নয়াদিল্লি: প্রতিরক্ষা মন্ত্রক (Defence Ministry) আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। সোমবার ঠিক এই ভাষাতেই কেন্দ্রীয় সরকারকে (Central Government) তিরস্কার করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের (Ex Servicemen) ‘এক পদ, এক পেনশনের’ (OROP) বকেয়া চারটি কিস্তিতে দেওয়ার ঘোষণার তীব্র নিন্দা করল সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় (Chief Justice DY Chandrachud) এবং বিচারপতি পিএস নরসিমা ও জেবি পর্দিওয়ালার ডিভিশন বেঞ্চ প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে গত ২০ জানুয়ারির বিজ্ঞপ্তি অবিলম্বে প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছে। যে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল বকেয়া টাকা চারটি কিস্তিতে দেবে কেন্দ্র।
সরকারের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরামানি আদালতে বলেন, ওপিআরপি-র বকেয়ার এক কিস্তি প্রাক্তন সেনাকর্মীদের দেওয়া হয়ে গিয়েছে। বাকি টাকা দিতে আরও কিছু সময় চায় কেন্দ্র। এর জবাবে বেঞ্চ জানায়, আপনারা আগে ২০ জানুয়ারির বিজ্ঞপ্তি তুলে নিন। যাতে বলা হয়েছে, বকেয়া চার কিস্তিতে মেটানো হবে। তারপর আমরা আপনাদের সময় চাওয়ার আবেদন নিয়ে বিবেচনা করব।
আরও পড়ুন: Parliament Budget Session 2023 | রাহুলকে নিয়ে উত্তাল সংসদ, দুই কক্ষই মুলতুবি
২০ জানুয়ারি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সম্পূর্ণ বিপরীত। কেন্দ্র একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না যে, বকেয়া পেনশন চার কিস্তিতে দেওয়া হবে। অ্যাটর্নি জেনারেল আদালত জানিয়ে দেয়, বকেয়া মেটানোর মেয়াদ, পরিমাণ ও কোন ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে তার একটি নোট প্রস্তুত করতে। বেঞ্চ জানায়, মামলা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত চার লাখ পেনশন প্রাপকের মৃত্যু হয়েছে। তাই আমরা চাই যেসব সেনাকর্মীর বয়স বেশি, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হোক।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শীর্ষ আদালত প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে বকেয়া পেনশন দিতে দেরি হওয়ায় তুলোধনা করে। এ বিষয়ে মন্ত্রকের সচিবের কাছে ব্যাখ্যাও দাবি করে আদালত। গত ৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট ১৫ মার্চের মধ্যে ওআরওপি-র বকেয়া মেটানোর সময়সীমা ধার্য করে দিয়েছিল। কিন্তু, আচমকা ২০ জানুয়ারি প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে দেয়, বকেয়া পেনশন চার বছরে চারটি কিস্তিতে মেটানো হবে।
প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, আপনি মন্ত্রকের সচিবকে গিয়ে বলে দেবেন ওই বিজ্ঞপ্তি জারির জন্য আমরা তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও পারি। ফলে উনি যেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে নেন। বিচার প্রক্রিয়ার মান্যতা দিতে হবে। হয় সচিব বিজ্ঞপ্তি তুলে নেবেন, অথবা আমরা তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিস জারি করব। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া বরদাস্ত করা হবে না।