দেশের বিচারবিভাগের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকল মঙ্গলবার অর্থাৎ ২৭ সেপ্টেম্বর দিনটি। দেশের শীর্ষ আদালতের তিনটি সংবিধান বেঞ্চের মধ্যে এদিন অনলাইনে তিনটি বেঞ্চের শুনানি দেখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।
প্রথম দিন আর্থিক ভাবে অনগ্রসর শ্রেণির সংরক্ষণ সংক্রান্ত মামলা, শিব সেনার ভাঙন সংক্রান্ত মামলা এবং ‘ইন্ডিয়া বারে’র পরীক্ষা সংক্রান্ত মামলাগুলি লাইভ স্ট্রিমিং করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, আপাতত সুপ্রিম কোর্ট থেকে শুরু হলেও বিষয়টি সফলতা পেলে পরবর্তীকালে বিভিন্ন রাজ্যের উচ্চ আদালতের শুনানিও লাইভ স্ট্রিমিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।
২৭ সেপ্টেম্বর থেকে যে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের সমস্ত মামলার শুনানি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে সে বিষয়টি প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের নেতৃত্বে ইতিমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। সম্প্রতি শীর্ষ আদালতের বিচারপতিদের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে একইসঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, পরবর্তীকালে সুপ্রিম কোর্টের সমস্ত মামলার শুনানি সরাসরি সম্প্রচার করার ব্যবস্থাও হতে পারে।
অবশ্য বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই আলোচনা চলছিল। ২০১৮ সালে প্রথম আদালতের শুনানি সরাসরি সম্প্রচারের আবেদন জানানো হয়েছিল শীর্ষ আদালতের কাছে। আর সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে তখনই সংবিধানের নির্দিষ্ট ধারার ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের শুনানি সরাসরি সম্প্রচারের পক্ষে রায় দেওয়া হয়।
সম্প্রতি বিচারপতিদের বৈঠকে এই বিষয়ে ফের আলোচনা হয়। সেখানে ‘লাইভস্ট্রিমিং’ অর্থাৎ সরাসরি সম্প্রচারের পক্ষে মত দিয়েছেন অধিকাংশ বিচারপতি। তবে আপাতত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে কেবলমাত্র সংবিধান সম্পর্কিত শুনানিগুলিই সরাসরি সম্প্রচার হবে। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এই সরাসরি সম্প্রচার দেখা যাবে। এর ফলে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা জম্মু-কাশ্মীরের উপর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের মত সংবিধান সম্পর্কিত মামলার শুনানি সরাসরি দেখতে পাওয়ার সুযোগ পাবেন সাধারণ মানুষ।
গত সপ্তাহে বিশিষ্ট আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে লেখা একটি চিঠিতে ২০১৮ সালের ওই আবেদনের ভিত্তিতে নেওয়া সিদ্ধান্ত কার্ষকরী করার আর্জি জানান। মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের সমস্ত বিচারপতিরা একযোগে সিদ্ধান্ত নেন যে আপাতত সংবিধান বেঞ্চের সমস্ত মামলা সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে।