নয়াদিল্লি: এই দেশের মানুষের কংগ্রেসের উপর অনাস্থা এসে গিয়েছে। অনাস্থা প্রস্তাবের উপর জবাবি ভাষণে কংগ্রেসকে এই ভাষাতেই আক্রমণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। শুরু থেকেই তিনি বিরোধী জোটকে নিশানা করেন। ২০১৮ সালের অনাস্থা প্রস্তাবের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, সেবার অনাস্থার পর আমরা আরও বেশি আসন পেয়ে ক্ষমতায় এসেছিলাম। ফলে বুঝতে হবে অনাস্থা প্রস্তাব আমাদের পক্ষে মঙ্গলকর। আর এবারেও পরের বছর ২০২৪ সালে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আমরাই ক্ষমতায় ফিরব।
সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলি এ পর্যন্ত যতগুলি অভিযোগ তুলেছিল, তার এক এক করে খণ্ডন করলেও দীর্ঘ বক্তৃতার অনেকটা সময় কেটে গেলেও মণিপুর প্রসঙ্গ উত্থাপন করেননি মোদি। বিরোধী বেঞ্চ থেকে তখন মণিপুর, মণিপুর ধ্বনি উঠতে থাকে। অধিকাংশ সময়ই বিরোধীদের নিয়ে ঠাট্টা করার মেজাজে তিনি বলেন, ওদের একটাই স্লোগান একটাই কর্মসূচি মোদি তেরি কবর খোড়েগি। এদের দেশের সামর্থ্যের উপর ভরসা নেই। সভায় বিরোধীদের কাজ কী, সরকারের সমালোচনা করা, পরামর্শ দেওয়া।
মূল ভাষণের অধিকাংশটাই কংগ্রেসকে হাড়িকাঠে তোলেন প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেসের শাসনে গরিব আরও গরিব হয়েছে। কংগ্রেসের শাসনকালে দেশের অর্থব্যবস্থা দশের নীচে থাকত। আর এখন চার-পাঁচে রয়েছি আমরা। দেশের মানুষের বিশ্বাস আছে ২০২৮ সালে আপনারা যখন আবার অনাস্থা নিয়ে আসবেন, তখন দেশ বিশ্ব অর্থনীতির তিন নম্বর স্থানে থাকবে, এটাই বিশ্বাস করে দেশের মানুষ।
বিরোধীদের একাংশ প্রমাণ করে দিয়েছে, দেশের থেকে ওদের কাছে বড় দল। দেশের মানুষের খিদে, বেকারি ওদের কাছে তুচ্ছ। দল বড়। আপনারা একজোট হয়েছেন কট্টর দুর্নীতিগ্রস্ত জোট হিসেবে। বিরোধীরা ফিল্ডিং সাজিয়েছেন, কিন্তু বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারি ওদের দিক থেকেই আসছে। আপনারা যদি অনাস্থাই আনছেন, তাহলে প্রস্তুতি নিয়ে আসছেন না কেন।
বিরোধীদের লোকদেখানো খুব শখ আছে। কিন্তু আপনারা খেয়াল রাখবেন দেশও আপনাদের দেখছে। কংগ্রেসকে আক্রমণ করে মোদি বলেন, এবার লোকসভার বিরোধী দলনেতাকেই বলার সুযোগ দেয়নি দেশের সবথেকে বড় দল। অধীর চৌধুরীকে সব শেষে বলতে দেওয়া নিয়ে তামাশা করেন মোদি। অধীরকে নিয়ে বারবার কংগ্রেস অপমান করে এ প্রসঙ্গ তুলে অধীরবাবুর প্রতি সম্পূর্ণ সমবেদনা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
লোকসভা ভোটের প্রচারের ঢংয়ে মোদি বলেন, আমরা এখন এমন একটা সময়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি, যার সুফল আগামিদিনের ভবিষ্যৎ টের পাবে। আমরা দেশের যুবসমাজকে দুর্নীতিমুক্ত সরকার উপহার দিয়েছি। আমরা বিশ্বের সামনে ভারতের মুখ তুলে ধরেছি। বিশ্ব আজ ভারতকে চিনে গিয়েছে। আর বিরোধীরা অনাস্থা এনে জনগণের বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছে। আজ ভারতের যুবসমাজ এগিয়ে যাচ্ছে। এই বলে তিনি তাঁর সরকারের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে বলেন, এটাই বিরোধীরা সহ্য করতে পারছে না।