নয়াদিল্লি: শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) পর এবার মিশর (Egypt)। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে (International Trade) মার্কিন ডলারের পরিবর্তে উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার (North-East Africa) এই দেশ ভারতীয় টাকা (Indian Rupees) ব্যবহার শুরু করার পথে। মার্কিন ডলারের (USD) অর্থ প্রদান অর্থাৎ পেমেন্ট (Payment) দিতে অসুবিধার সম্মুখীন হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ভারত থেকে মিশর ১.৫ লক্ষ টন চাল আমদানি (Import) করছে, তার যাবতীয় মূল্য ভারতীয় টাকায় দেবে তারা। আপাতত সেই কথাই চিন্তাভাবনা করছে ওই দেশ। এই নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কথাও চলছে। এখানে উল্লেখ্য, মিশরের মুদ্রার নাম ইজিপশিয়ান পাউন্ড (Egyptian Pound)।
আরও পড়ুন: Britains| Challenger Tanks| Ukraine | ব্রিটেনের চ্যালেঞ্জার ট্যাঙ্ক এবার ইউক্রেনে মাটিতে
প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, নয়াদিল্লি (New Delhi) এবং কায়রোর (Cairo) মধ্যে যদি এই বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়ে যায়, তাহলে মিশর সেই সমস্ত দেশগুলির তালিকায় যোগ দেবে, যারা আন্তর্জাতিক বাণ্যিজ্যের ক্ষেত্রে আমদানি কিংবা রফতানি (Export or Import) সংক্রান্ত বিষয়ে মার্কিন ডলারের পরিবর্তে ভারতীয় টাকাকে বেছে নিতে প্রস্তুত ও রাজি (Ready and Agree)। এই তালিকায় ১৮টি দেশ রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হল – রাশিয়া (Russia), ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য (United Kingdom – UK), সিঙ্গাপুর (Singapore), জার্মানি (Germany) ইত্যাদি।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, আগামী ৩১ মার্চ শেষ হতে চলা অর্থবর্ষের এপ্রিল ও জানুয়ারি মাসের মধ্যে মিশর ৭৬,৮৫৮ টন চাল আমদানি (Rice Export) করেছে। আফ্রিকা মহাদেশের (African Continent) এই দেশে সম্প্রতি চাল ভর্তি দু’টি জাহাজ (Rice Loaded Ship) গিয়েছে। কিন্তু আমদানি করা সেই চালের দাম মার্কিন ডলারে মেটাতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছে তারা। আগামী দিনে মিশরে চাল নিয়ে আরও ছ’টি জাহাজ যাবে। ওই চালের পরিমাণ ১,৫ লক্ষ টনেরও বেশি হবে। কায়রো চাইছে, ওই চালের দাম তারা নয়াদিল্লিকে ভারতীয় মুদ্রায় পরিশোধ করবে।
রুপি পথে অর্ডার নিতে ইচ্ছুক
ভারতীয় রফতানিকারকদের (Indian Exporters) বক্তব্য, তাঁরা খাদ্যশস্যের (Food Grains) আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের (Cross-Border Trade) ক্ষেত্রে রুপি ব্যবহারে ইচ্ছুক, কিন্তু তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে (Union government) কিছু ছাড় (Concessions) দিতে হবে।
দ্য রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বিভি কৃষ্ণা রাও (BV Krishna Rao, President of The Rice Exporters Association – TREA) বলেছেন, “রফতানিকারীরা ডলারে বাণিজ্যের সময় ০.৫ – ১ শতাংশ ফরওয়ার্ড প্রিমিয়াম (Forward Premium) পান, এক্ষেত্রে কিছু উপায় রয়েছে, যার ফলে সরকার ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ দিতে পারবে।” তিনি এটাও বলেছেন, সরকারের উচিত দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থের কথা বিবেচনা করে ভারতীয় মুদ্রায় লেনদেনকে (Transaction in INR) আরও সহজতর করা।
মিশর এবং উত্তর আমেরিকার বেশিরভাগ দেশ (North African Nations) এই মুহূর্তে মুদ্রা সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছে, বিশেষ করে ডলারের ক্ষেত্রে। বাণিজ্য প্রক্রিয়া মসৃণ ও সহজতর করতে রাশিয়াতে স্থানীয় মুদ্রায় দাম মেটানো শুরু করেছে মিশর। এখানে উল্লেখ্য, রাশিয়ার মুদ্রার নাম রাশিয়ান রুবেল (Russian Rubel)।
২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে ভারত সরকার চালের রফতানির উপর রাশ টেনেছে। সাদা চালের রফতানির উপর শুল্ক (Duty) আরোপ করা হয়েছে। এছাড়াও, বাসমতি চাল (Basmati Rice) সহ ভাঙা চাল (Fully Broken Rice) এবং চালের রফতানি রোধ করা হয়েছে। খারিফ মরশুমে (Kharif Season) দেশের চাল উৎপাদনকারী প্রধান অঞ্চলগুলিতে কম বৃষ্টি (Scanty Rains) হতে পারে, এই আশঙ্কায় এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে কেন্দ্র সরকার।