কলকাতা: কোনও প্রাক্তন পড়ুয়া আর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) হস্টেলে থাকতে পারবেন না। এমনটাই নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতি টি এস শিভগননমের ডিভিশন বেঞ্চের। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব়্যাগিং নিয়ে এক মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত ইউনিয়নকে বক্তব্য পেশ করার সুযোগ দিতে হবে। এছাড়াও হস্টেলের ঘরে ঘরে কর্তৃপক্ষকে তল্লাশি চালাতে হবে। কোনও প্রাক্তনীর হদিশ পেলে পত্রপাঠ তাঁকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের হস্টেল খালি করে দিতে হবে।
অন্যদিকে যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় কর্তৃপক্ষকে। সূত্রের খবর, সোমবারেই ইউজিসির (UGC)প্রতিনিধিদলের অনেক প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়।
ইউজিসির গাইডলাইন অনুযায়ী প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি করে র্যাগিং বিরোধী কমিটি থাকা আবশ্যিক। যাদবপুরে সেই কমিটি ছিল কি না, থাকলে তার কী ভূমিকা, ওই কমিটিতে কে কে ছিলেন, সে সব জানতে চেয়েছে ইউজিসি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, র্যাগিং বিরোধী কমিটি থাকলেও যাদবপুরে তা তেমন সক্রিয় নয়। কমিটির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েছে কর্তৃপক্ষ। ইউজিসি সূত্রে খবর, কর্তৃপক্ষের জবাবে তারা সন্তুষ্ট হতে পারছে না। ইউজিসি-র প্রতিনিধিরা মঙ্গলবারেও যাদবপুরেই থাকছেন । তাঁরা হস্টেল এবং ক্যাম্পাস পরিদর্শন করবেন। পড়ুয়াদের সঙ্গে আরও কথা বলতে চান প্রতিনিধিরা। সোমবারও কয়েকজন পড়ুয়ার সঙ্গে কথা হয়েছে তাদের।
আরও পড়ুন: যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে বগুলা হাসপাতালের নামবদলের সরকারি বিজ্ঞপ্তি
এরই মধ্যে মঙ্গলবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার কথা ইসরোর (ISRO) প্রতিনিধিদলের। র্যাগিং রুখতে ইসরো থেকে প্রযুক্তিগত সাহায্য নিয়ে আলোচনা করতেই এই প্রতিনিধিদলের সফর। সূত্রের খবর, ভিডিও অ্যানালেটিক্স, টার্গেট ফিক্সিং, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির মতো বিষয়গুলি আদৌ কার্যকরী হবে কি না, সেই বিষয়টিও দেখা হবে।
যাদবপুরে প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। এখনও পর্যন্ত পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে ১৩ জন। যার মধ্যে একজন জামিনে মুক্তি পেয়েছে। উল্লেখ্য, সিসিটিভি লাগানো থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা, বহু ক্ষেত্রেই হাইকোর্ট সুপ্রিম কোর্ট এমনকী ইউজিসির গাইড লাইনও নাকি মানছিল না যাদবপুর। সেই প্রশ্ন তুলেই একাধিকবার যাদবপুরে চিঠি দেয় ইউজিসি। তার পরেই যাদবপুরে দফায় দফায় চিঠি দিয়েছে ইউজিসি। কিন্তু সেই চিঠির উত্তরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষে যে পাল্টা চিঠি দেয় তাতে সন্তুষ্ট নয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুর কমিশন। যাদবপুরের সরজমিন খতিয়ে দেখতে এল ইউজিসির প্রতিনিধিদল।