রকম সমস্যা সমাধান করে দেবে।”
আরও পড়ুন: Actor Nawazuddin Siddiqui: অভিনেতা নওয়াজউদ্দিনের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ
এরপর দাতার নিশ্চিত হওয়ার জন্য জানতে চান, “আমি অন্য কোনও সোশ্যাল মিডিয়াতে নেই। আমি হোয়াটসঅ্যাপে আছি। ফেসবুক আমার সম্পর্কে কী কী জানে?” তার জববে সিব্বলের বক্তব্য, “আপনি যদি ফেসবুকে না থাকেন, কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপে আছেন, তাহলে ফেসবুকের কাছে আপনার কোনও তথ্য স্টোর (Store) করা নেই।”
গত বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টে বাদী ও বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের এই সওয়াল জবাবের পরিপ্রেক্ষিতে কী বলছেন বিশেষজ্ঞ মহল। তাঁদের বক্তব্য, মেটা (Meta) তরফে যে যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, তার মানে এটাই দাঁড়াচ্ছে, হয় আপনি হোয়াটসঅ্যাপ ইউজ করবেন, আর নাহলে ফেসবুক, যদি আপনি বেটার প্রাইভেসি চান। হোয়াটসঅ্যাপ ছাড়া চলা সম্ভব নাহলে, আপনাকে ফেসবুক থেকে দূরে থাকতে হবে। সোজা ভাষায় ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থাকলে চলবে না।