কলকাতা: গত এক বছরে টাকার বিনিময়ে চাকরি দিয়ে অনেকেই গ্রেফতার (Arrested) হয়েছেন। নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রাকত্ন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ একাধিক শিক্ষাকর্তা জেল খাটছেন। এবার টাকা দিয়ে বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়ায় গ্রেফতার হলেন চার প্রাথমিক শিক্ষক। ধৃত চারজনই মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। নিয়োগ দুর্নীতিতে এই প্রথম টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল শিক্ষকদের। সোমবার আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে ওই চারজনকে হাজিরা দিয়ে বলা হয়েছিল। তারপরই বিচারকের নির্দেশে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।
ধৃত চারজন হলেন সৌগত মণ্ডল, জাহিরউদ্দিন শেখ, সায়গল হোসেন ও সিমার হোসেন। আদালত তাঁদের ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। সিবিআই চার্জশিটে ওই শিক্ষকদের সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করেছিল। বিচারক বলেন, এরা সেই লোক যাদের জন্য আজ এত মানুষ ভুগছে।
আরও পড়ুন: নিয়োগের সব রিপোর্টই নিয়ম মেনে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যেত, দাবি পার্থর
এর আগে একাধিকবার দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এবং ইডি’কে আদালতের তোপের মুখে পড়তে হয়। আদালতের প্রশ্ন ছিল, যাঁরা বেআইনিভাবে টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের কতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে? কখনও নিম্ন আদালতে, আবার কখনও হাইকোর্টে এই প্রশ্নে জেরবার হতে হয় ইডি, সিবিআইকে। তাদের আইনজীবীরা স্বীকার করে নেন, এমন শিক্ষকদের চিহ্নিত করতে সময় লাগছে। অনেককে চিহ্নিত করে জিজ্ঞাসাবাদ করা চলছে। গোটা প্রক্রিয়াই সময়সাপেক্ষ। আদালত বলে, অবিলম্বে ওই শিক্ষকদেরও গ্রেফতার করতে হবে।
অবষেশে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়া শিক্ষকদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া শুরু করল। আদালতের বক্তব্য ছিল, টাকা নিয়ে যাঁরা চাকরি দিয়েছেন, তাঁরা যেমন দোষী, ঠিক একইভাবে টাকা দিয়ে চাকরি নেওয়া শিক্ষকরাও সমান দোষী।
এদিনই প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান জেলবন্দি মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা। এই প্রথম নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত কেউ জামিন পেলেন। কদিন আগেই বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ মন্তব্য করেছিলেন, শতরূপাকে এইভাবে আটকে রাখার কোনও মানে হয় না। বিচারপতি ঘোষের বেঞ্চই এদিন শতরূপাকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেন। আবার সোমবারই জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিশেষ সিবিআই আদালতে ফের দাবি করেন, নিয়োগ দুর্নীতিতে তিনি কোনও ভাবেই জড়িত নন। যে কোনও শর্তে জামিন পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে আবেদন জানান।