নয়াদিল্লি: রেল পরিষেবা (Rail Service)। ভারতের লাইফলাইন (Lifeline)। ছোট হোক বা বড়, দেশে এমন কোনও ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর, যিনি কোনও দিন ট্রেনে চাপেননি। বিশেষ করে দূরপাল্লার ট্রেনে। হ্যাঁ, ব্যতিক্রম অবশ্যই থাকবে, কিন্তু সেই সংখ্যা হাতে গোনা। কম-বেশি আমরা সবাই দূরপাল্লার ট্রেনে চড়েছি বা চড়ি। আর তার অন্যতম কারণ হল যাতায়াতের ভাড়া তুলনায় অনেক কম বিমানের চেয়ে। এছাড়া, ট্রেনে সফর করার আলাদা একটা অনুভূতি রয়েছে, যা বলে বোঝানো মুশকিল।
দূরপাল্লার ট্রেনে যাতায়াতের ক্ষেত্রে যে বিষয়টি আমাদের সবার মাথায় আসে, সেটা হল ট্রেনের টয়লেট (Train Toilets)। ট্রেনের টয়লেটের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে প্রায়শই সবারই অভিযোগ (Compliant) রয়েছে। তবে যাত্রীদের স্বাচ্ছ্যন্দের কথা ভেবে রেল যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালায় পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য। কিন্তু নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর আগে ট্রেনের টয়লেট পরিষ্কার করা সম্ভব নয়। কিন্তু, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সবসময়ই একটা বড় ব্যাপার রোগ-ব্যাধি দূরীকরণে।
যাত্রীদের অভিযোগ সমাধান এবং স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে ট্রেনের টয়লেটে বদল ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় রেল। রেল সূত্রে খবর, আধুনিক মানের সুবিধা প্রদানের (Providing Modern Facility) জন্য দূরপাল্লার ট্রেনগুলিতে নতুন ডিজাইনের টয়লেট বসানো হবে। সম্প্রতি রাঁচি রাজধানীর (Ranchi Rajdhani) চারটি এসি কোচে (AC coach) পরীক্ষমূলকভাবে বায়ো-টয়েলট (Bio-Toilets) বসানো হয়েছে। তাতে ইতিবাচক সাড়া (Positive Feedback) মিলেছে যাত্রীদের পক্ষ থেকে। তারপরই ভারতীয় রেল (Indian Railways) সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দূরপাল্লার অন্যান্য ট্রেনের এসি কোচেও বায়ো-টয়লেট বসানো হবে।
অত্যাধুনিক টয়েলটগুলিতে অটোমেটিক হাইজিন এবং অর্ডার কন্ট্রোল সিস্টেম (Automatic Hygiene and Odour Control Systems) রয়েছে। অর্থাৎ পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা ও দুর্গন্ধ দূর করা, দু’টিই গ্যারান্টি। রেল সূত্রে এটাও জানানো হয়েছে, এই বায়ো-টয়লেটগুলি চুরি যাওয়া আটকাতে, বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া, বায়ো-টয়েলট বসানোর জন্য ওয়াশরুমের (Washrooms) পাশাপাশি দরজার পথ (Doorways) এবং গ্যাংওয়ে (Gangways) রিমডেলিং (Remodelling) করা হয়েছে।
রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ট্রেনের টয়লেট নিয়ে অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই স্বাস্থ্যবিধি (Hygiene), দুর্গন্ধ (Bad Odour) এবং ত্রুটির (Malfunctioning) জন্য। এই সমস্ত সমস্যাগুলি নতুন ডিজাইন করা সিস্টেমগুলিতে সমাধান করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয়মন্ত্রী রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব (Ashwini Vaishnaw, Union Railway Minister) গত জানুয়ারিতে নয়াদিল্লি রেল স্টেশনে ট্রেনের নতুন টয়লেট পরিদর্শন (Inspection) করে গিয়েছিলেন। তিনি রেলের আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন, ট্রেনে পুরনো টয়লেট বদলে ফেলে আধুনিক মানের টয়লেট বসানোর জন্য।
সূত্রের খবর, রাধধানী ট্রেনগুলির (Rajdhani Expresses) সমস্ত পুরনো টয়লেট আগে বদলানো হবে, তারপর অন্যান্য ট্রেনের এসি কোচের টয়লেট বদলানো হবে। ধাপে ধাপে সমস্ত এক্সপ্রেস ট্রেনের (Express Trains) ক্ষেত্রেই বদল আনা হবে। এক একটি বায়ো-টয়লেটের খরচ ২.৫ লক্ষ টাকা। রেলমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতি বছর ৬,০০০টি করে বায়ো-টয়লেট বসাতে হবে এক্সপ্রেস ট্রেনে।