কলকাতা: বুধবার ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের বাজেট (Budget 2023) পেশ হয়েছে বিধানসভায় (Assembly)। বাজেট পেশ করেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya)। এদিন বাজেট পেশের পর পরিসংখ্যানে দেখা যায় চলতি বছরে শুধু স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ ক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে ১৮,২৬৪.৬২ কোটি টাকা। বাজেটে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নততর করার জন্য রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্য সরকার সর্বদাই বিশেষ গুরুত্ব দেয়। বিগত ১০ বছরে স্বাস্থ্যের মানদণ্ডের প্রভূত উন্নতি হয়েছে। এমনকি স্বাস্থ্য বিভাগের বাজেট (Budget 2023) খাতে ব্যয়বরাদ্দের যথেষ্ট পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০১০-১১ সালে যা ছিল ৩,৫৮৪ টাকা, ২০২২-২৩ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১৯,৪৭১.৯৪ কোটি টাকা।
এবারের বাজেটে প্রসূতি মৃত্যু এবং শিশুর টিকাকরণ নিয়ে উল্লেখ আছে। ২০১১ সালের ৬৮.১০% প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের তুলনায় ২০২২ সালে ৯৯% প্রসব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান হয়েছে। ২০২২ সালে প্রসূতি মৃত্যুর হারও প্রতি লক্ষে ১০৯-এ নেমে এসেছে যা ২০১১ সালে ১১৭ ছিল। বলা বাহুল্য এই হার জাতীয় প্রসূতি মৃত্যুর হার ১১৩-এর চেয়ে কম। এই সময় রাজ্যের নবজাতক মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ১৯, যেখানে ২০১১ সালে এই হার ছিল ৩২। এক্ষেত্রে জাতীয় হার ২০২১ সালের ৩২-এর তুলনায় রাজ্যের হার অনেক কম। ২০২২ সালের লক্ষমাত্রা অনুজায়ি ৯৯.৬০% শিশুর সম্পূর্ণ টিকাকরণ সম্পন্ন হয়েছে। ২০১১ সালে এই হার ছিল ৬৫%। ‘মাতৃ মা’ পোর্টালের মাধ্যমে ১.২৪৫ কোটি সন্তানসম্ভাব্য দম্পতির স্বাস্থ্য, ৭.৪ লক্ষ গর্ভবতী মায়ের প্রাকপ্রসব স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং ১০.১৮ লক্ষ শিশুর টিকাকরণে নজর রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:Cheteshwar Pujara: সত্যের পথ থেকে সরেনি ছেলে, বলছেন ১০০ টেস্ট খেলতে চলা পুজারার বাবা
বাজেটে আরও বলা হয়েছে, কোভিড ১৯ অতিমারির আবহে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নির্মাণ ও পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়েছিল রাজ্যকে। কোভিড ১৯-এর প্রাদুর্ভাব থেকে এই পর্যন্ত রাজ্য সরকার অতিমারি প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনায় ২,৯৯২ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। রাজ্যের ২৮ টি হাসপাতালে লিকুইড মেডিক্যাল অক্সিজেন প্লান্ট(LMO) কার্যকর করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য সাথী স্কিম, চোখের আলো, স্বাস্থ্য ইঙ্গিত নামে একাধিক কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ২.৪১ কোটি পরিবার স্বাস্থ্য সাথী স্কিমের সুবিধা লাভ করেছে। এর জন্য ব্যয় করা হয়েছে ৬,১৯৯.৯৪ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ৪ জানুয়ারি থেকে চোখের আলো কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এই পর্যন্ত ৪৯.৯৪ লক্ষ মানুষ এই পরিষেবায় চক্ষু পরীক্ষা করিয়েছেন। এবং ৭.৪ লক্ষ মানুষ ছানি অপারেশন করিয়েছেন। রাজ্য সরকারের ‘স্বাস্থ্য ইঙ্গিত’ নামে নতুন টেলিমেডিশিন স্বাস্থ্য পরিষেবাটি ইতিমধ্যেই দারুণ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এবং জাতীয় স্তরে স্কচ আওয়ার্ড পেয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৯৪.৪৮ লক্ষ মানুষ টেলি কনসালটেশনের মাধ্যমে এই সুবিধার আওতায় এসেছে। রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতেও এই টেলিমেডিসিনের সুবিধা পৌঁছে যাচ্ছে।
ন্যায্যমূল্যের ওষুধ নিয়েও বাজেটে (Budget 2023) বলা হয়েছে। রাজ্যে পিপিপি মডেল ফেয়ার প্রাইস শপ চালু আছে। ২০২১ সালে এই ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর থেকে ১১৭ টি ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান ওষুধের সর্বোচ্চ দামের উপর ৪৮% থেকে ৮০% পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে। এছাড়াও মেডিক্যাল কলেজ এবং অন্যান্য হাসপাতালে ফেয়ার প্রাইস ডায়াগোনেস্টিক সেন্টার ও ডায়ালিসিস সেন্টার চালু করা হয়েছে। রাজ্যে বর্তমানে ১৫৬ টি ইউনিট, ১৮ টি এমআরাই, ৪৬টি সিটি স্ক্যান, ৩৩ টি ডিজিটাল এক্সরে, ১৩ টি অডিয়ো ভেস্টিবুলার ক্লিনিক, একটি পেট স্ক্যান এবং ৪৫ টি ডায়ালিসিস ইউনিট চালু আছে। এক্ষেত্রে ১,১৮৬.১৪ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে।