কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: মাস কয়েক আগেই দেশের পাঁচটি রাজ্যে সম্পন্ন হয়েছে বিধানসভা নির্বাচন। অসম কেরল, বাংলা, তামিলনাডু ও পুদুচেরি এই ৫ টি রাজ্যের মধ্যে একমাত্র কেরলেই পুনরায় ক্ষমতায় ফিরতে পেরেছে সিপিএম। দক্ষিণের রাজ্য কেরলে একমাত্র ভালো ফলাফল করলেও বাংলা সহ বাকি রাজ্যগুলিতে বামেদের ফলাফল হতাশাজনক। সোমবার পাঁচ রাজ্যের বিধানসভার ফলাফল নিয়ে আলোচনা করে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি । সেখানে বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয় রাজ্যগুলির ফলাফলও সিপিএমের অবস্থান নিয়ে। কেরলে জিতলেও বাংলা নিয়ে বরং হতাশাই ধরা পড়ল সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির আলোচনায়।
বাংলায় সিপিএমের ফলাফল হতাশাজনক। স্পষ্ট বলা হয় কেন্দ্রীয় কমিটির আলোচনায়। ১৯৪৬ সালের পর এই প্রথম বাংলার বিধানসভায় নির্বাচিত কোনও বাম প্রতিনিধির স্থান হল না। এই আক্ষেপই এদিন ধরা পড়ল কেন্দ্রীয় কমিটির আলোচনায়। দলের সাংগঠনিক ত্রুটির জন্য নাকি অন্য কোনও কারণ তা খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় কমিটি। বাংলায় লজ্জাজনক এই হারের পর্যালোচনা করছে রাজ্য কমিটিও।
আরও পড়ুন: CPM BREAKING: সাদা চুলে সিলিং, পঁচাত্তর হলেই ছাড়তে হবে কেন্দ্রীয় কমিটি, পলিটব্যুরো
আরও বলা হয়, বামেরা ভালো ফলাফল না করলেও বিজেপির সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের আদর্শকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে বাংলা। আর্থিক ও অন্যান্য ক্ষমতা নিয়ে বাংলা দখলে মরিয়া ছিল বিজেপি। কিন্তু তা সত্বেও গেরুয়া শিবির কে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বাংলার জনগণ। বাংলার ফলাফল পর্যালোচনা বিজেপির উল্লেখ থাকলেও এদিন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসা নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেনি সিপিএম।
যদিও বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল বিজেপি একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ বলে প্রচার করছিল বামেরা। কিন্তু সম্প্রতি সেই ‘বিজেমূল’ তত্ত্বকে খারিজ করেছে রাজ্য বাম নেতৃত্ব। কিছুদিন আগেই সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন ‘বিজেমূল’ তথ্য ভুল ছিল। তখন সেই কথায় সিলমোহর না দিলেও সম্প্রতি স্বপন বাবু শোনা গেল বিমান বসুর সূর্যকান্ত মিশ্র দের গলায়। ‘বিজেমূল’ তত্ত্ব সরাসরি ভুল স্বীকার না করলেও তাদের বক্তব্য তৃণমূল ও বিজেপি এক নয়।
সম্প্রতি বিশিষ্ট বাম নেতা মোজাফ্ফর আহমেদ এর জন্মবার্ষিকীতে ‘বিজেমূল’ তত্ত্বকে খারিজ করেন সূর্যকান্ত মিশ্র।এই প্রথম নয়, বিগত দিনে সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে উঠে এসেছে তৃণমূলের জয় লাভের প্রসঙ্গ। সম্প্রদায়িক বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে বামেদের থেকে তৃণমুলকেই পছন্দ করছেন মানুষ। এমনটাই জানানো হয় রাজ্য কমিটির বৈঠকে।
আরও পড়ুন: কপিল সিব্বলের ডিনারে এক ঝাঁক মুখ, বিরোধী কৌশল নিয়ে হতে পারে কথা
বাংলা ছাড়াও কেরলে সিপিএমের ফলাফল নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ পায় রিপোর্টে। বিগত বিধানসভার নির্বাচন গুলি চেয়ে এই বছর আরো ভালো ফলাফল করেছে এলডিএফ। উন্নয়ন গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা ধর্মনিরপেক্ষতাই এই জয়ের অন্যতম কারণ বলে তুলে ধরা হয়। প্রতিবেশী রাজ্য তামিলনাডুতে ওভার ডিএমকে সঙ্গে জোট করেছিল বামেরা। স্তালিনের নেতৃত্বে তামিলনাড়ুর ক্ষমতায় আসে ডিএমকে। সেরা জুটি আসনে জেতেন সিপিএম প্রার্থীরা। পাশাপাশি অসমের সর্ভোগ বিধানসভা কেন্দ্র থেকেও জিতেছেন একজন সিপিএম প্রার্থী।
ওই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের পর্যালোচনা ছাড়াও পেগাসাস ইস্যুতেও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে সিপিএম। ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাস দিয়ে সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে নজরদারি চালিয়েছিল কেন্দ্র। সংসদের বাহাদুর অধিবেশনে এই বিষয়ে বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে মুখ খুলছেন না প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর এই নীরবতা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও অগণতান্ত্রিক বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে। সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে একটি তদন্ত কমিটি করে গোটা বিষয়ে তদন্ত করা হোক। এমনটাই দাবি জানানো হয়েছে বামেদের পক্ষ থেকে। এই সমস্ত কিছু বিষয় ছাড়াও কেন্দ্রীয় কৃষি বিলের প্রত্যাহারের দাবিতে কৃষকরা যে আন্দোলন করে চলেছে তাকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে সিপিএম।