নয়াদিল্লি: মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন চায় (Presidential rule in Manipur) আন্দোলনরত কুকি জনগোষ্ঠী এবং সুশীল সমাজের একাংশ। কুকি এবং মণিপুরের অন্যান্য উপজাতি সম্প্রদায়ের লোকেরা রাজ্যের কেন্দ্রীয় সরকার এবং মেইতি সম্প্রদায়ের মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিং-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য নয়াদিল্লির যন্তর মন্তরে জড়ো হয়েছিল। উপজাতীয় গোষ্ঠীর শত শত লোক তাদের হাতে পোস্টার নিয়ে যন্তর মন্তরে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। বিক্ষোভকারীরা বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারকে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানিয়েছে।
কুকি সম্প্রদায়ের প্রধান দাবি হল মণিপুরে রাষ্ট্রপতির শাসন কারণ রাজ্য সরকার আদিবাসী ও অ-উপজাতি সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তি বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ। রাজ্য সরকার আমাদের প্রেসের সামনে তাদের ভাই-বোন বলে এবং পরের দিনই তারা আমাদেরকে ‘অবৈধ অভিবাসী’ এবং সন্ত্রাসী বলে। তারা আমাদের উপর মিথ্যা অভিযোগ আরোপ করছে যা একেবারেই ভুল, বলেছেন উপজাতি সম্প্রদায়ের বিক্ষোভকারীরা।
অমিত শাহ (Amit Shah) চারদিনের সফরে সোমবার দাঙ্গা বিধ্বস্ত ওই রাজ্যে গিয়েছেন। মণিপুরের উত্তপ্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সাধারণ জনগণের সঙ্গে কথা বললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah)। বিগত এক মাস ধরে হিংসার আগুনে জ্বলছে মণিপুর (Manipur Violence)। সংরক্ষণ নিয়ে মেতেই ও কুকি জনজাতির মধ্যে সংঘর্ষের জেরে প্রায় গোটা রাজ্যেই অশান্তি ছড়িয়েছে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতেই মণিপুর গিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বুধবার তিনি মণিপুরের বিভিন্ন অঞ্চল, যেখানে হিংসা ছড়িয়েছে, সেই জায়গাগুলি ঘুরে দেখেন এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাদের সমস্যা জানতে চান। শীঘ্রই গোটা রাজ্যে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের প্রতি কুকিদের অনাস্থার কথা জানা থাকায় তিনি ওই সম্প্রদায়ের সঙ্গে দীর্ঘ সময় পৃথক বৈঠকও করেন। সেই বৈঠকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়, বীরেন সিংহকে গদিতে রেখে অশান্তি বন্ধ করা কঠিন।
আরও পড়ুন: Poonch | জম্মুকাশ্মীর পুলিশ এবং ভারতীয় সেনার যৌথ প্রয়াসে গ্রেফতার ৩ জঙ্গি
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেশের সেনাধ্যক্ষর (Manipur) পরিস্থিতি নিয়ে মতবিরোধ প্রকাশ্যে আসায় চাপ বাড়ছে প্রশাসনের উপর। মুখ্যমন্ত্রী নাম না করে কুকিদের সন্ত্রাসবাদী জঙ্গি বলে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে, সেনাধ্যক্ষ সাফ বলেছেন, চলতি অশান্তিকে কোনও অবস্থাতেই দেশ বিরোধী অভ্যুত্থান বলা চলে না। মণিপুরের অশান্তির মূলে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে শাসক দল বিজেপিতেও (BJP) অসন্তোষ আছে। তিনি নিজে সংখ্যাগুরু মৈতেই সম্প্রদায়ের লোক। গোলমাল চলছে মৈইতেইদের সঙ্গে কুকিদের। জনজাতিগুলির অভিযোগ, পুলিশ প্রশাসন পুরোপুরি মৈতেইদের হয়ে কাজ করছে।
এদিকে, পার্বত্য মণিপুরের (Presidential rule in Manipur) জন্য পৃথক প্রশাসনের পুরনো দাবিও তুলেছে কুকিদের বিভিন্ন সংগঠন। অমিত শাহের কাছে তাদের প্রস্তাব, এখনই শান্তি ফেরানোর একটি উপায় হতে পারে পৃথক প্রশাসন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কথা দেন তিনি সব দাবিই বিবেচনা করবেন। তবে আপাতত ১৫ দিন হিংসা থেকে দূরে থাকতে হবে সব গোষ্ঠীকে।