ভোপাল: কিছুতেই থামছে না আফ্রিকান চিতার (Cheetah) মৃত্যু। ফের চিতার মৃত্যু মধ্য প্রদেশের (Madhya Pradesh) কুনো জাতীয় উদ্যানে (Kuno National Park)। এই নিয়ে গত পাঁচ মাসে নবম চিতার মৃত্যু হল। বুধবার কুনো জাতীয় উদ্যানের পার্কের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এদিন সকালে ধত্রি নামে এক মহিলা চিতার মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। মৃত্যুর কারণ এখনও জানা যায়নি। তার জন্য দেহের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। এদিকে পর পর আটটি চিতার মৃত্যুর পর মোদি সরকারের এই প্রকল্প এখন প্রশ্নের মুখে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে, মোদি সরকারের ‘প্রোজেক্ট চিতা’র আওতায় নামিবিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে মোট ২০টি প্রাপ্তবয়স্ক চিতা আনা হয়েছিল। কুনো জাতীয় উদ্যানে তাদের রাখা হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল ভারতে নতুন করে চিতার সংখ্যা বৃদ্ধি করা। কুনো জাতীয় উদ্যানে আফ্রিকা থেকে আসা চিতাগুলি চারটি শাবকের জন্মও দিয়েছিল। তবে, গত কয়েক মাসে একের পর এক চিতার মৃত্যু হয়েছে।তাদের মধ্যে তিন শাবকেরও মৃত্যু হয়েছে। গত মাসেও চারদিনের ব্যবধানে দুতি চিতার মৃত্যু হয়েছিল। ১১ জুলাই মৃত্যু হয়েছিল তেজসের, আর ১৪ জুলাই সুরজ নামে আরও একটি চিতার।
আরও পড়ুন:ডেঙ্গির বিপজ্জনক স্ট্রেনের হদিস দিল্লিতে, জারি সতর্কতা
যদিও চিতাগুলির মৃত্যুর পিছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তেজসের দেহের ময়নাতদন্তের পর জানা যায়, এক মহিলা চিতার সঙ্গে তার তীব্র লড়াই হয়েছিল। সেই লড়াইয়ের মানসিক এবং শারীরিক আঘাত থেকে আর সুস্থ হয়ে উঠতে পারেনি সে। এই লড়াইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ, কুনো জাতীয় উদ্যানের ছাড়ার আগে এবং পরে ঘটা দুর্ঘটনা, শিকার করতে গিয়ে পাওয়া আঘাতের মতো বিভিন্ন কারণে মৃত্যু হয়েছে চিতাগুলির। অন্যান্য প্রাণীর আক্রমণ এবং হিটস্ট্রোককেও চিতাগুলির মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে মনে করেন পশু চিকিৎসকরা।একাংশের চিতা বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্ষাকালে একটানা ভিজে থাকার ফলে চিতাদের ত্বকে সংক্রমণ হচ্ছে। এই সংক্রমণগুলি থেকে সেপ্টিসেমিয়া বা রক্তের গুরুতর সংক্রমণ হচ্ছে চিতাগুলির।
উল্লেখ্য, কুনোর জঙ্গলে চিতার মৃত্যু নিয়ে কয়েকদিন আগেই সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয়। সেই মামলার শুনানির সময় চিতার মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ। সেই সঙ্গে মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়া হয়। কেন্দ্রের আইনজীবী, অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্যা ভাটিকে বিচারপতি গাভাই বলেন, গত সপ্তাহে আরও দুটি চিতার মৃত্যু হয়েছে। কেন এটি একটি মর্যাদার ইস্যু হয়ে উঠছে? কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ করুন। অন্য কোনও অভয়ারণ্যের বদলে কেন আফ্রিকা থেকে আনা চিতাদের এক জায়গায় রাখা হয়েছে, সে প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি গাভাই। যদিও এর আগে আবেদনকারীর আইনজীবী অভিযোগ ছিল যে, চিতা নিয়ে রাজনীতি করছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজস্থানের অভয়ারণ্যে না রেখে, শুধু মাত্র বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের কুনো জঙ্গলে রাখা হয়েছে। যদিও আবেদনকারীর আইনজীবীর অভিযোগ অস্বীকার করে অতিরিক্তি সলিসিটির জেনারেল ঐশ্বর্য ভাটিয়া বলেন, এটা দেশের জন্য একটি মর্যাদাপূর্ণ প্রকল্প। এই ধরনের প্রকল্পে প্রথম বছরে ৫০ শতাংশ মৃত্যু প্রত্যাশিত ছিল বলে জানান।