জয়পুর: অবশেষে কি কংগ্রেসের ‘হাত’ ছাড়তে চলেছেন শচীন পাইলট? আগামী ১১ জুন বড়সড় ঘোষণা করতে চলেছেন পাইলট। রাজনৈতিক মহলের জল্পনা ওইদিন নতুন দল প্রতিষ্ঠা করবেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের সঙ্গে তাঁর আদায় কাঁচকলায় সম্পর্ক চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এর জন্য নিজেরই দলের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আন্দোলনও করেছেন শচীন। সম্প্রতি দিল্লিতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন দুই নেতা। তাতেও বরফ গলেনি বলে অনুমান।
এই অনুমান আরও জোরাল হতে চলেছে, কারণ সম্প্রতি রাজস্থান থেকে নতুন দুটি পার্টির নাম নথিভুক্ত হয়েছে নির্বাচন কমিশনে। তার একটির নাম প্রগ্রেসিভ বা প্রগতিশীল কংগ্রেস। অন্যটির নাম রাজ সংঘর্ষ পার্টি। তাতেই মনে করা হচ্ছে যে, পাইলট ১১ জুন তাঁর নতুন দলের নাম ঘোষণা করতে পারেন। ১১ জুন শচীন পাইলটের বাবা প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজেশ পাইলটের মৃত্যুদিন। ওইদিন বাবার লোকসভা কেন্দ্র দৌসা থেকে নতুন দলের কথা ঘোষণা করতে পারেন রাজস্থান কংগ্রেস সভাপতি পাইলট।
যদিও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব গোড়া থেকেই দাবি জানিয়ে আসছে, রাজস্থানে দল ঐক্যবদ্ধ আছে। এ বছরের শেষ নাগাদ হতে চলা বিধানসভা নির্বাচনে তারাই পুনর্নির্বাচিত হতে চলেছে। কিন্তু, কংগ্রেসের এই দাবি যে আদৌ ধোপে টিকছে না তা বোঝা যাচ্ছে শচীন পাইলট বেসুরো বাজতে থাকায়। অশোক গেহলট সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপ না করার অভিযোগ রয়েছে পাইলটের। তা থেকে একচুলও সরে আসতে নারাজ তিনি।
সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর এই নতুন দলের রূপকার এবং ভিত গড়ে দিয়েছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর এবং তাঁর আইপ্যাক সংস্থা। শুধু একা দল গড়া নয়, আগামী ভোটে পাইলট হনুমান বেনিওয়ালের রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টি এবং আম আদমি পার্টির সঙ্গে জোট বেঁধে রাজ্যে কংগ্রেস-বিজেপির বিকল্প তৃতীয় মোর্চা গঠন করতে পারেন। তবে লাখ টাকার প্রশ্ন হচ্ছে, পাইলট নতুন দল গঠন করলেও রাজ্যের শাসকদল কংগ্রেস ভেঙে কতজন বিধায়ক ও নেতানেত্রী তাঁর সঙ্গে যোগ দেবেন?
প্রসঙ্গত, পাইলটের ক্ষোভ প্রশমিত করতে গত ২৯ মে রাজধানীতে দুই নেতাকে নিয়ে দীর্ঘ চারঘণ্টা বৈঠক করেন মল্লিকার্জুন খাড়্গে এবং রাহুল গান্ধী। তারপর শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়ে দেয়, রাজস্থান রাজনীতিতে কোনও বিরোধ নেই। সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করবে। বিজেপিকে হারাতে সমস্ত মতভেদ দূর করে নির্বাচনের কাজে নামার ব্যাপারে সতর্ক করে দেন খোদ রাহুল গান্ধী। কিন্তু, হাইকমান্ডের সঙ্গে বৈঠকের পরদিনই শচীন পাইলট জানিয়ে দেন তিনি তাঁর দাবি থেকে একচুলও নড়বেন না। পাইলটের দাবিগুলি হল, পূর্বতন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত চালাতে হবে। রাজস্থান পাবলিক সার্ভিস কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে যেসব যুবক-যুবতী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।