মেলবোর্ন: আচ্ছা, আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয়, জীবনে আপনি কী করেছেন? উত্তর দিতে হয়তো বাকি জীবনটাই কেটে যাবে। কিন্তু, আপনার কাছে যদি জানতে চাওয়া হয়, জীবনে আপনি কটা বই পড়েছেন? ভাবতেই আপনার বাকি জীবন পড়ে থাকবে। কিন্তু, এক নবোতিপর বৃদ্ধা তাঁর ১৪ বছর বয়স থেকে ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত কী কী বই পড়েছেন, তার সবকটির নাম ও লেখকের নাম লিখে রেখে দিয়েছেন। তাজ্জব লাগলেও ঘটনাটি সত্যি। সংখ্যাটা জানতে ইচ্ছে করছে না! একটু সবুর করুন।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার এক অধ্যাপক তাঁর ঠাকুমার পড়া বইয়ের এক বিশাল তালিকা প্রকাশ করেছেন টুইটবার্তায়। যেখানে বেন মায়ার্স (Ben Myers) নামে আলফাক্রুসিস ইউনিভার্সিটি কলেজের (Alphacrucis University College) ওই অধ্যাপক জানিয়েছেন, তাঁর ঠাকুমা (Grandmother) কৈশোর থেকে যত বই পড়েছেন, তার নাম লিখে রেখেছেন। টাইপ রাইটারে লেখা সেই সব বইয়ের নাম ও লেখকের নামও টুইটের ছবিতে দিয়েছেন অধ্যাপক। ক্যাপশনে লিখেছেন, আমার ৯৪ বছরের ঠাকুমা তাঁর ১৪ বছর বয়স থেকে পড়া সমস্ত বইয়ের তালিকা সংগ্রহ করে রেখেছেন। বিস্ময় হয় প্রায় শতায়ু এক বৃদ্ধার স্মৃতিশক্তি দেখে।
আরও পড়ুন: OMR Sheet | Ayan Shill | টাকার পর ওএমআর, থরে থরে সাজানো অয়নের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া উত্তরপত্র
তার পরেই এক টুইটে মায়ার্স ঠাকুমার পুরনো দস্তাবেজের আরও কয়েকটি ছবি পোস্ট করেছেন। লিখেছেন, আমার ঠাকুমা প্রথম কৈশোরে বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির (Germany) শরণার্থী শিবিরে কাটিয়েছেন। তারপর তাঁদের অস্ট্রেলিয়ায় (Australia) পাকাপাকিভাবে নিয়ে আসা হয়। এই পাতাগুলিতে লেখা বইয়ের অনেক নামই সেই যুগের।
অধ্যাপক মায়ার্স জানান, ঠাকুমার তালিকায় মোট ১৬৫৮টি বইয়ের নাম লিপিবদ্ধ আছে। অর্থাৎ ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি প্রতি একপক্ষকালে একটি করে বই পড়েছেন। অথচ যে মহিলা যুদ্ধের কারণে স্কুলের গণ্ডি পেরনোরই সুযোগ পাননি।
মায়ার্সের এই টুইটের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ১ লক্ষ ৯৫ হাজার জন ইউজার দেখেছেন এবং ৫৬০০ জন লাইক দিয়েছেন। নেটিজেন দুনিয়ায় তাঁর টুইটকে ঘিরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। কেউ লিখেছেন, এই সংগ্রহ এক সম্পদ। কেউ লিখেছেন, অসামান্য সুন্দর। অন্য আর একজনের মন্তব্য, এর কোনও তুলনাই হয় না। অনন্য কীর্তি, কী প্রতিভা! মহিলার ধৈর্য ও স্মরণশক্তির কোনও তুলনাই হয় না।
এখন কী মনে হচ্ছে, আপনিও বাড়ির আনাচেকানাচে আপনার বাবা-মা কিংবা ঠাকুমা-দিদিমার সংগ্রহশালা খুঁজে দেখবেন কি? ক্ষতি কী, পেলেও পেতে পারেন অমূল্য রতন।