চলে গেলেন ষাটের দশকে ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের রক্ষণের প্রহরী চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘ দিন ভুগছিলেন দুরারোগ্য ক্যান্সার রোগে। অবশেষে তাঁর ডিফেন্স ভেঙে পড়ল। বুধবার ভোর সাড়ে তিনটের সময় দক্ষিণ কলকাতার এক নার্সিং হোমে মৃত্যু ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের ১৯৬৬ সালের অধিনায়ক চন্দনের। বয়স হয়েছিল ৮৮। দীর্ঘ দেহী, সুদর্শন চন্দ শুধু তাঁর ফুটবলের জন্য নয়, সুমধুর ব্যবহারের জন্যও ময়দানে খুব জনপ্রিয় ছিলেন। ভেটারেন্স ক্লাবের সচিব থাকার সময় সেই ক্লাবের জন্য অনেক কিছু করেছেন।
চন্দনের ফুটবল জীবন শুরু হয় ১৯৫৬ সালে মিলন সমিতিতে। সেখান থেকে ভবানীপুর হয়ে ১৯৬৩ সালে তিনি আসেন ইস্ট বেঙ্গলে। চার বছরের মাথায় হন অধিনায়ক। চন্দনের নেতৃত্বে ইস্ট বেঙ্গল শুধু কলকাতা লিগই নয়, জিতেছিল আই এফ এ শিল্ডও। সেই ষাটের দশকটা ছিল মোহনবাগানের দাপটের দশক। চন্দন অধিনায়ক হওয়ার আগে পর পর চার বার মোহনবাগান লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়। কিন্তু ছেষট্টিতে মোহনবাগানকে আটকে চ্যাম্পিয়ন হয় ইস্ট বেঙ্গল। সেই বছরেই ইস্ট বেঙ্গলে আসেন সৈয়দ নইমুদ্দিন, মহম্মদ হাবিব এবং শ্যাম থাপা। লিগের আবির্ভাবেই শ্যাম থাপা রাজস্থানের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করলে চন্দন তাঁকে কোলে করে মাঠের মধ্যেই নেচেছিলেন। ইস্ট বেঙ্গলে তিনি আরও কয়েক বছর খেলতে পারতেন। কিন্তু তার কর্মস্থল কাস্টমস তাঁকে ছাড়েনি। তাই ১৯৬৭ সালেই তিনি যোগ দেন কাস্টমসে। বড় ক্লাবে খেলার সেখানেই ইতি।
ফুটবল থেকে অবসর নিয়ে সেভাবে কোচিং করেননি চন্দন। তবে ১৯৮৯ সালে সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা দলের ম্যানেজার ছিলেন। ২০১৫ সালে ইস্ট বেঙ্গল তাঁকে জীবনকৃতি সম্মান দেয়। দু বছর আগে ইনভেস্টর সমস্যায় জর্জরিত ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের প্রাক্তনীদের হয়ে তিনি অগ্রগণ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে ইস্ট বৈঙ্গল ক্লাবে শোকের ছায়া নেমে আসে। বেহালার বাড়ি থেকে মরদেহ আসে ক্লাবে। সেখানে চন্দনের নশ্বর দেহে মাল্যদান করেন প্রাক্তন ফুটবলার বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য, বিকাশ পাঁজি, সুমিত মুখোপাধ্যায় এবং ক্লাবের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার। এর পর ভেটারেন্স ক্লাব হয়ে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় কেওড়াতলা মহাশ্মশানে।