প্যারিস: শুক্রবার ফ্রান্সের বাস্তিল দিবস প্যারেডে সেদেশের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে প্রধান অতিথি বা গেস্ট অফ অনার হিসেবে যোগ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্যারেডে ভারতের তিন বাহিনী কুচকাওয়াজে অংশ নেয় এবং বায়ুসেনা আকাশপথে রংবেরংয়ের খেলা দেখায়। প্যারিসের নীল আকাশে ফ্রান্সের জাতীয় পতাকার ত্রিবর্ণ নীল-সাদা-লাল ফুটিয়ে তোলে জেট বিমান। জাতীয় দিবস উপলক্ষে ভাষণে ম্যাক্রোঁ বলেন, বিশ্বের ইতিহাসে ভারতের বিরাট অবদান রয়েছে। ভবিষ্যতে এই দেশ আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। তারা আমাদের কৌশলগত সঙ্গী এবং বন্ধুদেশ। মোদি তার জবাবে বলেন, ভারতের ১৪০ কোটি দেশবাসী ফ্রান্সের কাছে চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকবে। দীর্ঘদিন ধরে ফ্রান্স ভারতের শক্তিশালী ও আস্থাশীল বন্ধু।
মোদিকে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ সম্মান লিজিয়োঁ অব অনারে ভূষিত করায় প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ এবং তাঁর স্ত্রী ব্রিজিৎ ম্যাক্রোঁকে ধন্যবাদ দেন। শুক্রবারই ম্যাক্রোঁ এবং মোদি ২৬ রাফাল এম যুদ্ধবিমান চুক্তি সম্পূর্ণ করবেন। এছাড়াও স্করপেন সাবমেরিন নিয়েও চুক্তি হবে দুদেশের।
আরও পড়ুন: Chandrayaan-3 | চন্দ্রযানের সাফল্য কামনায় টুইট মোদি, শচীনের
ফ্রান্সের সর্বোচ্চ সম্মান লিজিয়ঁ অব অনারে ভূষিত হলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৃহস্পতিবার প্যারিসে পৌঁছে ফরাসি প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্নের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মোদি। পরে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে নৈশভোজে অংশ নেন। আজ, শুক্রবার মোদি ফ্রান্সের জাতীয় দিবস উপলক্ষে প্যারেডে উপস্থিত থাকবেন। প্রসঙ্গত, মোদির এবারের ফ্রান্স সফর ঘটনাচক্রে দুদেশের মৈত্রীর ২৫ বছর পূর্তিতে হচ্ছে। গত ২৫ বছরে চার ফরাসি প্রেসিডেন্ট এবং তিনজন প্রধানমন্ত্রী এই মৈত্রীকে আরও জোরাল করেছেন। ২০০৯ সালে বাস্তিল প্যারেডে অংশ নিয়েছিলেন। সে সময়ও এবারের মতো ভারতীয় তিন বাহিনীর প্যারেড হয়েছিল সারে জাঁহাসে আচ্ছা ও কদম কদম বাড়ায়ে যা সুরে তাল মিলিয়ে।
প্যারিসে ভারতীয় অনাবাসীদের একটি অনুষ্ঠানে ভাষণে মোদি বলেন, ভারত দ্রুত বদলে যাচ্ছে। গণতন্ত্রের জন্মদাত্রী এদেশ সংহতির এক আদর্শ প্রতীক। গোটা পৃথিবী যখন এক নতুন পৃথিবীর দিকে এগিয়ে চলেছে, তখন ভারতেও দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। ফ্রান্সের সঙ্গে ইউপিআই ব্যবহারের বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছে। এছাড়াও ফ্রান্স এখানে পড়াশোনার জন্য পাঁচ বছরের জন্য এককালীন ভিসা দিতে সম্মত হয়েছে। এতে ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের খুব সুবিধা হবে। তিনি বলেন, আমি চুক্তি করেছি। কিন্তু আপনাদের কাজ হবে এটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। উল্লসিত দর্শকদের উদ্দেশে মোদির বক্তব্য, ইউপিআই শুরু হবে আইফেল টাওয়ার থেকে। ফলে এখন থেকে ভারতীয় পর্যটকদের টাকায় লেনদেন করার সুবিধা হবে, আইফেল টাওয়ারের মাথা থেকেও পেমেন্ট করা যাবে।
মোদির ভাষণে আবেগে আপ্লুত ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলা কেঁদেই ফেলেন। ভাষণ শেষে তিনি বলেন, উনি যেন হৃদয় দিয়ে কথাগুলি বলছিলেন। অসম্ভব সুন্দর একটি ভাষণ দিলেন। তাঁকে যেটা সবথেকে বেশি স্পর্শ করেছে সেটা হল বিদেশের মাটিতে দেশের কোনও প্রধানমন্ত্রীকে এই প্রথম উজ্জ্বল মুখে দেখতে পেলাম। তাঁর মধ্য থেকে যেন একটা দীপ্তি ফুটে বেরচ্ছিল। আমি কাঁদছি কারণ আমি যেন একটা ঘোরে রয়েছি।