কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: একসময় কেকে’র মনে হয়েছিল, তাঁর সঙ্গীতজীবন বোধহয় শেষ। হতাশায় মুষড়ে পড়েছিলেন সে সময়। তখন কেকে’র ভেঙে পড়া মনের পাশে এসে সঙ্গ দিয়েছিলেন এক মহিলা। সেই মহিলাই তাঁকে ক্রমাগত উৎসাহ জুগিয়ে গিয়েছেন। তাঁকে ভরসা দিয়েছেন। গানের জগৎই তাঁর আসল পৃথিবী, সেকথা বুঝিয়ে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন কেকে’র সঙ্গে। কেকে নিজেও এক সাক্ষাৎকারে সেকথা স্বীকার করেছিলেন। সেই মহিলার নাম জ্যোতি।
আরও পড়ুন: Purulia: কৌন বনেগা ক্রোড়পতি হতে গিয়ে আড়াই লাখ খোয়ালেন মহিলা
কে এই জ্যোতি? যাঁর মানসিক ভরসায় আজকের কেকে-কে আমরা খুঁজে পেয়েছি। জ্যোতি হলেন কেকে’র স্ত্রী। এমন স্ত্রী পাওয়া ভাগ্যের কথা। সেই সাক্ষাৎকারেই মেনে নিয়েছিলেন কেকে। জীবনের অতি সংকটপূর্ণ মুহূর্তে কেকে’র ভেঙে পড়া মনে আশার আলো জ্বালিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী জ্যোতি। নি়ঃসঙ্কোচে সেকথা কবুল করতে দ্বিধা করেননি কেকে। ১৯৯৪ সালে জ্যোতিই তাঁকে দিল্লি ছেড়ে মুম্বই নিয়ে এসেছিলেন। বুঝিয়েছিলেন সঙ্গীত জগতে যদি কিছু করে দেখাতেই হয়, তাহলে আরব সাগরের তীরেই গিয়ে ডেরা বাঁধতে হবে। কারণ, তখন থেকেই তিনি হয়তো জানতেন, তাঁর কাছে সুরের জগতের অরূপরতন আছে। তাই অনেক পীড়াপীড়ি করে স্বামীকে নিয়ে দিল্লি ছেড়ে মুম্বইয়ে ভাগ্যের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন কেকে-দম্পতি। কেকে জানতেন, এই ঝুঁকিটা না-নিলে তিনি কোনওদিন ভারতবিখ্যাত গায়ক হতে পারতেন না।
মুম্বইয়ে পা দিয়েই কেকে প্রথম চমকে দিলেন ‘পল’ নামের এক অ্যালবামে। সেটা ১৯৯৯ সাল। এরপরই সলমন-অজয় দেবগণ ও ঐশ্বর্য রাই অভিনীত হাম দিল দে চুকে সনম ছবিতে তড়প তড়প গানটি রিলিজ হওয়ার পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি কেকে-কে। দিল্লি থেকে তাঁর মুম্বই পাড়ির কারণও তিনি নিজেই ব্যাখ্যা করেছিলেন। বলেছিলেন, তখন আমি সারাদিন ধরে জিঙ্গলস গাইছি, জিঙ্গলস প্রোডাকশন করছি। সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনির পরও বাঁচার মতো টাকা আসছে না। কোনওমতে বাঁচার জন্য প্রতিনিয়ত লড়াই করে চলতে হচ্ছে আমায়। অথচ তার ৩ বছর আগে আমি বিয়ে করেছি। সংসার চালাতে এমন হিমশিম খাচ্ছি যে, মনে হতো আমি জীবন বোধহয় শেষ হয়ে গেল। সেই সময় আমার পাশে ছিল জ্যোতি। ওই আমাকে জোর করে দিল্লি থেকে মুম্বই নিয়ে এল।
কেকে আরও বলেছিলেন, যখন আমি কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না, তখন জ্যোতিই আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। যেমনটা আজও করে, সোনি মিউজিক ইন্ডিয়ার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন কেকে। হেসে বলেছিলেন, নিজের পায়ে দাঁড়ানোর আগেই আমি বিয়ে করেছি। আর জীবনে আমাকে প্রতিষ্ঠা দিতে ওই আমার পাশে দাঁড়িয়েছে সব সময়।