কালাবুরুঙ্গি: কর্নাটক বিধানসভা ভোটের (Karnataka Assembly Vote 2023) আর মাত্র ৩ দিন বাকি। গোটা রাজ্য তো বটেই দেশের আর পাঁচটা রাজনীতি-সচেতন মানুষের কাছে নজরকাড়া কেন্দ্র হচ্ছে গুলবর্গা উত্তর কেন্দ্র (Gulbarga North)। কালাবুরুঙ্গি শহরের শেখ রোজা এলাকার এই কেন্দ্রে কানিজ ফতিমা (Kaneez Fathima) রাজ্যে কংগ্রেসের একমাত্র মুসলিম মহিলা প্রার্থী। এই কেন্দ্রের ৬০ শতাংশই মুসলিম ভোটার (Muslim Voter)। তাই মানুষের কাছে তিনি বলছেন, তাঁকেই তাঁরা যেন ভোট দেন। আর কাউকে নয়। কারণ এই কেন্দ্রের ভোটারদের আর কেউ রক্ষা করতে পারবে না।
৬৩ বছরের ফতিমার স্বামী কামারুল ইসলাম এই কেন্দ্রের ৬ বারের বিধায়ক। ২০১৮ সালে তাঁর মৃত্যুর পর রান্নাঘর ছেড়ে, ঘরগৃহস্থী ছেড়ে হিজাব পরা এই মহিলা রাজনীতির আঙ্গিনায় পা দেন। সেবারও তাঁর স্বামীর কেন্দ্রে ভোটে জিতে বিধায়ক হন তিনি। ফতিমা তাঁর কেন্দ্রের ভোটারদের বলছেন, কর্নাটকে কংগ্রেসের জয়, দেশেও পরিবর্তনের হাওয়া ডেকে আনবে। উল্লেখ্য, ২২৪ আসন বিশিষ্ট কর্নাটক বিধানসভা ভোটে বিজেপি কোনও মুসলিম প্রার্থী দেয়নি। জেডিএসও মাত্র একজন মুসলিম মহিলাকে প্রার্থী করেছে। সাবিনা সামাদ তাঁর নাম। উদুপি এলাকার কাপু বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী তিনি। আর এদিকে, ফতিমা হলেন কংগ্রেসের একমাত্র মুসলিম প্রতিদ্বন্দ্বী।
আরও পড়ুন: Daily Bengali Horoscopes | Ajker Rashifal | আজকের রাশিফল | ০৭ মে, ২০২৩
একজন নিষ্ঠাবান মুসলিম নারী হিসেবে তিনি বাইরে হিজাব পরে ঘোরাফেরা করেন। হিজাব-বিতর্কের সময় গুলবর্গা এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিনিই প্রতিবাদে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ২০২২ সালে বিজেপির বাসবরাজ বোম্মাই সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। ২০২০ সালে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনেও তাঁকে সামনের সারিতে দেখা গিয়েছিল। হিজাব-বিতর্কের সময় তিনি বলেছিলেন, হিজাব পরা আমাদের অধিকার। স্বাধীন ভারতে আমাদের স্বাধীনতা আছে হিজাব পরার। কে কী পরবে তার উপর প্রশ্ন তোলা যায় না। এই ইস্যুতে মেয়েদের কলেজে যেতে বাধা দেওয়া অন্যায়।
এহেন রাজনীতিবিদ ফতিমা এবার কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়েছেন। কারণ, তাঁর বিরুদ্ধে গতবার মাত্র ৫৯৪০ ভোটে হেরে যাওয়া লিঙ্গায়ত যুব নেতা চন্দ্রকান্ত পাটিল বিজেপি প্রার্থী। এছাড়াও ফতিমার বিরুদ্ধে আরও ৯ জন মুসলিম প্রার্থী রয়েছেন। যার মধ্যে একজন হলেন জেডিএসের নাসির হুসেন উস্তাদ। আরও একটি অশনি সংকেত ঝুলে রয়েছে তাঁর ভাগ্যে।
সেটা হল, কর্নাটক বিধানসভা ভোটের দিন ঘোষণার মাত্র ৩ দিন আগে কংগ্রেস গুলবর্গা পুরসভায় মেয়র পদে নির্বাচনে হেরে যায়। যদিও ২০২১ সালে পুরভোটে কংগ্রেসই একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে ভোটে জিতেছিল। সব মিলিয়ে ফতিমার দিকে মুসলিম ভোট ব্যাঙ্ক থাকলেও জেডিএস প্রার্থী যে তাঁর পথের কাঁটা হতে চলেছন সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এই মওকায় শিকে ছিঁড়লেও ছিঁড়তে পারে বিজেপির কপালে।