ভারত এবং চিন যে তাঁদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং বন্ধু-রাষ্ট্র সেকথা আরও একবার স্পষ্ট ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ চাল ভ্লাদিমির পুতিনের। শুক্রবার কাজাখস্তানে সাংবাদিক বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্টের এহেন বক্তব্যের দিন কয়েক আগেই রাষ্ট্রপুঞ্জে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল গণভোটের নামে আগ্রাসী আক্রমণে ছিনিয়ে নেওয়ার মত পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কড়া নিন্দা প্রস্তাব নেওয়া হয়। ভারত অবশ্য সে প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটিতে বিরত থাকে। বুধবারই আন্তর্জাতিক মঞ্চে রুশ বিরোধী এহেন প্রস্তাব অনুমোদনের পরে শুক্রবার পুতিনের মন্তব্য, ভারত এবং চিন বরাবরই শান্তিপূর্ণ আলোচনার পথে ইউক্রেন সমস্যা মেটানোর পক্ষে প্রস্তাব দিয়েছে।
মাস কয়েক আগে সমরখন্দে সাংহাই সম্মেলন চলাকালীন পুতিনের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বসেন নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী ওই বৈঠকে গণতন্ত্র, আলোচনা, দৌত্যের পথে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের পরিস্থিতির অবসান ঘটানো এবং বৈরিতা মিটিয়ে নেওয়ার পক্ষে মতামত দেন। একইসঙ্গে তিনি আলোচনায় পুতিনকে জানিয়ে দেন, আজকের পরিস্থিতি যুদ্ধের পক্ষে উপযুক্ত সময় নয়। মোদি যে ওই কথা ফোনে আলোচনায় রুশ প্রেসিডেন্টকে আগেও জানিয়েছেন সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি ওই বৈঠকে আরও জানান, বিশ্বের অধিকাংশ দেশ আলোচনার পথে এই ধরণের বৈরিতা মেটানোর মত পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে আছে।
সাংহাই সম্মেলনে ভারত ছাড়াও চিনের প্রেসিডেন্ট ঝাই জিংপিংয়ের সঙ্গে বৈছঠকে বসেন পুতিন।অবশ্য সেই বৈঠকের আগে বা পরেও ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন নিয়ে কথনই আমেরিকা বা অন্য পাশ্চাত্য দেশগুলির মত মস্কোর বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক সমালোচনার পথে হাঁটেনি বেজিং। হংকংয়ের একটি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চিনের অবস্থানের প্রশংসা করে পুতিন জানিয়েছিলেন, তিনি বরাবরই ইউক্রেনের সমস্যা নিয়ে তাঁর বেজিংয়ের বন্ধুদের সতর্ক ও ভারসাম্যতা বজায় রেখে চলার অবস্থানের প্রশংসা করে এসেছেন।
যদিও রুশ রাষ্ট্রপ্রধানের রণহুঙ্কারের প্রবনতা কিন্তু কখনই কমেনি। সেপ্টেম্বরেই এক টেলিভিশন বার্তায় পুতিন জানিয়ে দিয়েছিলেন, নিজের দেশকে বাঁচাতে রাশিয়া তাঁর হাতে থাকা সমস্ত রকম অস্ত্রই প্রয়োগ করতে বাধ্য হবে। একইসঙ্গে পশ্চিমী দেশগুলিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, এই কথা যে কোনও অর্থহীন বক্তব্য নয় তা যথাসময়ে বোঝা যাবে।