অর্থনৈতিক বিকাশের গতি মন্থর হয়ে পড়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশেরই। ভারতেও যে তার প্রভাব পড়েনি এমন নয়। তবু অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারত অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে, বলছেন ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড (আইএমএফ)-এর এক শীর্ষ আধিকারিক। সংস্থাটির এশিয়া-প্যাসিফিক বিভাগের ডিরেক্টর কৃষ্ণা শ্রীনিবাসন জানান, বিশ্ব অর্থনীতির এক তৃতীয়াংশ যে দেশগুলোর উপর নির্ভরশীল তারা এই বছর অথবা পরের বছর মন্দার গ্রাসে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি ব্যাপক এবং এটাই সবথেকে বড় ঘটনা।
আরও পড়ুন: Sundarbans: জঙ্গল থেকে বাঘ বেরিয়ে হামলা বিট অফিসে
শ্রীনিবাসন আরও বলেন, প্রায় সব দেশেরই অগ্রগতি মন্থর হয়ে পড়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ভারত ভাল করছে এবং এই অঞ্চলে (এশিয়া-প্যাসিফিক) অন্যদের তুলনায় অনেকটা উজ্জ্বল।
মঙ্গলবার আইএমএফ-এর ওয়র্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক রিপোর্টে জানানো হয়, ২০২১ সালে যেখানে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ছিল ৮.৭ শতাংশ, সেখানে ২০২২ সালে তা নেমে দাঁড়িয়েছে ৬.৮ শতাংশে। ২০২৩ সালেও সমস্যার কোনও সুরাহা দেখছেন না বিশেষজ্ঞেরা। কারণ বৃদ্ধির হার আরও নেমে ৬.১ শতাংশ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০২৩ সালে এক বিশ্ব অর্থনীতির তৃতীয়াংশের সঙ্কুচিত হয়ে যাবে এবং সবথেকে বড় তিনটি অর্থনীতি— আমেরিকা, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং চীন থমকেই থাকবে। আইএমএফ-এর ইকোনমিক কাউন্সেলর এবং ডিরেক্টর অফ রিসার্চ পিয়ের-অলিভিয়ের গুরিঞ্চাস বলছেন, অল্প কথায় বলা যায়, সবথেকে খারাপ সময়টা এখনও আসেনি। বহু মানুষের কাছেই ২০২৩ সালটিকে মন্দার বছর বলে মনে হবে।
এই পরিস্থিতির পরেও কিছু অন্তর্নিহিত সমস্যা রয়েছে। এক, মুদ্রাস্ফীতির মোকাবিলা করতে এশীয় অর্থনীতি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলো কাটছাঁট করছে ফলে আর্থিক পরিস্থিতিতেও কাটছাঁট হবে। দুই, ইউক্রেনের যুদ্ধ যা বিশ্বজুড়ে খাদ্য ও অন্যান্য সামগ্রীর মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। তৃতীয়, চীন। চীনের বৃদ্ধি ক্রমশ মন্থর হয়ে পড়ছে। এই সমস্ত ফ্যাক্টর মিলে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর আর্থিক গতি রোধ করছে যার অংশ ভারতও।
বৈদেশিক চাহিদা কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে দেশে, সেই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে চলেছে। তবে গুরিঞ্চাস বলছেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আর্থিক নীতি আঁটোসাঁটো করেছে যা করা দরকার ছিল। ভারত সরকারও মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় মন দিয়েছে, দরিদ্র এবং সমস্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা যাদের বেশি তাদের প্রতি নজর দিয়েছে।