দিনহাটা: ‘কোনও অব্যবস্থাতেই হিংসা বা অশান্তি বরদাস্ত নয়’। কোচবিহারের দিনহাটাতে (Dinhatat in Cooch Behar) গিয়ে কড়া বার্তা দিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (C. V. Ananda Bose Governor of West Bengal)। শনিবার সব সূচি বাতিল করে কোচবিহারের সফরে যান রাজ্যপাল। এদিন সেখানে সাধারণ মানুষজনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। জানিয়ে দিলেন, তিনি সব কিছুর উপর নজর রাখছেন। কোনওরকম অব্যবস্থা ও হিংসার বরদাস্ত করা হবে না। রাজভবনকে (Raj Bhavan) ভ্রাম্যমান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Vote) মনোনয়ন পর্ব শুরু হতেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় রাজনৈতিক হিংসা শুরু হয়। প্রথম দিনই মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে এক কংগ্রেস কর্মী হিংসার বলি হন। হিংসার ঘটনা ঘটেছে মুর্শিদাবাদের ডোমকল, রানিনগর, উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর, চোপড়া সহ বিভিন্ন জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। রাজ্যপাল ক্যানিং এবং ভাঙড়ে ছুটে গিয়েছেন। তিনি বলেন, যেখানে হিংসা হবে আমি সেখানেই যাব। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে বসে রাজ্যপাল হিংসা বন্ধের জন্য কড়া বার্তা দেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের পাহারাদারদের হাতে যেন মৃত্যুঘণ্টা না বাজে। হিংসা পরিবেশ কোনওভাবেই বরদাস্ত নয় সেটা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন।
রাজ্যের যেখানে যেখানে অশান্তির অভিযোগ উঠে এসেছে, সেখানেই তিনি যাচ্ছেন। কোচবিহার থেকেও অশান্তির অভিযোগ উঠতেই পূর্ব নির্ধারিত সূচি বাতিল করে দিনহাটায় এসেছেন তিনি। রাজ্যপাল জানালেন, নিজের চোখে সমস্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে চান। গ্রাউন্ড সিচুয়েশন বুঝতে চান। কোচবিহার হাসপাতালে গিয়েছেন রাজ্যপাল। সেখানে হিংসার আহত হয়ে চিকিৎসাধীন মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। আক্রান্ত পরিবারের লোকজন রাজ্যপালকে কাছে পেয়ে তাঁদের সমস্যার কথা জানান। কোচবিহারের পুঁটিমারিতে পৌঁছে গিয়েছেন রাজ্যপাল। সেখানে সাধারণ মানুষজনের অভাব-অভিযোগের কথা শোনেন তিনি। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত বিজেপি কর্মীর বাড়িতে গিয়েছেন রাজ্যপাল। মৃত বিজেপি কর্মীর বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
শনিবার সকালে কোচবিহার সার্কিট হাউসে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিজেপি বিধায়কদের প্রতিনিধি দল। সেই দলে ছিল, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। তেমনই ছিলেন আক্রান্ত বিজেপি কর্মীও। এদিন বোসের সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেস এবং সিপিএমের নেতারাও। সার্কিট হাউস থেকে বেরিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকও (Nisith Pramanik) জানালেন তাঁরা রাজ্যপালের কথায় আশ্বস্ত হয়েছেন, যে পঞ্চায়েত ভোটে রাজনৈতিক হিংসা বন্ধ হবে। অন্য দিকে, রাজ্যপালের ভূমিকায় রাজনীতি দেখছে শাসকদল তৃণমূল। এর মধ্যে অশান্ত দিনহাটার উদ্দেশে রওনা দেন রাজ্যপাল বোস।