কলকাতা: বাংলা-সহ দেশের সব রাজ্যেই দলিতদের উপর উচ্চবর্ণের লোকজন, বিশেষ করে মনুবাদী ব্রাহ্মণরা চরম অত্যাচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী (Manoranjan Byapari)। বৃহস্পতিবার বিধানসভার লবিতে এই দলিত বিধায়ক বলেন, এ রাজ্যেও দলিতরা ভালো নেই। যত দিন যাচ্ছে, ততই শিক্ষিত এবং উচ্চবর্ণের মানুষের অত্যাচার বাড়ছে দলিতদের উপর। তৃণমূল বিধায়ক বলেন, এখন সময় এসেছে দলিতদের প্রতিরোধ গড়ে তোলার। সমস্ত দলিত মানুষকে এক জায়গায় আসতে হবে। না হলে মনুবাদী ব্রাহ্মণরা আমাদের শেষ করে দেবে।
দলিত বলেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে মনোরঞ্জনকে টিকিট দেন। হুগলির বলাগড় থেকে তিনি জয়ী হন। তাঁকে দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমির সভাপতিও করেছেন। বিধানসভা ভোটের পর থেকেই মনোরঞ্জন দলিতদের প্রতি বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব। দলীয় সংগঠনে আবার তাঁর সঙ্গে বিরোধ রয়েছে ব্লক এবং জেলা নেতৃত্বের একটি অংশের। পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট বিলি নিয়ে সেই বিরোধ ফের প্রকাশ্যে আসে। ভোটের আগেই মনোরঞ্জন দলের দুটি পদ থেকে ইস্তফার কথা ঘোষণা করেন ফেসবুক পোস্ট করে। তাতে তিনি লেখেন, বিধায়ক পদ ছেড়ে দেওয়ারও ইচ্ছে ছিল আমার। কিন্তু সে সংস্থায় আমি কাজ করতাম, সেখান থেকে এখনও পেনশন পাচ্ছি না বলে বিধায়ক পদ ছাড়তে পারছি না। সংসারটা তো চালাতে হবে। মনোরঞ্জনের অভিযোগ ছিল, বিধায়ক হিসেবে তিনি যাঁদের পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট দিতে চেয়েছিলেন, তাঁদের কাউকে টিকিট দেওয়া হয়নি। ব্লক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তিনি টাকার বিনিময়ে টিকিট বিক্রিরও অভিযোগ আনেন।
আরও পড়ুন: মানিকের বিরুদ্ধে এখনই চার্জ গঠন করছে না ইডি
এদিন বিধানসভার লবিতে দাঁড়িয়ে মনোরঞ্জন বলেন, রাজ্য বিধানসভায় তৃণমূলেরই প্রায় ৪০ জন বিধায়ক আছেন। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে আমাদের দুরবস্থার কথা বিধানসভাতেই একযোগে জানাতে হবে। তিনি বলেন, কেন্দ্রে বিজেপির সরকার রয়েছে। তাই দেশ জুড়ে দলিতদের উপর অত্যাচার চলছে। যে ভাষায় ওরা আক্রমণ চালাচ্ছে, সেই ভাষাতেই ওদের পাল্টা আক্রমণ করতে হবে। দলিতদের নর্মদা নদীর জল খেতে দেওয়া হয় না। প্রয়োজন হলে সেই জলেই উচ্চবর্ণের ব্র্রাহ্মণদের চুবিয়ে দিতে হবে।