বাড়ির ছোট্ট চতুষ্পদ পোষ্যদের শেখানো যায়। মানব শিশুদের তো ছোট থেকেই অভ্যাস তৈরি করা হয়। নির্দিষ্ট জায়গায় টয়লেট করার অভ্যেস তৈরি করা তো সাধারণ বিষয়। কিন্তু তা বলে গরুদের টয়লেট যাওয়া অভ্যেস করাতে হবে? এ আবার কেমন কথা?
জার্মানির ফ্রেডরিক লোয়েফলার ইনস্টিটিউটের গবেষকরা এই দুরূহ কাজটি করার চেষ্টা করছেন। কেন? উত্তরটাও বেশ চমকপ্রদ, পৃথিবীকে বাঁচাতে…
গবাদি পশুদের মধ্যে গোটা পৃথিবীতে গরুর সংখ্যা নেহাত কম নয়, আর এই গরুর মুত্রে থাকে ইউরিয়া, যা নাইট্রোজেনে ভরপুর। এনজাইমের কারসাজিতে সেই নাইট্রোজেন পরিণত হয় অ্যামোনিয়ায়। মাটিতে থাকা ব্যাকটেরিয়া অ্যামোনিয়াকে ভেঙে তৈরি করে নাইট্রাস অক্সাইড। এই নাইট্রাস অক্সাইড গ্রিন হাউস গ্যাস তৈরিতে অন্যতম প্রধান ভূমিকা নেয়। বিশ্ব উষ্ণায়নে গ্রিন হাউস গ্যাসের প্রভাব অসীম।
শুধুমাত্র ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশ গুলিতে গবাদিপশু, বিশেষ করে গরু পরিবেশের ৭০ শতাংশ অ্যামোনিয়া ছড়ায়। ভারতের মতো দেশে গৃহপালিত পশু হিসেবে গরুর সংখ্যা নেহাত কম নয়। গ্রিন হাউস গ্যাস তৈরিতে গরুর মূত্রর ভূমিকা তাই এ দেশেও যথেষ্টই উদ্বেগের। গোটা বিশ্বে ১০ শতাংশ গ্রিন হাউস গ্যাস তৈরি হয় গবাদি পশুদের জন্য।
জার্মানির বিজ্ঞানীরা তিন স্তরীয় উপায়ে গরুদের নির্দিষ্ট জায়গায় টয়লেট করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। জন্মের পর থেকেই বাছুরদের নির্দিষ্ট জায়গায় টয়লেট করানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। বিজ্ঞানীদের তৈরি গরুদের এই নতুন টয়লেটের নাম ‘প্রজেক্ট মুলু’। ৫০ টির মত বাছুরকে মুলু নামক বিশেষ টয়লেটে মূত্রত্যাগ করা শেখানো হচ্ছে। গরু বুদ্ধিমান প্রাণী, তাই গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, কিছুদিন যেতেই বাছুর গুলি ঠিক সময় মত গিয়ে প্রাকৃতিক কম্মটি সেরে আসছে মুলু-তে।
বিশ্বের ৪ শতাংশ গবাদিপশু ‘মুলু’-তে অভ্যস্ত হলে বিশ্বে ৫৬ শতাংশ অ্যামোনিয়া নিঃসরণ কমবে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।