একবার বিজেপির সঙ্গে জোট করা। আবার তাদের হাত ছাড়া। বারবার জোট পরিবর্তন করা বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছে। এতে আখেরে নীতীশ কিংবা তাঁর দল জেডিইউয়ের কতটা লাভ হয়, তা নিয়ে বিহারের রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এত ঘনঘন জোট বদলের ফলে বিধানসভায় ক্রমশই জেডিইউয়ের আসন কমছে, কমছে প্রাপ্ত ভোট শতাংশ। রাজনৈতিক সমীক্ষকরা এমনটাই অভিমত পোষণ করছেন। তথ্য বলছে, বিগত দুটি বিধানসভা ভোটে জেডিইউয়ের আসন কমেছে, কমেছে ভোট শতাংশও। ২০১০ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জেডিইউ ১৪১ টি আসনে লড়াই করে পেয়েছিল ১১৫ টি আসন। তাদের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৮২ শতাংশ। তখন ছিল আরজেডির সুখের সময়। ২০১৫ সালে জেডিইউ হাত ধরেছিল আরজেডির। ২০২০ সালে জেডিইউ ছিল বিজেপির জোটসঙ্গী। ওই দুই ভোটেই ২০১০ সালের তুলনায় জেডিইউয়ের আসন এবং প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হার কমেছে। ২০১৫ সালে তার পরিমাণ খুব একটা বেশি ছিল না। তবে ২০২০ সালে সেই ব্যবধান অনেকটাই বেড়ে যায়। ২০২০ সালের ভোটে জেডিইউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১১৫ টি আসনে। তারা পায় মাত্র ৪৩ টি আসন। অথচ বিজেপি পেয়েছিল ৭৪ টি আসন। তারা লড়াই করে ১১০ টি আসনে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য আরও বলছে, ২০১৫ সাল বাদ দিলে সব নির্বাচনেই বিজেপির কিন্তু ভোট এবং আসন বেড়েছে। ২০১০ সালের বিধানসভা ভোটে প্রতি ১০ টি আসনের মধ্যে নটিতেই জিতেছে। ২০২০ সালে তাদের ভোট ছিল ৬৭ শতাংশ। পাঁচবারের মধ্যে চারবার বিজেপি এবং জেডিইউ জোটের শরিক হিসেবে লড়াই করে। ২০১৫ সালে ১৫৭ টির মধ্যে বিজেপি মাত্র ৫৩ টি আসন পায়। ২০১৫ সালে জেডিইউয়ের সঙ্গে জোট গড়ায় আরজেডি কিন্তু ভালো ফল করে। তারা ওই বছর ১০১ টির মধ্যে ৮০ টি আসন পায়। তাদের ভোট ছিল প্রায় ৮০ শতাংশ। ২০১৫ সালের আগে তিনটি নির্বাচনে তারা যথাক্রমে ৩৫, ৩১ এবং ১৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ২০২০ সালে আরজেডি কংগ্রেস এবং বামেদের সঙ্গে জোট গড়েছিল। সেই বছর তারা ৫০ শতাংশ ভোট পায়।
প্রশ্ন উঠেছে, বিজেপির তুলনায় আরজেডির সঙ্গে জোট গড়লে তাদের ভোট বাড়বে, এই আশাতেই কি নীতীশ কুমার বিজেপির হাত ছাড়লেন?
নীতীশের বিরোধীরা অবশ্য বলছে, এত ঘনঘন জোট বদল করায় তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা শূন্যে নেমে এসেছে। লোক জনশক্তি পার্টির রামবিলাস গোষ্ঠীর নেতা চিরাগ পাসওয়ান নীতীশকে লক্ষ্য করে প্রশ্ন ছুড়েছেন, আপনার কোনও আদর্শ আছে কি? চিরাগের দাবি, আগামী বিধানসভা ভোটে জেডিইউ একটি আসনও পাবে না।