নয়াদিল্লি: দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার আগামী বছর আরও কমতে পারে। চলতি বছরের গড় জাতীয় উৎপাদন (GDP) ৭ শতাংশ থেকে কমে সাড়ে ৬ শতাংশ হওয়ার পূর্বাভাস মিলল আর্থিক সমীক্ষায় (Economic Survey)। বাজেট প্রস্তাব পাঠের প্রায় ২৪ ঘণ্টা আগে মঙ্গলবার আর্থিক সমীক্ষা পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। সেখানেই এই তথ্য উঠে এসেছে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক কী রয়েছে আর্থিক সমীক্ষায়।
একনজরে আর্থিক সমীক্ষা
● আর্থিক সমীক্ষা বলছে, জিডিপি বৃদ্ধি সাড়ে ৬ শতাংশ হতে পারে। চলতি বছরের তুলনায় বৃদ্ধির হার কমতে চললেও বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলির তুলনায় ভারতের বৃদ্ধির হার দ্রুতগামী।
আরও পড়ুন: Pfizer : ভ্যাকসিনের বাজার ধরার জন্য ভাইরাসের ইচ্ছাকৃত মিউটেশন, বিতর্কে ফাইজার
● সমীক্ষা বলছে, বিশ্বব্যাঙ্ক, আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক এবং দেশের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া অন্য দেশের বৃদ্ধির হারের তুল্যমূল্য বিচার করে এই অনুমান করেছে। জিডিপির প্রকৃত বৃদ্ধি ৬-৬.৮ শতাংশের মধ্যে থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে সমীক্ষা। রিপোর্ট বলছে, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দুর্দশার কারণে বৃদ্ধির হারে পতন ঘটতে পারে।
● কোভিডের কারণে যে অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল, তার থেকে সামান্য হলেও ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে।
● চীনে নতুন করে কোভিড বেড়ে যাওয়ায় ভারত সহ বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলির সঙ্গে সরবরাহ শৃঙ্খল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার ফলে স্বাস্থ্য ও আর্থিক ক্ষেত্রে পতন অনিবার্য।
● আগামী অর্থবর্ষে মন্দাভাবের লক্ষণ থাকলেও দেশে আরও অর্থ বাজারে প্রবেশ করতে পারে। ভারতের মুদ্রাস্ফীতির হার ৬ শতাংশের নীচে থাকায় এটার সম্ভাবনার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে সমীক্ষায়।
● বিশ্বব্যাপী মন্দার আশঙ্কায় বৃহৎ পুঁজির শিল্পগুলিতে ছাঁটাইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
● এই অবস্থায় অতিমারির পরেও ভারত দ্রুত উন্নতি করেছে অর্থক্ষেত্রে। সরকারের হিসেব অনুযায়ী, আর্থিক বৃদ্ধির সঙ্গে দেশীয় বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি এবং মূলধনী বিনিয়োগ সম্পর্কযুক্ত। মুদ্রাস্ফীতি সর্বোচ্চ হয়েছিল ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে ৭.৮ শতাংশে, বলছে সমীক্ষা।
● ঝুঁকি এখনও ফুরোয়নি। বিশেষত বিশ্ব বাজারে অর্থনীতির পতনের কারণ ভারত এড়াতে পারে না। মুদ্রাস্ফীতির কারণে বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশের রাষ্ট্রীয় ব্যাঙ্ক আর্থিক নীতিকে কষে চেপে ধরে রেখেছে। সেই পদক্ষেপের ফল এখন পাওয়া যাচ্ছে। তুলনায় ধনী দেশগুলিতেও অর্থনৈতিক গতি নিম্নগামী।
প্রসঙ্গত, এদিন সংসদে বাজেট অধিবেশনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বলেন, ভারতের বাজেটের দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা বিশ্ব। মঙ্গলবার বাজেট অধিবেশন শুরুর প্রাক্কালে সংসদকক্ষে ঢোকার মুখে একথা বললেন প্রধানমন্ত্রী। দেশ প্রথমে, দেশের মানুষ প্রথমে, এই ভাবনার কথা উল্লেখ করে মোদি বলেন, এই পথেই বাজেট অধিবেশনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমি আশা করি, বিরোধী দলের নেতারা সংসদে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেবেন। এই বাজেট সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের চেষ্টা করবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস নির্মলা সীতারমন তা পূরণের সর্বশেষ চেষ্টা করবেন।