বেঙ্গালুরু: কালো স্বামী নাপসন্দ। তাই উঠতে-বসতে খোঁটা। শুধু তাই নয়, ঘরের বাইরেও কিংবা পরিবারের বাইরের লোকের সামনে স্বামীর কালো গায়ের রং নিয়ে ঠাট্টাতামাশা। অপদস্থ, অপমানের চূড়ান্ত। আর তা নিয়েই বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা। বিচ্ছেদ মঞ্জুর করে কর্নাটক হাইকোর্ট বলেছে, স্বামীকে কালো বলে হেনস্তা করা নিষ্ঠুরতার শামিল।
হাইকোর্টের মতে, কোনও স্ত্রী যদি তাঁর স্বামীকে কালো বলে অপমান করেন, তাহলে একপ্রকার নিষ্ঠুর আচরণ। আর সে কারণেই স্বামীর আনা বিচ্ছেদের আবেদন মঞ্জুর করা হচ্ছে। বেঙ্গালুরুর এই দম্পতির বিয়ে হয় ২০০৭ সালে। তাঁদের একটি কন্যাও আছে। ২০১২ সালে স্বামী পারিবারিক আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেন। বর্তমানে স্বামীর বয়স ৪৪ বছর এবং স্ত্রীর ৪১।
আরও পড়ুন: শহরে পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ নিয়ে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের
সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে দেখা যায়, স্ত্রী অনবরত তাঁর স্বামীকে কালো বলে অপদস্থ করতেন লোকসমক্ষে। আর সে কারণে কোনও কারণ ছাড়াই তিনি স্বামীকে পরিত্যাগ করে বাপের বাড়ি চলে যান মেয়েকে নিয়ে। পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বাপের বাড়ি চলে যাওয়ার যুক্তি হিসেবে স্ত্রী গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ দায়ের করেন। স্বামীর বিরুদ্ধে পরকীয়া সম্পর্কের অভিযোগ আনেন স্ত্রী।
আদালত ও পুলিশ খুঁটিয়ে দেখেছে যে, স্ত্রীর আনা অভিযোগটি সর্বৈব মিথ্যা। আদালত বলেছে, স্বামীর বিরুদ্ধে ভুয়ো অভিযোগ আনাটাও এক ধরনের অপরাধ ও নির্মম আচরণ। ফলে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন মঞ্জুর করে কর্নাটক হাইকোর্ট। বিচারপতি অলক আরাধে এবং অনন্ত রামনাথ হেগড়ের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, স্বামীর অভিযোগ ছিল যে, তাঁর গায়ের রং কালো বলে স্ত্রী তাঁকে কথায় কথায় খোঁটা দিতেন। যে কারণে লোকজনের সামনে তিনি অপমানিত হতেন। স্বামী আদালতে আরও বলেন, ছোট মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে দিনের পর দিন তিনি সেই অপমান সহ্য করে গিয়েছেন।
এর মধ্যে স্ত্রী শ্বশুরবাড়ির লোকজন এবং স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা করেন। গার্হস্থ্য হিংসার মামলা করে তিনি মেয়ে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান। পারিবারিক আদালতে স্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে স্বামী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার ও অত্যাচারের অভিযোগ আনেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, পণের দাবিতে তাঁকে মেয়েকে নিয়ে যেতে দেওয়া হয় না এবং তাঁর স্বামীর অন্য মেয়ের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক আছে। সেই সম্পর্কের সূত্রে তাঁদের একটি মেয়েও আছে। তা শুনে পারিবারিক আদালত স্বামীর আবেদন নাকচ করে দিলে তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।