Placeholder canvas
কলকাতা মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫ |
K:T:V Clock
Fourth Pillar | কর্নাটকের সরকার কাদের হাতে?
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  মনোজিৎ মালাকার
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১০ মে, ২০২৩, ১০:৫০:০০ পিএম
  • / ৩৫৪ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • মনোজিৎ মালাকার

আপাতত লাখ টাকার প্রশ্ন হল কর্নাটক কার হাতে যাচ্ছে? তিনের বেশি সম্ভাবনা তো নেই। কংগ্রেস গরিষ্ঠতা পাবে, বিজেপি গরিষ্ঠতা পাবে কিংবা দেবেগৌড়ার জনতা দল সেকুলার ২৮/২৯ টা আসন নিয়ে কিং মেকার হয়ে বসবে। এবং ভোট পড়ে যাবার পরে বেশিরভাগ এক্সিট পোলের বক্তব্য হল ওইরকম এক হাং অ্যাসেম্বলি হতে যাচ্ছে। আমাদের খবর বা আমাদের হিসেব আমরা পরে দেব। আগে দেখা যাক এই তিন সম্ভাবনার ফলে সরকার কার হাতে যাচ্ছে? হয় কংগ্রেসের সরকার হবে, নাহলে বিজেপির সরকার হবে এটা তো ঠিক আছে। কিন্তু যদি তিন নম্বর ফলাফল হয়? মানে একটা হাং অ্যাসেম্বলি যেখানে জনতা দল সেকুলার যেদিকে ঝুঁকবে সেদিকেই সরকার হবে। জেডিএস যদি কংগ্রেসের সঙ্গে যায় তাহলে কংগ্রেসের সরকার হবে, যদি বিজেপির দিকে যায় তাহলে বিজেপির সরকার হবে। এইখানে এসে প্রশ্ন উঠতেই পারে নামের পাশে সেকুলার ট্যাগ লাগানো এক দল কি করে বিজেপি কে সমর্থন করবে? করবে কারণ এর আগেও করেছে।

ওসব সেকুলার ট্যাগ ইত্যাদির কোনও মানেই নেই, ২৮/২৯ টা আসন নিয়ে জেডিএস এর হারদানাহাল্লি ডড্ডেগৌড়া দেবেগৌড়ার পুত্র হারদানাহাল্লি দেবেগৌড়া কুমারস্বামী এর আগে দু’দুবার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন এইভাবেই, একবার বিজেপির সমর্থনে অন্যবার কংগ্রেসের সমর্থনে। কাজেই ঐ সেকুলার ট্যাগ দেখে ভুলবেন না, ভুলবেন না যদি দেবেগৌড়ার ইতিহাস পড়ে ফেলেন, যিনি বামেদের সমর্থনে তৃতীয় ফ্রন্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, ইন ফ্যাক্ট জ্যোতি বসুকে যখন দল প্রধানমন্ত্রী হতে দিল না তখন তিনিই এই নামটা প্রথম জানিয়েছিলেন। এই দেবেগৌড়া কিছুদিন আগেও বিজেপি বিরোধী কনক্লেভে এসেছেন, কিছুদিন আগেও কুমারস্বামী বিজেপি বিরোধী ঐক্যের কথা বলেছেন। সে সব এক মূহুর্তে উড়িয়ে দিয়ে তিনি মূখ্যমন্ত্রীর পদে বসে পড়তে পারেন, কারণ তিনি ভোক্কালিগা, কর্ণাটকের কুলাক, জমিদারদের অন্যতম গোষ্ঠী, কেবলমাত্র গ্রেটার মাইশুরু রিজিয়নে এদেঁর ভালোরকম উপস্থিতি আছে, এখান থেকেই জে ডি এস ২৫/২৮ টা আসন পায়, এবং সময় বুঝে যে কারওর সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রী হয়। এটাই আমাদের দেশের গণতন্ত্রের এক জটিল ধাঁধা যা দেশের বহু প্রান্তেই আছে। এবার দেখে নেওয়া যাক এই তিন সম্ভাবনা আগামী দিনে জাতীয় রাজনীতিতে কীরকম প্রভাব ফেলবে।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | জ্বলছে চিত্রাঙ্গদার মণিপুর

বিজেপি যদি জেতে তাহলে বলার অপেক্ষা রাখে না যে তার পুরো ক্রেডিট যাবে নরেন্দ্র মোদীর দিকে, তাঁর অসম্ভব ক্যাম্পেইন, রোড শো, ধর্মীয় বিভাজনের ক্ষমতা, অনর্গল স্বিওপ্ন দেখানোর ক্ষমতার জয় বলেই ধরে নিতে হবে, অনেকে এটাও বলবেন যে এই কর্ণাটকে জয় হলে মোদিজীকে গড অফ ইলেকশন বলেই ধরে নিতে হবে, টিভিতেই এই কথা বলেছেন পলিটিক্যাল অ্যানালিস্ট প্রোফেসার অভয় দুবে। অন্যদিকে যদি কংগ্রেস জিতে যায়, তাহলে রাহুল গান্ধীর পদযাত্রা, ভারত জোড়ো যাত্রার ওপর এক নির্বাচনী শিলমোহর পড়বে, কংগ্রেস এবং সারা ভারতের বিজেপি বিরোধী শক্তি ওইক্যবদ্ধ হবার শক্তি পাবে। এরপরের নির্বাচন মানে রাজস্থান, তেলেঙ্গানা, ছত্তিশগড় বা মধ্যপ্রদেশে বিজেপিকে জিততে হলে বেগ পেতে হবে, বিজেপিতে কিচঘু ছুটকো বিদ্রোহ দেখা দেবে। সব মিলিয়ে দেশের রাজনীতি এক অন্য বাঁক নেবে। কিন্তু যদি জেডিএস-বিজেপির সরকার হয়, তাহলে দেশের রাজনীতি যেমন চলছিল তেমনই চলবে, আর কংগ্রেস – জেডিএস সরকার তৈরি হলে তা সর্বভারতীয় রাজনীতিতে বিজেপির হাতে আরেকটা অস্ত্র তুলে দেবে, তারা বলবে কংগ্রেস জোড়তোড়ের সরকার তৈরি করেছে, যেন তেন প্রকারেন সরকারে বসাই কংগ্রেসের লক্ষ্য। বেশ এই সম্ভাবনার কথা আরও আলোচনা করা যাবে, আপাতত আমরা এই নির্বাচন নিয়ে কী মনে করছি, কী ফলাফল হতে চলেছে তা আলোচনা করে নিই। আমাদের কাছে যা তথ্য আছে তা দিয়ে আমরা কর্নাটকের বিভিন্ন অঞ্চল ধরে ধরে কী হতে চলেছে সেই আলোচনায় আসি। প্রথমে দেখে নেওয়া যাক কোস্টাল কর্নাটকের ফলাফল, এখানেই রাজ্যের বড় সংখ্যক মুসলমান থাকেন, ইন ফ্যাক্ট কোস্টাল কর্নাটক, কর্নাটকের গ্রেটার মাইশুরু আর হায়দ্রাবাদ কর্নাটক অঞ্চলেই মুসলমানেরা থাকেন, অন্য এলাকাগুলোতে তেমন থাকেন না। এই কোস্টাল কর্নাটকেই হিজাব, হালাল বিতর্কগুলো উঠেছে, অশান্তি হয়েছে, এই অঞ্চলে বেশ ভাল সংখ্যক খ্রিস্টানেরাও থাকেন। এইখান থেকেই কর্নাটকে বিজেপির উত্থান। এই অঞ্চলে বজরঙ্গবলি স্লোগান কাজ করেছে, হিন্দু মুসলমান মেরুকরণ হয়েছে এখানে ১৯ টা আসনের মধ্যে ১৬/১৭ টা আসন বিজেপি পেতে পারে, কংগ্রেস ২ -৩ টে, জেডি এস ৪/৬% ভোট পাবে কিন্তু আসন পাবে না। এরপর সেন্ট্রাল কর্ণাটক, এখানে ২৩ টা আসন আছে, গতবারে ১৬ টা আসন ছিল এবার সেখানে বিজেপি কম বেশি ৭ টা সন হারাবে, তাদের সংখ্যা কোনওভাবেই ১০ ছাড়াবে না, কংগ্রেস ১২ টা আসন পেতে পারে, জেডি এস একটা। মাথায় রাখুন এই সেন্ট্রাল কর্নাটকেই কিন্তু বিজেপির প্রাক্তন মূখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরিয়াপ্পার আসন, যেখানে এবার তাঁর ছেলে ভিজয়েন্দ্র লড়ছে, সে আসন বিজেপি জিতবেই কিন্তু সেন্টারল কর্নাটকে ৭ টা আসন কমে যাওয়া এক বিরাট ব্যাপার। এখানে ১ টা আসন জেডি এস পেতে পারে।

এরপরে চলুন বেঙ্গালুরু অঞ্চলে এখানে ২৮টা আসনে ১১টা আসনে বিজেপি জিততে পারে ১৬টা আসনে কংগ্রেস, মানে গতবারের চেয়ে একটা বেশি। জেডিএস একটা আসন পেতে পারে। এই বেঙ্গালুরুতে শেষ দুদিন জান লড়িয়ে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। এরপরে চলুন কংগ্রেসের পুরনো গড় হায়দরাবাদ কর্নাটকের দিকে। এইখানে কংগ্রেস আগের সব রেকর্ড ছাপিয়ে যাবে বলেই আমাদের ধারণা, এখানে ৪০ টা আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেতে পারে ৩৪ টা আসন, বিজেপি ৫ টা আর জেডি এস একটা। এখানে ওবিসি ভোট, দলিত ভোট, মুসলমান ভোট প্রায় পুরোটাই গেছে কংগ্রেসের দিকে। এর পরের অঞ্চল কুট্টুর কর্নাটক বা মুম্বাই কর্নাটক। এখানেও কংগ্রেস ৫০ টা আসনের মধ্যে ২৮ টা পাবে, বিজেপি ২০ টা আর জেডিএস ২ টো আসন পেতে পারে বলে আমাদের ধারণা। এরপরে আসবে কর্ণাটকের সবথেকে বড় অঞ্চল অল্ড মাইশুরু রিজিয়ন যেখানে ৬৪ টা আসন আছে। এই অঞ্চলেই ভোক্কালিগাদের গড়, তাদের মঠের সঙ্গে গোরখনাথ মঠের সম্পর্ক আছে বলেই এই অঞ্চলে আদিত্যনাথ যোগীকে প্রচারে আনা হয়েছিল, এই অঞ্চলে বিরাট প্রভাব ভোক্কালিগাদের যাঁদের অন্যতম নেতা হলেন দেবেগৌড়া, কাজেই এখানে জেডিএস-এর জোর বেশি, বিজেপি এখানে কিছুইউ ছিল না, কিন্তু তারা এখানে বিরাটভাবে প্রচার করেছে, অন্যদিকে এই অঞ্চল থেকেই বহুবার জিতেছেন কংগ্রেসের ডি কে শিবকুমার, তাঁর প্রভাব আছে কারণ তিনিও ভোক্কালিগা। এখানে সেই অর্থে তিনকোনার লড়াই হয়েছে, আর ট্রায়াঙ্গল লড়াইয়ে জেডিএস আর বিজেপি কমবেশি ২৬/২৭ % ভোট পাবেন বলেই আমাদের ধারণা কিন্তু কংগ্রেস এখানে বিরাটভাবেই এগিয়ে থাকবে। আসনের হিসেবে এখানে ৬৪ টা আসনের মধ্যে কংগ্রেস ৩৮ টা আসন, জেডিএস ১৪ টা আসন আর বিজেপি ৮ টা আসন পেতে পারে বলে আমাদের ধারণা। তাহলে সব মিলিয়ে ২২৪ টা আসনের মধ্যে আমাদের হিসেবে কংগ্রেস পেতে পারে ১৩১ -১৩৩ টা আসন পেতে পারে, বিজেপি ৭০-৭২ টা আসন পেতে পারে জেডিএস ২১-২৩ টা আসন পেতে পারে। মানে আমাদের কাছে যে তথ্য আছে তার ভিত্তিতে বলাই যায় যে কংগ্রেস অনায়াসে সরকার তৈরি করছে, কিন্তু শেষ ফলাফলের জন্য তো ১৩ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে। কিন্তু আমাদের ধারণা যদি মিলে যায় তাহলে কিন্তু রাজনীতির চাকা উল্টোদিকে গড়ানো শুরু হয়ে গেল, কর্নাটকের এই হার বিজেপির আগামী রাজনৈতিক ব্যর্থতা কে ডেকে নিয়ে আসবে, উল্টোদিকে এই জয়ের পরে বিরোধী ঐক্যের জায়গায় কংগ্রেস নিজেকে নেতৃত্বের জায়গায় রাখতে পারবে। এই জয় আগামী তেলেঙ্গানা, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, মধ্য প্রদেশে বিক্ষুব্ধ বিজেপিকে আরও বিক্ষুব্ধ করে তুলবে, উল্টোদিকে কংগ্রেসের দলত্যাগ, দল ছেড়ে বেরোনর প্রবণতা বন্ধ হবে। কেবল শেষ করার আগে একটা কথা বলে নেওয়া যাক, যাকে আমরা মোদি ম্যাজিক বলছিলাম, সেই মোদি ম্যাজিক কিন্তু ধার হারাচ্ছে, হু হু করেই হারাচ্ছে, কর্ণাটকের নির্বাচন সাফ বলে দিচ্ছে যে কেবল মোদীর পিঠে চড়ে নির্বাচনী বৈতরিণী পার করার চিন্তা বিজেপিকে ছাড়তেই হবে।

 

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪
১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১
২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭ ২৮
২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

আচমকাই বিজেপির লেটার হেড বদল
মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫
হাওড়া ব্রিজে টাকা তুলছে পুলিশ, তারপর কী হয় দেখুন
সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫
সব নয়! ঠাঠাপোড়া গরমে এই দুটি ডাল কিন্তু মাস্ট
সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫
অপারেশন সিঁদুরের পরেই বড়সড় সিদ্ধান্ত, ডিজিএমও পদ থেকে সরানো হল রাজীব ঘাইকে
সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫
ফের কোভিডের সংক্রমণ নিয়ে বিরাট নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর, কী বললেন শুনে নিন
সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫
বিহারের ভাঙল NDA জোট? চিরাগ লড়বেন একা, NDA সরকারের পতন, সময়ের অপেক্ষা?
সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫
সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫
‘বর্তমান নিয়ে জবাবদিহির সময় নেই, ২০৪৭ সালের স্বপ্ন বিক্রিতে ব্যস্ত, মোদি সরকারকে কটাক্ষ রাহুলের
সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫
আপনার শিশুর কানে ব্যথা? কীভবে সতর্ক হবেন..
সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫
দিল্লিতে ভেঙে পড়ল পুরনো বাড়ির একাংশ, মৃত ১ শিশু
সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫
সরানো হল ব্যারাকপুরের সিপিকে, নতুন সিপি হলেন মুরলীধর শর্মা
সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫
করোনা সংক্রমণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কী কী নির্দেশ?
সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫
প্রতিবন্ধী যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগ, অভিযুক্তর পুলিশি হেফাজত
সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫
সাড়ে ৬ হাজার ছুঁইছুঁই দেশে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা
সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫
আরামবাগে ফুচকা খেয়ে অসুস্থ বহু শিশু ও মহিলা
সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.
Developed By KolkataTV Team