বেহালা: বেহালার পথ দুর্ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মৃত ছাত্রের বাবা, জানাল পুলিশ। জানা গিয়েছে, পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই ব্যক্তি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। শুক্রবার দুর্ঘটনার পর গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তখন জানা যায়, তাঁরও মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু পরে হাসপাতাল সূত্রে খবর পাওয়া যায়, তিনি জীবিত রয়েছেন। সেখানে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন তিনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। এদিকে বেহালার দুর্ঘটনায় লরির সহ চালককে আটক করেছে কোনা ট্রাফিক গার্ডের পুলিশ। এদিন দুর্ঘটনার পর পালিয়ে যায় লরিটি। পরে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের সাঁতরাগাছি বাবলাতলা থেকে আটক করা হয়। এই ঘটনায় ক্ষোভপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে ফোন করে গোটা বিষয় জানতে চান তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই শুক্রবার সকালে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে ফোন করেন মুখ্যসচিব।
সাতসকালে মর্মান্তিক এক পথ দুর্ঘটনায় স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বেহালার একাংশ। মৃতদেহ রাস্তায় ফেলে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশের একটি গাড়িতে। বেশ কয়েকটি সরকারি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। স্থানীয়দের বিক্ষোভে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে ডায়মন্ড হারবার রোড। বেহালার বড়িশা স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রটি পরীক্ষা দিতে আসছিল। আর সিগন্যাল রেড ছিল। ঠিক সেই সময় লালবাতি জ্বলা সত্ত্বেও একটি লরি বেপরোয়া গতিতে সিগন্যাল ভেঙে বাবা ও ছেলেকে ধাক্কা মারে।
আরও পড়ুন: বেহালায় মাটির লরিতে পিষ্ট বাবা-ছেলে, রণক্ষেত্র এলাকা
স্থানীয়দের অভিযোগ, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ পুরসভার মাটি বোঝাই একটি লরি প্রচণ্ড গতিতে এসে ধাক্কা মারে প্রাথমিকের এক পড়ুয়া এবং তার বাবাকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় একরত্তি ওই বাচ্চাটির। এরপরই ক্ষোভ আছড়ে পড়ে ডায়মন্ড হারবার রোডে। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। স্থানীয় মানুষজন ও বড়িশা স্কুলের অভিভাবকরা ছুটে আসেন ও দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের প্রিজন ভ্যান সহ বেশ কয়েকটি বাইকে ভাঙচুর চালায়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় বিশাল পুলিশ বাহিনী আসে। অভিভাবকরা ক্ষিপ্ত হয়ে গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। অভিভাবক ও পুলিশের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ চলে। পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথমে লাঠিচার্জ ও পরে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। স্থানীয়রাও পুলিশকে লক্ষ্য করে যথেচ্ছ ইটবৃষ্টি করে। দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকে বেহালা চৌরাস্তা মোড়।