কলকাতা: কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর কারাদণ্ডের উপর সু্প্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দেওয়ায় খুশি তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার মমতা টুইট করে বলেন, রাহুলের লোকসভার সদস্যপদ ফিরে পাওয়া সংক্রান্ত রায়ে আমি খুব খুশি। এই ঘটনা ইন্ডিয়া জোটকে আরও শক্তিশালী করবে। এর ফলে জোট আরও ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাতৃভূমির জন্য লড়াই করবে। সেই লড়াইয়ে জয়ীও হবে জোট। তিনি একে বিচার ব্যবস্থার জয় বলেও ব্যাখ্যা করেন।
এদিন সুপ্রিম কোর্ট রাহুলের দুই বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে। ২০১৯ সালে কর্নাটকে কংগ্রেসের এক সভায় রাহুল গান্ধী মন্তব্য করেন, দেশের সব চোরেদের পদবি কেন মোদি হয়। এর বিরুদ্ধে গুজরাতের এক বিজেপি বিধায়ক সুরাত নিম্ন আদালতে মামলা করেন। তাঁর অভিযোগ, ওই মন্তব্য করে কংগ্রেস সভাপতি (সেই সময় রাহুল দলের সভাপতি ছিলেন) দেশের মোদি সম্প্রদায়কে অপমান করেছেন। নিম্ন আদালত এই মন্তব্য করার জন্য রাহুলকে দুই বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। পরের দিনই লোকসভার সচিবালয় রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের বিজ্ঞপ্তি জারি করে। তার এক মাসের মধ্যেই রাহুলকে দিল্লির সরকারি বাংলো খালি করে দিতে হয়।
কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই বিজেপির নির্দেশে এসব চলছে। নিম্ন আদালতের নির্দেশের বিরুদ্ধে রাহুল গুজরাতের নগর দায়রা আদালতে মামলা করেন। সেই আদালত নিম্ন আদালতের নির্দেশই বহাল রাখে। পরে রাহুল যান গুজরাত হাইকোর্টে। তারাও রাহুলের আবেদন ফিরিয়ে দেয়। শেষে রাহুল গান্ধী সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। শুক্রবার শীর্ষ আদালত সুরাত নিম্ন আদালতের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেয়। এর ফলে বিজেপি বিরোধীদের নয়া জোট ইন্ডিয়ার শরিকরা খুব খুশি।
আরও পড়ুন: স্বস্তি শুভেন্দুর, রক্ষাকবচ বহাল সুপ্রিম কোর্টে
I am happy with the news about the MP-ship of @RahulGandhi This will further strengthen the resolve of the INDIA alliance to unitedly fight for our motherland and win. A victory of the judiciary!
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) August 4, 2023
এর আগে ইন্ডিয়ার দুটি বৈঠক হয় পাটনা এবং বেঙ্গালুরুতে। দুটি বৈঠকেই কংগ্রেস নেতা রাহুল এবং তৃণমূল নেত্রী মমতা উপস্থিত ছিলেন। ইন্ডিয়া জোট গঠনের আগে পর্যন্ত কংগ্রেস নেতা রাহুল সম্পর্কে মমতার প্রচণ্ড অ্যালার্জি ছিল। মমতার অভিযোগ ছিল, কংগ্রেস বিজেপি বিরোধিতায় আন্তরিক নয়। বরং তারা বিজেপির হাত শক্ত করছে। গোয়া, ত্রিপুরা, মেঘালয়ে কংগ্রেসের ভোট কেটে বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে তৃণমূল ভোটের আসরে নেমেছে বলে খোদ রাহুল অভিযোগ তুলেছিলেন। তৃণমূলের এমনও দাবি ছিল, বিজেপি বিরোধিতার প্রশ্নে কংগ্রেসের দাদাগিরি তারা মানবে না। দুই দলই একে অপরের বিরুদ্ধে কড়া কথার প্রতিযোগিতা চালিয়ে গিয়েছে।
তবে ইন্ডিয়া জোট গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর কংগ্রেস এবং তৃণমূল অনেকটাই কাছাকাছি এসেছে। বেঙ্গালুরুর বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা রাহুলকে আমার প্রিয় বলে উল্লেখ করেন। এমনকী ইন্ডিয়া জোটের নামকরণও করেন রাহুল এবং মমতা। এদিন সুপ্রিম কোর্ট রাহুলের সাজার উপর স্থগিতাদেশ দেওয়ার পর মমতার উচ্ছ্বাসে ফের স্পষ্ট হল, দুই দল আরও কাছাকাছি আসছে।