কলকাতা: ব়্যাগিং-কাণ্ডে ডেপুটেশন দিতে গিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাধার মুখে পড়ল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। আইসা, এসএফআই এবং ডিএসওর সঙ্গে তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের তুমুল সংঘর্ষ ঘটল ক্যাম্পাসে। ধস্তাধস্তি, দফায় দফায় মারামারি, স্লোগান পাল্টা স্লোগানে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। বাম ছাত্র সংগঠনগুলির অভিযোগ, টিএমসিপির বহিরাগতরা হামলা চালিয়েছে। টিএমসিপির পাল্টা দাবি, এসএফআইয়ে নেতৃত্ব বাম সংগঠনগুলি তৃণমূল সমর্থকদের মারধর করে। এই সংঘর্ষকে ঘিরে সন্ধ্যা পর্যন্ত উত্তেজনা ছিল যাদবপুরে (Jadavpur University)। পরে দুপক্ষই মিছিলও করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে। ধস্তাধস্তির ঘটনায় যাদবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানাল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। ১০ জন বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য।
এদিনও সকাল থেকে উত্তপ্ত ছিল ক্যাম্পাস। ডিএসও বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়কে দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে। এর জন্য তিনি লালবাজারে এবং রাজ্যপালের ডাকা রাজভবনের বৈঠকে যেতে পারেননি। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ধরনায় বসেছিল। সেখান থেকেই টিএমসিপির সমর্থকরা স্মারকলিপি দিতে ক্যাম্পাসে ঢুকতে যান। বাম ছাত্র সংগঠনগুলি তাদের আটকে দেয়। তারপরই দুপক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। টিএমসিপির অভিযোগ, তাদের নেত্রী রাজন্যা হালদারের জামা ছিঁড়ে দেওয়ার দেওয়া হয়েছে। আরও অনেকে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। বচসার জেরে রাজন্যা হালদারের আঘাতও লাগে।সংঘর্ষের ঘটনায় তৃণমূলের এক ছাত্র আহত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। ধস্তাধস্তির মাঝেই জ্ঞান হারান তৃণমূল ছাত্রনেত্রী। তাঁকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
যাদবপুরের ছাত্র মৃত্যু নিয়ে এ এদিনই ক্যাম্পাসে একটি জেনারেল বডি মিটিংয়ের ডাক দেওয়া হয়। অরবিন্দ ভবনের সামনে জড়ো হয় ছাত্রছাত্রীরা। সেখানে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা ডেপুটেশন দিতে আসে। টিএমসিপির সদস্যদের দেখেই স্লোগান তুলতে থাকে বাম ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা। পাল্টা স্লোগান দিতে থাকে টিএমসিপিও। এরপরই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের সমর্থকদের মহিলা সদস্যদের শ্লীলতাহানি অভিযোগ ওঠে। যদিও বাম সংগঠনগুলি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন: রেজিস্ট্রার গেলেও লালবাজারে হাজিরা দিলেন না ডিন
যাদবপুরে মৃত পড়ুয়ার মৃত্যুর পিছনে ব়্যাগিং রয়েছে। যারা এই ঘটনায় যুক্ত তাঁদের সকলের শাস্তি দাবি করে মিছিল করলেন নদিয়ার বগুলা এলাকার কিছু তরুণ-তরুণী। বুধবার দুপুরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বিচার চেয়ে মিছিল করেন তাঁরা। শুধু বগুলা নয়, নদীয়ার একাধিক স্টেশন থেকে যাদবপুর অভিযানে শামিল হন ছাত্রছাত্রীরা। ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে অংশ নেন বেশ কিছু শিক্ষকও।
যাদবপুরকাণ্ডে ধৃতদের ১২ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। ধৃত ছ’জনকে আগামী ২৮ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে থাকতে হবে। বুধবার তাঁদের আলিপুর আদালতে হাজির করানো হলে এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।