ভারত–২ লেবানন–০
(সুনীল ছেত্রী, ছাংতে)
ইগর স্টিমাকের কোচিংয়ে আবার একটি টুর্নামেন্ট জিতল ভারত। নামটা বেশ ভারি টুর্নামেন্টটার। আন্তঃ মহাদেশীয় কাপ। কিন্তু যে টিমগুলো খেলল তাদের তেম কোলিন্য নেই। মঙ্গোলিয়া, ভানুয়াতু এবং লেবানন। ফাইনাল নিয়ে ভারত চারটি ম্যাচ খেলল ভারত। একটিও গোল খায়নি স্টিমাকের দল। এই ব্যাপারটার প্রশংসা করতে হবে। রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ভারত লেবাননকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দিল না। দু গোল হয়েছে। আরও গোল হলে অবাক হওয়ার কিছু ছিল না। তিন দিন আগে যে লেবাননের বিরুদ্ধে ভারত গোল শূণ্য ড্র করেছিল, সেই ভারতের সঙ্গে এদিনের ভারতের কোনও তুলনা চলে না। কিক অফ-এর সঙ্গে সঙ্গেই ভারত যে ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ল লেবাননের উপর সেই ঝাঁঝ তাদের শেষ পর্যন্ত ছিল। একেবারে শেষ দিকে নাওরম মহেশ সিংয়ের শট লেবাননের গোলকিপার দুর্দান্ত সেভ না করলে ভারতের ব্যবধান বাড়ত। লেবানন কি তাহলে কিছুই খেলেনি? খেলেছে। অবশ্যই খেলেছে। কিন্তু বক্সের মধ্যে তারা সেই কারুকাজ দেখাতে পারেনি যা ভারত পেরেছে। মাঝ মাঠ থেকে বার বার বল নিয়ে লেবানন যখন বক্সের মধ্যে ঢুকেছে টখন নয় তারা সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে, নয়তো বাইরে মেরে নষ্ট করেছে। সারা ম্যাচে গুরপ্রীতকে একটা কঠিন বলও জন্য সন্দেশ ঝিঙ্গনদের কৃতিত্বও যেমন দিতে হবে তেমনই লেবানন ফরোয়ার্ডদের গোল মুখে ব্যর্থতার কথাও বলতে হবে। নিজে একটি গোল করে এবং সুনীল ছেত্রীকে দিয়ে একতী গোল করিয়ে ম্যাচের সেরা ছাংতে। মুম্বই সিটি এফ সির এই উইঙ্গার এখন ভারতীয় দলের সম্পদ।
যেমন সম্পদ অনিরুদ্ধ থাপা। মাঝ মাঠের এই ছেলেটার বুকের দম দেখলে সত্তর দশকের গৌতম সরকারের কথা মনে পড়ে যায়। অনিরুদ্ধ সামনের মরসুমে মোহনবাগানে খেলবে। একটা বেশ ভাল প্লেয়ার পাচ্ছে সবুজ মেরুন। এই ছাংতে এবং অনিরুদ্ধ থাপার জন্যই মাঝ মাঠর ফণা তুলতে পারেনি লেবানন। ট্যাকল করে বল ছিনিয়ে নেওয়া এবং তার পর আক্রমণে যাওয়া এই দুটোতেই অনিরুদ্ধ দুর্দান্ত। এদের সঙ্গে প্রথমার্দ্ধে জিকসন সিং একটু পিছিয়ে ছিলেন। লেবানন যেমন আক্রমণের জন্য উইং প্লে-র উপর নির্ভর করছিল ভারত সে রকম নয়। মাঝে মাঝে দুই উইং ব্যাক নিখিল পূজারী এবং আকাশ মিশ্র নিজেরা বল নিয়ে উঠলেও ভারতের আক্রমণ ছিল মূলত ডাউন দ্য মিডল। তবে বিরতির পর জিকসনের বদলে নাওরম মহেশ সিং নামার পর উইং প্লে ভাল হয় ভারতের। ডান দিকে ছাংতে আর বাঁ দিকে মহেশ–এই কম্বিনেশনের জন্য প্রচুর গোলের সুযোগ তৈরি হয়। কিন্তু সুনীলের দুই সঙ্গী সাহাল আব্দুল সামাদ আর আশিক কুরুনিয়ন গোলের সামনে বড্ড উল্টোপাল্টা খেললেন। যার জন্য বিরতির আগে গোল পেল না ভারত।
বিরতির পর খেলা শুরু হতেই গোল। ডান দিক দিয়ে ছাংতে বল নিয়ে উঠৈ একেবারে সুনীলের পায়ে বক্সের মধ্যে এমন জায়গায় বল ফেললেন যেখান থেকে গোল না করে উপায় ছিল না ভারত অধিনায়কের। ম্যাচের বয়স তখন ৪৬ মিনিট। কুড়ি মিনিট পর ভারত তার দ্বিতীয় গোলটি করল। বক্সের সামনে বল পেয়ে সুনীল দিলেন মহেশকে। একটু দৌড়ে মহেশ যে শটটা নিলেন তা প্রতিহত করলেন লেবাননের গোলকিপার। রিবাউন্ডটা ধরে ছাংতে গোল করলেন। অতএব গত মার্চ মাসে ইম্ফলে ত্রিদেশীয় কাপ জেতার পর ভারত এবার আন্তঃ মহাদেশীয় কাপও জিতল। সামনেই আবার সাফ কাপ। এবার সেখানে লেবাননের সঙ্গে কুয়েতও আছে। ২১ জুন থেকে বেঙ্গালুরুতে শুরু হচ্ছে টুর্নামেন্ট। ভারতের সমর্থকরা আরও একটা ট্রফি সুনীলদের থেকে পায় কি না তাই এখন দেখার।