একুশ শতকে এসে এই ধরণের ঘৃণার ভাষণ বা বিদ্বেষমূলক মন্তব্য একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাও আবার এমন একটি দেশে যেখানে ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি হিসাবে গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের সহ নাগরিকদের কাছেও ন্যূনতম বৈজ্ঞানিক সচেতনতা আশা করা যায়, এমনটাই মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চের। মুসলিমদের আক্রমণ করা ও তাদের ভয় দেখানোর প্রসঙ্গে একটি মামলার শুনানি চলছিল শুক্রবার। সেখানেই এই মন্তব্য করেছেন বিচারপতি কে এম জোসেফ ও হৃষিকেশ রায়। সেই সঙ্গে আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিয়ে শীর্ষ আদালত বলেছে, এই ধরনের অভিযোগ পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার মুখে পড়তে হবে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের।
সংবিধান অনুসারে ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে শঙ্কিত শীর্ষ আদালত। দুই বিচারপতির বেঞ্চের তরফে বলা হয়েছে, “এটা ২১ শতক। কিন্তু ধর্মের নামে আমরা কোথায় এসে পৌঁছেছি?” শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, প্রশাসনের কাছে ঘৃণাভাষণ নিয়ে অভিযোগ দায়ের হলে তার ব্যবস্থা নিতেই হবে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের। যদি তাঁরা পদক্ষেপ না করেন, তাহলে আধিকারিকদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছে প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির কাছে ঘৃণাভাষণ নিয়ে জবাব তলব করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। আর পরেরদিন দেশের সব স্তরের প্রশাসন তথা কেন্দ্রের শাসক বিজেপির উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিল শীর্ষ আদালত। মুসলিমদের তরফ থেকে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, কেন্দ্র ও রাজ্য প্রশাসনগুলিকে যেন ঘৃণা ভাষণের অভিযোগের সঠিক তদন্ত করতে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। আবেদনকারীদের হয়ে এই মামলা লড়ছিলেন কপিল সিব্বাল। সাম্প্রতিককালে বিজেপি নেতারা কিভাবে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক মন্তব্য করেছেন, তার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। আর তার সওয়াল পর্বে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, পরিস্থিতি সামাল দিতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিক কেন্দ্র। নাহলে আদালত অবমাননার মুখে পড়তে হবে।