বাঁকুড়া: ‘‘সংসারটা ভেঙে দিতে চেয়েছিল চন্দনা ৷ চৌদ্দটা বছর আমরা একসঙ্গে কাটিয়েছি ৷ জীবনটা ছারখার করে দিল ৷’’— কথা গুলো নাগাড়ে বলে চললেন রুম্পা কুন্ডু ৷ মাস খানেক আগেও এই নামটার সঙ্গে পরিচিতি ছিল না কারও ৷ যে দিন সকালে বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরির এক কপাল ভরা সিঁদুর ছবি সঙ্গে তাঁর স্বামী কৃষ্ণর ছবিটা প্রকাশ্যে আসে সেদিন থেকেই তিনি সংবাদ শিরোনামে ৷
রুম্পাকে ফোন করতেই বিধায়ক চন্দনা সম্পর্কে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন ৷ কলকাতা টিভির ডিজিটাল টিমকে জানালেন, এই কদিনে কিভাবে সুখের জীবনটা পাল্টে গিয়েছে ৷ আজকাল আর তাঁর দিকে তাকায় না কৃষ্ণ ৷ যে রুম্পাকে ছাড়া কৃষ্ণ সকালে চোখ খুলতেন না, সেই কৃষ্ণর মুখে এখন কেবলই চন্দনার কথা ৷
আরও পড়ুন- ৫৩ বছর পরে মুক্তি পাচ্ছে কেনেডের হত্যাকারী
চন্দনা বাউরির সঙ্গে রুম্পার স্বামী কৃষ্ণ কুণ্ডু৷
পৌরাণিক গল্পে কৃষ্ণকে না পেয়ে রাধা অন্তরে ব্যথা অনুভব করেছিলেন ৷ কার্যত, শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিলেন ৷ আর বাঁকুড়ার অজ গ্রামের কৃষ্ণ যেন চন্দনাকে না পেয়ে চৈতন্য হারিয়েছেন ৷ রুম্পার কথায়, ‘‘ঘুমোর ঘোরেও চন্দনা চন্দনা করে ডেকে যায় কৃষ্ণ ৷’’…কয়েক মিনিটর নীরবতার পর অঝোরে কেঁদে উঠলেন রুম্পা ৷
আরও পড়ুন- ইডি একটা কাগজ পাঠালে আমি বস্তা ভরে কাগজ পাঠাব, হুঁশিয়ারি মমতার
চন্দনা-কৃষ্ণর খবর প্রকাশ্যে আসার পর মুখ ফিরিয়েছে গ্রামের মানুষ ৷ কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সেভাবে দেখা যায়নি৷ নিজেই উদ্যোগ নিয়ে কৃষ্ণকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন রুম্পা ৷ সেখান থেকে ফেরার পর কৃষ্ণকে সারাক্ষণ নিজের কাছেই রাখার চেষ্টা করেছেন ৷ কিন্তু সফল হননি৷ সুযোগ পেলেই ঘর থেকে বেরিয়ে যান কৃষ্ণ ৷ খাওয়া দাওয়া নেই বললেই চলে ৷ সারাদিন চন্দনার নাম আর মদের বোতল ৷ এটাই নাকি কৃষ্ণর সারাদিনের সঙ্গী– চোখ মুছতে মুছতে বলে চললেন রুম্পা ৷
চোখে মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ স্পষ্ট ৷ কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না ৷ অদৌ কি কৃষ্ণকে আগের মতো কাছে পাবেন? আলোচনা করার লোক টুকুও নেই ৷ দিশেহারা রুম্পা অবচেতন মনে বলে চললেন চন্দনাকে ছাড়ব না !