ইসলামাবাদ: পাকিস্তানে (Pakistan) সঙ্গীন অবস্থা হার্টের রোগীদের (Heart Patients)। হার্টের রোগের চিকিৎসায় (Heart Disease Treatment) ব্যবহৃত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ হিসেবে পরিচিত হেপারিন ইঞ্জেকশন (Heparin Injection) পাওয়া যাচ্ছে না। যাও বা আছে, তা চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, সেখানকার হাসপাতাল (Hospital), মেডিক্যাল শপ (Medical Shop) এই ওষুধ নেই বললেই চলে। হৃদরোগীদের জীবনদায়ী ওষুধ হেপারিন ইঞ্জেকশন এখন প্রায় বিলুপ্তপ্রায় (Extinct) সেদেশে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা যে খবর পাঠিয়েছে, তাতেও বলা হয়েছে, হার্টের রোগীদের জন্য ভীষণ দরকারি এই ওষুধ রক্ত পাতলা করার জন্য অর্থাৎ ব্লাড থিনার (Blood Thinner) হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পাকিস্তানের বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালেও (Government of Private Hospital) এই ইঞ্জেকশনের ঘাটতি রয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে, পাকিস্তানে সাধারণ বাজারে হেপারিন ইঞ্জেকশনের দাম ৬০০ টাকা। এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে কালোবাজারে ৩০০০ টাকায় বিকোচ্ছে এই ইঞ্জেকশনের। চড়া দাম হলেও, জীবনদায়ী ওষুধ (Live Saving Medicine) বলে অনেকেই তা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। কিন্তু যাঁদের সামর্থ নেই তাঁরা ভীষণ সমস্যায় পড়েছেন। সেদেশের সরকারি হাসপাতালগুলির বক্তব্য, হঠাৎ করে সেদেশে হেপারিন ইঞ্জেকশনের যে ঘাটতি (Shortage) তৈরি হয়েছে, তা পুরোপুরি ভুয়ো।
আরও পড়ুন: Amit Shah | NCB | মাদক আসক্তদের গ্রেফতার না করে, ব্যবসায়ীদের ধরুন, এনসিবিকে সতর্কবার্তা শাহের
পাকিস্তানে গত বছর ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। তারপর থেকে সেদেশে অর্থসঙ্কট (Financial Crisis) শুরু হয়েছে। আর এই অর্থনৈতিক সঙ্কটের (Economic Crisis) জের পড়েছে পাকিস্তানের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় (Pakistan’s Health System)। রোগীরা প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র পাচ্ছেন না। অর্থসঙ্কটের জেরে পাকিস্তানে বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ারে (Forex Reserve) টান পড়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ার প্রায় নিঃশেষ বলা চলে। এই অবস্থায় পাকিস্তানে বিদেশ থেকে জিনিসপত্র আমদানি (Import) করা বন্ধ রেখেছে। গত ফেব্রুয়ারি থেকেই এই অবস্থা চলছে। ফলে দেশীয় উৎপাদনে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র বা অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যান ইনগ্রেডিয়েন্টস (Active Pharmaceutical Ingredients – API) আমদানি করতে পারছে না পাকিস্তান।
শুধু হেপারিন নয়, অ্যানেস্থেটিক্স (anaesthetics), ইনসুলিন (Insulin), প্যানাডল (Panadol), ব্রুফেন (Brufen), ডিসপ্রিন (Disprin), ক্যালপল (Calpol), টেগ্রাল (Tegral), নিমেসুলাইড (Nimesulide), হেপামের্জ (Hepamerz), বুস্কোপান (Buscopan) এবং রিভোট্রিল (Rivotril) সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ও জীবনদায়ী ওষুধের ঘাটতি রয়েছে।
দেশে আমদানি বন্ধ, সাধারণ মানুষের হাতে অর্থ নেই, তার উপর রোগীদের ভোগান্তি বাড়ছে, এই অবস্থায় স্থানীয় ওষুধর নির্মাতারা বাধ্য হয়ে উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছেন। ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতির কারণে চিকিৎসকরাও (Doctors) একপ্রকার বাধ্য হয়ে অস্ত্রোপচার (Operation) করতে পারছেন না।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে যে ওষুধ তৈরি হয়, তার ৯৫ শতাংশ কাঁচামালই (Raw Materials) আসে বাইরে থেকে। এর মধ্যে বেশিরভাগ ভারত (India) ও চীন (China) থেকে আমদানি করতে হয়।