ওমিক্রনে (Omicron Covod-19 Virus) আক্রান্তের সংখ্যা (Omicron variant in india) যে হারে বাড়ছে তাতে গোষ্ঠী সংক্রমণের(Omicron infection in kolkata) আশঙ্কা(Omicron updates) উড়িয়ে দিচ্ছে না চিকিৎসক মহল। এই মুহূর্তে কড়া(Covid lockdown) বিধিনিষেধ জারি না করলে সাত দিনের মধ্যে পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যেতে পারে, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। বিধানসভা এবং কলকাতা পুরসভার ভোটের পর করোনা পরিস্থিতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে,অবস্থা কতটা ভয়াবহ। তার মধ্যেই বড়দিন,বর্ষশেষ, এবং বর্ষবরণের উৎসবে মেতে উঠেছে আমজনতা। তা ছাড়া শীতের মরশুমে শহর কলকাতায় এবং জেলায় জেলায় নানা ধরনের মেলা হচ্ছে। সেখানেও ভিড় হচ্ছে লাগামছাড়া। এই ভিড় যদি এখনই নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তাহলে রাজ্যের করোনা চিত্র কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা ভেবে আতঙ্কিত(Omicron Variant Panic) চিকিৎসকেরা।
ভাইরোলজিস্ট সুমন পোদ্দার
শহরের বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্ট সুমন পোদ্দারের সঙ্গে কথা বলেছিল কলকাতা টিভি ডিজিটাল। তাঁর দাবি, রাজ্যে ইতিমধ্যেই ওমিক্রনের গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে। কলকাতায় যে ৪ জন ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের বিদেশ থেকে ফেরার কোনও ইতিহাস নেই। বা তাঁরা বিদেশি কারও সংস্পর্শে নেই। এর থেকেই বোঝা যায় যে, গোষ্ঠী সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ডাক্তার পোদ্দার বলেন, ‘রাজ্য সরকারকে দ্রুত কড়া বিধিনিষেধ জারি করতে হবে। সমস্ত রকম জমায়েত, উৎসব বন্ধ করতে হবে। তবে এখনই সম্পূর্ণ লকডাউনের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। যদি ভিড়, জমায়েত নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তাহলে লকডাউনের পথেই হাঁটতে হবে রাজ্য সরকারকে।’ তাঁর মতে রাজ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। রাজ্য সরকার একদিকে কড়াকড়ির কথা বলছে, আবার অন্যদিকে গঙ্গাসাগর মেলার বিশাল আয়োজন করছে। চলছে আরও হরেক মেলা। সরকারের এই দ্বিচারিতা কেন, প্রশ্ন ওই ভাইরোলজিস্টের।
বিশিষ্ট চিকিৎসক আরিন্দম বিশ্বাস
রাজ্যে ওমিক্রন আক্রান্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক আরিন্দম বিশ্বাস। তাঁর কথাতেও, রাজ্যে করোনার যে পরিস্থিতি তাতে এই মুহূর্তে সমস্ত রকম জমায়েতে হ্রাস টানা এবং অনুষ্ঠান করায় আরও কড়া হতে হবে রাজ্যকে। তা না হলে রাজ্যে তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে সময় লাগবে না। কারণ করোনার আর এক প্রজাতি ডেল্টার থেকেও দ্রুত গতিতে ছড়াতে পারে ওমিক্রন। তাই সব বয়সের মানুষকে আরও সচেতন থাকতে হবে। টানা ১০ দিন কড়া বিধিনিষেধ জারি না করলে সংক্রমণ হাতের বাইরে চলে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শিবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়
করোনার নয়া স্ট্রেন, ওমিক্রনে তৃতীয় ঢেউ এর আশঙ্কা চিকিৎসক মহলের। এ নিয়ে কলকাতা টিভি ডিজিটাল কথা বলেছিল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শিবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। তিনি জানিয়েছেন, ওমিক্রনে সংক্রমণের হার অনেক বেশি। তাই গোষ্ঠী সংক্রমণ অস্বাভাবিক নয়। কলকাতায় যে চারজন বিদেশ না গিয়েও ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরাও এভাবেই আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে একবার গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়ে গেলে সংক্রমণ বাড়তেই থাকবে। সকলকে আরও সচেতন এবং সতর্ক থাকতে হবে।
গত ২৩ ডিসেম্বরের পর রাজ্যে করোনার পজিটিভিটি হার দ্বিগুণ মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে
ওমিক্রন ঠেকাতে বিদেশ ফেরত যাত্রীদের জন্য আরও কড়া বিধিনিষেধও ইতিমধ্যে জারি করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। বিদেশ থেকে ফিরলে প্রত্যেককে ২২ দিন হোম আইসোলেশনে থাকতেই হবে। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও রাজ্যের এই নির্দেশিকা মানতে হবে। বিদেশ ফেরত যাত্রীদের বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর টেস্টের ব্যবস্থা ছিলই। রিপোর্ট নেগেটিভ এলে আর সে ভাবে কোনও বিধিনিষেধ মানতে হচ্ছিল না। কিন্তু এদিনের নির্দেশের পর, তা আর হবে না।