কলকাতা: পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের নাকের ডগায় ভুয়ো অফিস খুলে বসেছিলেন দেবাঞ্জন দেব৷ অথচ তা জানতেই পারেননি মন্ত্রী৷ কসবার ভুয়ো শিবির থেকে অভিনেত্রী সাংসদ মিমি চক্রবর্তী টিকা নেওয়ার পরই এ নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। প্রশ্ন ওঠে, পুর কর্তৃপক্ষের নজরদারি নিয়ে৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, এর দায় পুলিশ-প্রশাসন এড়াতে পারে না৷ এ নিয়ে এবার মুখ খুললেন মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম৷ তাঁর কথায়, ‘ইনফরমেশন না এলে কী করে জানব কোথায় কী চিটিংবাজি হচ্ছে৷ আমরা তো ভগবান নই৷’
আরও পড়ুন: তুষার-শুভেন্দু ‘বৈঠক’, ফুটেজ প্রকাশ্যে আনার দাবি অভিষেকের
জাল টিকা কাণ্ড নিয়ে এবার প্রশ্নের মুখে ফিরহাদ হাকিম৷ শুক্রবার কলকাতার পুর প্রশাসক ও পরিবহনমন্ত্রীর এক্সক্লুসিভ সাক্ষাতকার নেন কলকাতা টিভির এডিটর কৌস্তুভ রায়৷ ফিরহাদ হাকিমের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘আপনার ওয়ার্ডে পুরসভার অফিস খুলে গত ছ’মাস ধরে চলছিল৷ ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর জানতেই পারলেন না?’ জবাবে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘আমি কোঅর্ডিনেটরকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, এটা কী করে হল? আমার ওয়ার্ডে অফিস খুললে কয়েকদিন বাদে সেই খবর আমার কাছে চলে আসে৷ তিনি আমায় বলেন, দাদা বাইরে কিছু ছিল না৷ ভিতরে কী হচ্ছে তা অনুমতি ছাড়া সেখানে না গিয়ে জানা সম্ভব নয়৷ কোঅর্ডিনেটর বা পুরসভার কোনও আধিকারিক অনুমতি ছাড়া কারও বাড়িতে ঢুকতে পারে না৷ পুলিশ পারে৷’ ফিরহাদ হাকিম মনে করেন স্থানীয় ভাবে নজরদারি আরও মজবুত হওয়া উচিত৷
আরও পড়ুন: দেবাঞ্জনের ‘জাল’ কি রাজভবনেও? প্রশ্ন তৃণমূলের
এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, জাল টিকা কাণ্ডে পুলিশ-প্রশাসন দায় এড়াতে পারে না৷ ফিরহাদ হাকিমের জবাব, ‘পুলিশ ও পুরসভা সতর্ক থাকতে পারে৷ কিন্তু আমরা তো ভগবান নই যে জানব কোথায় কী চিটিংবাজি হচ্ছে, যদি ইনফরমেশন না আসে৷ এক্ষেত্রে জাল ভ্যাকসিনের কোনও খবর ছিল না৷ কিন্তু একজন জাল আইডি নিয়ে ঘুরে বেরাচ্ছে সেই অভিযোগ আসে ১৫ তারিখ৷ তখনই পুরসভার তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয়৷’
আরও পড়ুন: উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ, ৭ দিনে প্রার্থীতালিকা প্রকাশের নির্দেশ
ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আটকাতে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন? কৌস্তুব রায়ের প্রশ্নের জবাবে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘পুলিশ কমিশনার একটি অর্ডার বের করেছেন৷ থানাভিত্তিক আইএএস ও আইপিএস অফিসারদের তালিকা তৈরি হবে৷ বাতি দেওয়া গাড়ি ব্যবহার করা আধিকারিকরা কোথায় থাকেন, কোন দায়িত্বে রয়েছেন, সিকিউরিটির ব্যবস্থা কী ইত্যাদি খোঁজ খবর নেবে৷’ রাজ্যের মানুষকে আশ্বস্ত করে তিনি জানান, চালাকির দ্বারা কোনও মহৎ কাজ হয় না৷ দেবাঞ্জন তার প্রমাণ৷ প্রতারকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন৷ অন্যান্য ধারার সঙ্গে অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগও জুড়ে দেওয়া হয়েছে৷ যা আগে কখনও দেওয়া হয়নি৷ সারা দেশের মধ্যে প্রথম দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়ে থাকবে৷