ঝাড়গ্রাম: মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম (Jhargram) শহরে রঘুনাথপুরে পুলিশি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এবং ধৃত এবং জেলবন্দি ১১ কুড়মি (Kurmi) জননেতার মুক্তির দাবিতে বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিয়েছিল কুড়মি সমাজ। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) কনভয়ে হামলা এবং বীরবাহা হাঁসদার গাড়ি ভাঙচুরের দায়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন এই ১১ জন। তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তি চাইছে কুড়মি সমাজ। এদিন এই বিশাল সমাবেশ ঘিরে কুড়মি সমাজের মানুষদের এক জনজোয়ার দেখা গিয়েছে।
প্রতিবাদের মূল মঞ্চে কুড়মি শিল্পীদের গানবাজনায় আবেগতাড়িত এক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। তার সঙ্গে সম্মিলিত মানুষের ‘জয় গরাম’ ধ্বনিতে কাঁপছিল অরণ্য শহর ঝাড়গ্রাম। এদিন কুড়মি সমাজের নেতারা তাঁদের বক্তব্য শেষে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনের রূপরেখা বেঁধে দেন। প্রথমে হবে ‘কুটুম কুটমালি ভায়দি জিয়াও’। এই আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিটি জেলায় কুড়মি সমাজ থেকে যারা সাংসদ, মন্ত্রী, বিধায়ক হয়েছে তাদের বাড়িতে এক হাজার বাইক মিছিল যাবে। পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Elections) পর্যন্ত এই কর্মসুচি চলবে।
এরপর হবে ‘নাতা জোড়ান’ তথা বিভিন্ন গ্রামে কুড়মি মানুষজন ছাড়া যারা মূলবাসী সমাজের মানুষ তাদের জোড়া হবে আন্দোলনে। এছাড়া পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হলে প্রতি গ্রাম এবং বুথ থেকে দু’জন করে প্রতিনিধি নিয়ে হবে বৈঠক। সেই বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা এখনই জানানো হবে না। এদিন অজিতবাবু অভিযোগ করেন, তালিকা ভুক্ত আদিবাসী তথা সাঁওতাল ও কুড়মিদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাতে চাইছে প্রশাসন। তিনি এমনও মন্তব্য করেন, কলকাতায় নাটের গুরু বসে আছে।
আরও পড়ুন: Coromandel Express | Runs | ভয়াবহ স্মৃতিকে সঙ্গী করেই বুধবার থেকে ফের লাইনে ছুটবে করমণ্ডল এক্সপ্রেস
উল্লেখ্য, ৮ জুন আদিবাসী সামাজিক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে কুড়মিদের আদিবাসী জনজাতি তালিকাভুক্ত করার দাবির বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে ২৪ ঘণ্টার বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। সেই প্রসঙ্গে এদিন সভামঞ্চ থেকে কুড়মি সমাজের বিভিন্ন নেতৃত্ব অভিযোগ করেন, কুড়মিদের আন্দোলন ভেঙে দেওয়ার জন্য, ভয় সৃষ্টি করার জন্য কুড়মি নেতাদের কনভয়ে হামলা না করলেও তাদের অকারণে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুরো ঘটনার পিছনে একটা ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও অভিযোগ।
প্রসঙ্গত, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলা এবং মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে সিআইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ১১ জন কুড়মি নেতা এবং আন্দোলনকারী। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতো, আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি শিবাজি মাহাতো, আদিবাসী নেগাচারি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি অনুপ মাহাতোরা। কুড়মিদের দাবি, তাঁদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজ্য সরকার পুলিশ দিয়ে কুড়মিদের উপর সন্ত্রাস চালাচ্ছে। লক্ষ্য, কুড়মি আন্দোলনকে দমন করা।