সরকারি কর্মশালায় দশম শ্রেণির ছাত্রীর নির্বিষ প্রশ্ন ছিল মহিলা আইএএস অফিসারের কাছে। কিন্তু সেই প্রশ্নের উত্তর যে এমন ভাষায় শুনতে হবে, তা ধারণারও বাইরে ছিল ওই ছাত্রীটির। সেই কর্মশালার ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই হইচই শুরু হয়েছে পাটনার শিক্ষামহলে। তবে ওই ভিডিয়োর সত্যতা কলকাতা টিভি ডিজিটাল যাচাই করেনি। ছাত্রীটির অপরাধ, সে জানতে চেয়েছিল সরকার কি সস্তায় মেয়েদের স্যানিটারি ন্যাপকিন দিতে পারে না? তাতেই রেগে টং হরজ্যোত কৌর ভামরা নামে ওই আইএএস অফিসার। তিনি বলেন, এরপর তো বলবে, সরকার কে্ন জিনসের পোশাক দেবে না? সরকার কেন সুন্দর জুতো দেবে না? এখানেই থামেননি ওই অফিসার। তিনি বলে বসেন, কবে আবার বলবে সরকার জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্যে কেন কন্ডোম দেবে না?
ঘটনাস্থল পাটনা। সশক্ত বেটি সমৃদ্ধ বিহার শীর্ষক ওই কর্মশালায় মূলত নবম, দশম শ্রেণির ছাত্রীরাই ছিল। মঞ্চে ছিলেন ওই আইএএস অফিসার ছাড়াও অন্য সরকারি আধিকারিকরা। যে ছাত্রীর সঙ্গে আইএএস অফিসারের কথোপকথন হয়, সে স্থানীয় এক বস্তির বাসিন্দা। অত্যন্ত গরিব ঘরের মেয়ে।
আইএএস অফিসার ভামরা নারী ও শিশু উন্নয়ন নিগমের শীর্ষ কর্ত্রী। কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল ইউনিসেফ, বিহার সরকার এবং অন্য কয়েকটি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে।
মহিলা আইএএস অফিসারের কন্ডোম-বোমার আঘাতেও ঘাবড়ে যায়নি ওই সাহসী ছাত্রী। সে পাল্টা বলে, মানুষের উন্নতির জন্যেই তো মানুষের ভোটে সরকার তৈরি হয়। প্রত্যুত্তরে হরজ্যোত বলেন, এরকম ভাবাই চূড়ান্ত বোকামি। তাহলে ভোট দিও না। পাকিস্তানি হয়ে যাও। কেবল টাকাপয়সা ও সরকারি সুবিধার আশাতেই কি ভোট দাও? তাতে দমে যায়নি সেই ছাত্রী। সে ফের বলে, আমি আদ্যন্ত ভারতীয়। পাকিস্তানি হতে যাব কেন?
ওই কর্মশালায় আর এক ছাত্রী হরজ্যোতকে জানায়, তাদের স্কুলে মেয়েদের শৌচাগার ভগ্নপ্রায়। আর ছেলেরাও সেই শৌচাগার ব্যবহার করে। ছাত্রীদের জন্যে পৃথক শৌচাগার কেন নেই। অফিসার তাকে বলেন, তোমার বাড়িতে কি পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা শৌচাগার আছে?
এসব কথাবার্তার জন্য হরজ্যোতকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। ভিডিয়ো ভাইরাল হলেও তিনি সেটিকে জাল বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে আমি বহু কাজ করেছি। একটি চক্র আমার পিছনে লেগেছে। সূত্রের খবর, তাঁর এই আচরণে ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকারও।