কলকাতা : ভবানীপুর বিধানসভা উপনির্বাচন নিয়ে জনস্বার্থ মামলার রায়দান স্থগিত রাখল আদালত। বৃহস্পতিবার রাজ্যের কাছে এই বিষয়ে হলফনামা চেয়েছিল রাজ্য। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেই হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। হলফনামা জমা দিলে এই বিষয়ে রায়দান করার কথা ছিল। তবে, শুক্রবার রায় দান করল না আদালত।
কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, এই জনস্বার্থ মামলায় নির্বাচন কমিশন যে হলফনামা দিয়েছে তাতে সন্তুষ্ট নয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ। এছাড়াও এই বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ভোট না হলে রাজ্যে সাংবিধানিক সংকট হবে। এর পরেই প্রশ্ন তোলে আদালত। একটা কেন্দ্রের নির্বাচন নিয়ে রাজ্যে কীভাবে সাংবিধানিক সংকট হতে পারে?
এছাড়াও আদালত কমিশনের কাছে জানতে চায় কমিশন সাংবিধানিক সংকট বলতে আসলে কী বোঝাতে চেয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তরে নির্বাচন জানায় উত্তর দিতে পারবেন মুখ্যসচিব। তখন আদালত প্রশ্ন করে, এই উত্তর কীভাবে মুখ্যসচিব দেবেন? তিনি কী মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করতে পারেন?
অন্যদিকে, এই বিষয় নিয়ে আরও একটি জনস্বার্থ মামলা হয়। কারণ ভবানীপুর বিধানসভায় জয়ী প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় কোন কারণ ছাড়া ইস্তফা দিয়েছেন শুধুমাত্র উপনির্বাচনের জন্য। অথচ এই উপনির্বাচনের জন্য যে খরচ হয় তা সাধারণ মানুষের করের টাকা। মানুষের করের টাকায় কেন বারবার নির্বাচন হবে? এত বিপুল পরিমাণ খরচ কেন জনগণ বহন করবে? সেই প্রশ্নও করেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি।
আরও পড়ুন – সরকারি আবাসন দখল মামলায় রাজ্যকে জরিমানা করল কলকাতা হাইকোর্ট
গত ১ অগস্ট বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠকে বসে নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জানান, পশ্চিমবঙ্গের কোভিড পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। একই সঙ্গে জানান, যে সমস্ত কেন্দ্রে উপনির্বাচন রয়েছে সেখানে বন্যা পরিস্থিতির কোনও প্রভাব নেই। এই সময় উপনির্বাচন করা যায়। কারণ সংবিধানের ওই ধারায় বলা হয়েছে, কোনও মন্ত্রী যদি ৬ মাসের মধ্যে বিধান পরিষদীয় দলের প্রতিনিধি হতে না পারেন সেক্ষেত্রে সংবিধানের নিয়ম মেনে তাঁর মন্ত্রিত্ব পদ খোয়া যাবে। তখন সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে।
আরও পড়ুন – ধর্ষণে অভিযুক্তকে গ্রামের সকল মহিলার জামাকাপড় কাচার নির্দেশ আদালতের
সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে রাজ্যে সাংবিধানিক সংকট এড়াতে ভবানীপুর কেন্দ্রে যাতে উপনির্বাচন হয় নির্বাচন কমিশনের কাছে সেই আবেদন রাখেন মুখ্যসচিব। যাতে ওই কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন না ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচনে জিতে আসতে না পারলে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে হত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই কারণে উপনির্বাচনের অনুমতি দেওয়া হয়। আর এই সিদ্ধান্ত নিয়েই হলফনামা চেয়েছিল হাইকোর্ট।