কলকাতা: রবিবার রাতে মেঘ গুড়গুড় শব্দ শুনে ঘুমাতে গিয়েছিল বাঙালি৷ সোমবার সকালে ঘুম ভাঙতেই জলের তলায় কলকাতা (Kolkata)৷ রাতেই মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে শহরে৷ এর জেরে উত্তর থেকে দক্ষিণ- শহরের নীচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে৷ হাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, কলকাতার মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে ধাপাতে (Dhapa)৷ সেখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১২৭ মিলিমিটার৷ তার পরেই আছে উল্টোডাঙা, কালীঘাট, তোপসিয়া, বালিগঞ্জ এবং মোমিনপুর৷ ওই সব জায়গাতেই ১০০ মিমি উপর বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর৷
একদিকে অক্ষরেখা, অন্যদিকে ঘূর্ণাবর্ত৷ এই জোড়া ফলায় রবিবার গভীর রাত থেকে শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি৷ তবে ভোর ৪টে থেকে ৫টার মধ্যে ঢেলে বৃষ্টি হয় শহরে৷ হাওয়া অফিসের রেকর্ডই বলছে, ওই এক ঘণ্টায় ধাপাতে ৯২ মিমি, উল্টোডাঙায় ৮০ মিমি, কালীঘাটে ৭৫ মিমি, তোপসিয়ায় ৭৩ মিমি এবং বালিগঞ্জে ৬৬ মিমি বৃষ্টি হয়৷ ওই একঘণ্টার বৃষ্টিতেই শহর এখন জলের তলায়৷ কলকাতা যেন হয়ে উঠেছে ভেনিস৷
আরও পড়ুন: সারা রাত ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি, জলের তলায় কলকাতা
একনজরে দেখে নিন কোথায় কত বৃষ্টি হয়েছে–
মানিকতলা ৮১ মিমি, বেলগাছিয়া ৮৩ মিমি, ধাপা ১২৭ মিমি, তোপসিয়া ১০৩ মিমি, উল্টোডাঙা ১০৯ মিমি, ঠনঠনিয়া ৮১ মিমি, মোমিনপুর ১০০ মিমি, চেতলা লক ৯৩ মিমি, যোধপুর পার্ক ৯৫ মিমি, কালীঘাট ১০৭ মিমি, দত্তবাগান ৭৭ মিমি, জিঞ্জিরা বাজার ৬৬ মিমি, বেহালা ফ্লাইং ক্লাব ৮০ মিমি৷ এত পরিমাণ বৃষ্টি হলে শহর যে ডুববে তা আর নতুন কী! তবে জল যাতে দ্রুত নামানো যায় সেই চেষ্টা করছে কলকাতা, দমদম এবং বিধাননগর পুরসভা৷
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় রাজ্যজুড়ে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে৷ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই বৃষ্টি হবে৷ তবে বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে৷ অন্যদিতে উত্তরবঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে৷ আজ সোমবার কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বর্ধমানে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে৷ বৃষ্টিপাতের জেরে শহরের তাপমাত্রা অনেকটাই কমে গিয়েছে৷ কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ যা স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি কম। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিক৷
আরও পড়ুন: কেজরির সাহায্যে দিল্লিতে গড়ে উঠছে বাংলা অ্যাকাডেমি
নিম্নচাপ ও মৌসুমী অক্ষরেখার সাঁড়াশি আক্রমণের জেরেই এই বৃষ্টিপাত হবে। এই মুহূর্তে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত হয়েছে। এই ঘূর্ণাবর্ত ওড়িশা উপকূল ও পশ্চিমবঙ্গে উপকূল ও বাংলাদেশ উপকূলের কাছাকাছি রয়েছে। সেই সঙ্গেই ঝাড়গ্রাম থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে মৌসুমী অক্ষরেখা। এর প্রভাবে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় রাজ্যজুড়ে বৃষ্টিপাত হবে।