কলকাতা: কারও চিঠি বা কারও বক্তব্যের ভিত্তিতে ভিত্তিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধযায়কে তলব করা হয়নি বলে আদালতে দাবি করল ইডি। অভিষেকের রক্ষাকবচ মামলার শুনানিতে শুক্রবার ইডির আইনজীবী কলকাতা হাইকোর্টে জানান, তদন্তে মানিক ভট্টাচার্য সম্পর্কে বহু তথ্য মিলেছে। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে জেরা করেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের সঙ্গে অভিষেকের সম্পর্ক আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। আইনজীবী বলেন, তিনি মহান হতে পারেন। কিন্তু তার জন্য তদন্ত থমকে থাকতে পারে না। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আর্থিক কেলেঙ্কারির হদিশ মিলেছে তার তদন্তের স্বার্থেই অভিষেককে ডাকা হয়েছে।
বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানতে চান, গত পাঁচ বছরে ইডির কত মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। কেন ইডি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের সংবাদ সামনে আসে না? কেন এই ধরনের মামলার দ্রুত শুনানি হয় না? জবাবে ইডির আইনজীবীর বক্তব্য, আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তে অনেক জটিলতা থাকে। তার জন্য সময়ও লাগে।
আরও পড়ুন: মানহানির অভিযোগে বজরং পুনিয়াকে সমন পাঠাল আদালত
বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের তরফে আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য জানান, নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষের চিঠি বা জেল হেফাজতে তার উপর অত্যাচারের অভিযোগে নয়, আর্থিক কেলেঙ্কারির পর্দা ফাঁসের স্বার্থেই অভিষেককে ইডি ডাকছে। বিচারপতি ঘোষের মন্তব্য, ইডির ক্ষমতা অত্যন্ত সীমিত।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৭ অগাস্ট। শুক্রবার আদালত সরাসরি অভিষেককে কোনও রক্ষাকবচ দেয়নি। যেহেতু ১৭ অগাস্ট পরবর্তী শুনানি, তাই আদালত আশা করে, এই সময়ের মধ্যে খারাপ কিছূ হবে না।
প্রসঙ্গত, অভিষেকের দাবি ছিল, নিয়োগ-দুর্নীতিতে তিনি কোনও মতেই জড়িত নন। তাঁকে হেনস্তা করার জন্যই বারবার ডাকা হচ্ছে। এর জন্যই তিনি রক্ষাকবচের পাশাপাশি এই মামলা থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার আবেদন জানান। এর আগে কুন্তলের চিঠির পরিপেক্ষিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা নিয়োগ মামলায় অভিষেককেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টে যান অভিষেক। সুপ্রিম কোর্ট জিজ্ঞাসাবাদে স্থগিতাদেশ না দিলেও মামলা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বদলে অন্য কাউকে দেওয়ার কথা বলে। সেইমতো এই মামলা আসে বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। তিনিও বিচারপতি গঙ্গোপাধযায়ের নির্দেশই বহাল রাখেন। ডিভিশন বেঞ্চও একই কোথা বলে। পরে মামলা যায় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে। বিচারপতি ঘোষের এই মামলা শোনার এক্তিয়ার আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে ইডি। বিচারপতি ঘোষ বিষয়টি প্রধান বিচারপতি বিবেচনার জন্য পাঠিয়ে দেন। সেখান থেকে মামলা বিচারপতি ঘোষের এজলাসেই ফিরে আসে।