খাতড়া: আদিবাসী (Tribal) স্বীকৃতির দাবিতে এর আগে কুড়মিরা এ রাজ্যে দুবার রেল রোকোর ডাক দিয়েছিল। দুবারই কুড়মিদের আন্দোলনের জেরে দিনের পর দিন বিপর্যস্ত হয়েছিল রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের রেল পরিষেবা। দিনের পর দিন নাকাল হতে হয়েছিল হাজার হাজার রেল (Rail) যাত্রীকে। ফের একই দাবিতে পুজোর মুখে রেল রোকোর ডাক দিল কুড়মি সমাজ। রবিবার বিকেলে বাঁকুড়ার (Bankura) খাতড়ায় (Khatra) কুড়মিদের যুব সংগঠনের রাজ্য সম্মেলন থেকে আরও জোরদার ভাবে ২০ সেপ্টেম্বর রেল রোকোর ডাক দেন কুড়মি নেতা অজিত প্রসাদ মাহাতো। কুড়মিদের (Kurmi) তরফে জানানো হয়েছে দাবিপূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকাল এই কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন তাঁরা।
কুড়মিদের আদিবাসী হিসাবে স্বীকৃতির প্রক্রিয়া হিসাবে কেন্দ্রের কাছে সিআরআই রিপোর্টের কমেন্ট ও জাস্টিফিকেশন পাঠানোর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে আসছে এ রাজ্যের কুড়মিরা। কুড়মিদের অভিযোগ রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছে কুড়মিদের আদিবাসী হিসাবে স্বীকৃতি দানের প্রস্তাব পাঠালেও ২০১৭ সালে কেন্দ্রের তরফে রাজ্যের কাছে সিআরআই রিপোর্টের যে কমেন্ট ও জাস্টিফিকেশন চেয়ে পাঠানো হয় তা রাজ্য সরকার পাঠায়নি। কুড়মিদের দাবি, এই পরিস্থিতিতে সাঁওতালরা বিরোধী আন্দোলন শুরু করায় এ রাজ্যের সরকার এখন সাঁওতাল না কুড়মি, কাদের হাতে রাখবে তা নিয়ে দোলাচলে রয়েছে। এই অবস্থায় রাজ্য সরকার বারেবারে কুড়মিদের আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্য সরকারের এই ভূমিকায় ক্ষুব্ধ এ রাজ্যের কুড়মি সমাজ ফের একবার পুজোর মুখে রেল টেকার ডাক দিয়েছে।
আরও পড়ুন: আবহাওয়ার বড়সড় রদবদল, প্রবল বর্ষণে ভাসতে পারে দক্ষিণবঙ্গ
কুড়মি সমাজের তরফে জানানো হয়েছে এ রাজ্যের পুরুলিয়া জেলার কুশটাঁড় ও ঝাড়গ্রাম জেলার খেমাশুলিতে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকাল এই আন্দোলন চলবে। দুটি স্টেশনে সব মিলিয়ে কুড়মি সম্প্রদায়ের ২ লক্ষ মানুষ জমায়েত করবেন বলেও জানিয়েছে কুড়মি সমাজের নেতৃত্ব। তবে শুধু এবার এ রাজ্যেই নয় পাশাপাশি ঝাড়খন্ড ও ওড়িশা রাজ্যে বসবাসকারী কুড়মিরাও আদিবাসী স্বীকৃতির দাবীতে রেল টেকা আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছে কুড়মি নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, এ রাজ্যে দুটি স্টেশনে রেল টেকার পাশাপাশি ঝাড়খন্ডের পাঁচটি স্টেশন ও ওড়িশার তিনটি স্টেশনেও একই দিন থেকে রেল টেকা আন্দোলন শুরু করবেন সেখানে বসবাসকারী কুড়মিরা। শেষ পর্যন্ত ঘোষিত এই আন্দোলনে কুড়মিরা নামলে পুজোর মুখে এ রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের পাশাপাশি পূর্ব ভারতের একটা বড় অংশে রেল পরিষেবা যে বিপর্যস্ত হবে তা বলার অপেক্ষা থাকে না।