নয়াদিল্লি: ভারতে বুলেট ট্রেন (Bullet Train) ছুটতে এখনও পাঁচ বছর সময় লাগবে। ২০২৮ সালের আগে এই প্রকল্প কোনওভাবেই সম্পূর্ণ হবে না। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi) ভারতবাসীকে দেশের প্রথম বুলেট ট্রেনের যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, তা বাস্তাবায়িত হতে অনেক দেরি। মুম্বই-আমেদাবাদ বুলেট ট্রেনের প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়ার বরাত পাওয়ার জন্য অ্যাফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার (Afcons Infrastructure) বিডিংয়ে সবচেয়ে কম দর হেঁকেছে।
ভারতের প্রথম বুলেট ট্রেন প্রকল্পে ২১ কিমি লম্বা একটি সুড়ঙ্গ অর্থাৎ টানেল (Tunnel) তৈরি হবে। পাশাপাশি এটাও উল্লেখ করার মতো বিষয়, মুম্বই-আমেদাবাদ বুলেট ট্রেন প্রোজেক্টে (Mumbai-Ahmedabad Bullet Train Project) মহারাষ্ট্রে ৭ কিমি লম্বা সুড়ঙ্গ খোঁড়া হবে সমুদ্রের নীচ দিয়ে। ভারতে এর আগে সমুদ্রের নীচ দিয়ে কোনও সুড়ঙ্গ খোঁড়া এবং পথ তৈরি হয়নি এখনও পর্যন্ত। খবরে প্রকাশ, এই সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ শেষ হতে পাঁচ বছর সময় লাগবে। তার আগে সম্ভব নয়। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ২০২৮ সালের দ্বিতীয় পর্বের আগে ভারতবাসী দেশে বুলেট ট্রেন ছোটা প্রত্যক্ষ করতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: Google-Amazon Layoffs | স্বেচ্ছায় চাকরি ছাড়লে এক বছরের বেতন দিচ্ছে গুগল, অ্যামাজন!
ন্যাশনাল হাইস্পিড রেল কর্পোরেশন (National High Speed Rail Corporation -NHSRCL) এবিষয়ে প্রকাশিত বিবৃতিতে জানিয়েছে, “প্রযুক্তিগত দিক থেকে দুই যোগ্য বিডার ফিন্যান্সিয়াল বিডিংয়ে দর হেঁকেছিল। অ্যাফকনল ইনফ্রাস্ট্রাকটার সবচেয়ে কম বিড হেঁকেছে। অ্যাফকন এই প্রকল্পের জন্য ৬,৩৯৭.৩ কোটি টাকার কোটেশন দিয়েছে।”
মহারাষ্ট্রের বান্দ্রা-কুরলা কমপ্লেক্স (Bandra-Kurla Complex) এবং শিলফাটা (Shilphata), এই দু’টি স্থানের মাঝে ভূগর্ভস্থ স্টেশনের (Underground Station) জন্য টানেলটি তৈরি করা হবে এবং সমুদ্রের নীচের টানেলটি (Undersea Tunnel) থানে ক্রিক (Thane Creek) দিয়ে যাবে। টিউব টানেলের (Tube Tunnel) মধ্যে আপ এবং ডাউন (Up & Down), উভয় পথে ট্রেনে যাতায়াতের জন্য সুবন্দোবস্ত থাকবে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, তৈরি হতে চলা এই টানেলের অবস্থান সংলগ্ন ৩৭টি স্থানে (Locations) ৩৯টি যন্ত্রপাতি কক্ষ (Equipment Rooms) নির্মাণ করা হবে।
সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এটি প্রকল্পে টানেল নির্মাণে ১৩.১ মিটার ব্যাসের কাটার হেড (Cutter Head) সহ টানেল বোরিং মেশিন (Tunnel Boring Machines – TBMs) ব্যবহার করা হবে। মেট্রো রেল (Metro Rail) এবং গণপরিবহন ব্যবস্থার (Mass Transit Systems) ক্ষেত্রে, সাধারণত ৫-৬ মিটার ব্যাসের কাটার হেড শহরাঞ্চলে টানেল নির্মাণের জন্য ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই প্রোজেক্টে টানেলের ১৬ কিমি অংশ নির্মাণের জন্য তিনটি টিবিএম ব্যবহার করা হবে, বাকি ৫ কিমি নিউ অস্ট্রিয়ান টানেলিং পদ্ধতির (New Austrian Tunnelling Method – NATM) মাধ্যমে গর্ত খোঁড়া হবে। সুড়ঙ্গটি মাটি থেকে ২৫-৬৫ মিটার গভীরে খনন করা হবে এবং সর্বাধিক গভীরে খনন হবে শিলফাটার পার্সিক হিলে ১১৪ মিটার নীচে। ইতিমধ্যেই প্রাথমিক কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। রেল মন্ত্রকের (Rail Ministry) আশা, এই প্রোজেক্টের ৫০ কিমি অংশে ট্রায়াল রান (Trial Run) ২০২৬ সালের মধ্যেই শুরু করা যাবে।